Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ২৯ কার্তিক ১৪৩১, ১১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বিকাশমান ড্রেজিং শিল্প : নদী অর্থনীতির নতুন দিগন্ত

মো. কামরুল আহসান তালুকদার পিএএ | প্রকাশের সময় : ২৯ জুলাই, ২০২১, ১২:০২ এএম

(পূর্ব প্রকাশিতের পর)

পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় ১৮টি মাঝারি নদী স্বল্প সময়ে (৫ বছর), মধ্য মেয়াদে (১০ বছর) এবং সব বড় নদী যথা: পদ্মা, যমুনা, মেঘনা দীর্ঘ মেয়াদে (১৫ বছর) প্রায় ১০০০ কিলোমিটার ড্রেজিং করার পরিকল্পনা করেছে। বর্তমানে খাল বিশেষত হাওর এলাকায় ছোট নদী, দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের ছোট নদী এবং বৃহৎ নদীতে ক্যাপিটাল ড্রেজিংয়ের সময় ড্রেজিং করা নদী-নালার নাব্যতা রক্ষার্থে মেনটেইন্যান্স ড্রেজিং করা অত্যন্ত জরুরি। ক্যাপিটাল ড্রেজিংয়ের পর স্বাভাবিক বন্যা হলে ড্রেজিংয়ের প্রায় ৪০% পলি দ্বারা ভরাট হয়ে যায়। দীর্ঘস্থায়ী বন্যা হলে ড্রেজিংয়ের ৬০% বালি এবং পলি দ্বারা ভরাট হয়ে যায়। জলবায়ুর বৈশিষ্ট্য পর্যালোচনা করলে সহজেই অনুমান করা যায় যে, ভবিষ্যতে ড্রেজিং এর চাহিদা কয়েকগুণ বৃদ্ধি পাবে। সুতরাং মেনটেইন্যান্স ড্রেজিং আবশ্যক অনুষঙ্গ। ক্রয়ের প্রক্রিয়াধীন বিভিন্ন সাইজের ৩৫টি ড্রেজার বছরে প্রায় ৬১৭.৫৫ লাখ ঘনমিটার মাটি খনন করতে পারবে। ফলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ছোট নদী, খাল ও সাকসেসিভ মেনটেইন্যান্স ড্রেজিং ক্ষমতা বহুলাংশে বৃদ্ধি পাবে।

বিআইডব্লিউটিএ থেকে প্রাপ্ত তথ্য মতে, ১৯৬২-৬৭ পর্যন্ত নেডেকোর সমীক্ষা অনুযায়ী, বাংলাদেশের নদী পথের দৈর্ঘ্য ছিল ২৪ হাজার ১৪০ কিলোমিটার। এর মধ্যে নাব্য নৌ পথের মোট দৈর্ঘ্য ছিল ১৩ হাজার ৭৭০ কিলোমিটার। ১৯৮৭-৮৮ সালের সর্বশেষ জরিপ অনুযায়ী, বাংলাদেশের নদী পথের দৈর্ঘ্য মাত্র ৬ হাজার কিলোমিটার এবং শুষ্ক মৌসুমে ৩ হাজার ৮২৪ কিলোমিটার। ১৯৮৭-৮৮ সালে ডাচ ভিএইচবি কর্তৃক শ্রেণীবদ্ধ নৌপথ জরিপের পর প্রায় ৩৩ বছর অতিক্রান্ত হয়েছে কিন্তু নৌ পথের জরিপ আর সম্পন্ন হয় নাই অর্থাৎ প্রায় সাত দশকে ১৮ হাজার কিলোমিটার বা চার ভাগের তিন ভাগ নৌ পথ হারিয়ে গিয়েছে। বর্তমান সরকার গত ১০ বছরে পুনঃখননের কারণে নৌ পথের দৈর্ঘ্য ১ হাজার ৬০০ কিলোমিটার বেড়ে হয়েছে ৭ হাজার ৬০০ কিলোমিটার। সরকার সচেষ্ট থাকলেও ড্রেজিং এ নানা সংকট রয়েছে। দেশের অভ্যন্তরীণ নৌপথকে নৌ-যান ও ফেরি চলাচল উপযোগী রাখতে বছরে অন্তত ১ কোটি ঘনমিটার পলি অপসারণ করা দরকার। আগামী পাঁচ বছরে দেশের ৮১ টি নৌপথের প্রায় ২৬.৪ ৮১ কোটি ঘনমিটার পলি ড্রেজিং করতে হবে। শুষ্ক মৌসুমে বাংলাদেশের ৩৫০০ কিলোমিটার নদীপথ সচল রাখতে ২০০ ড্রেজার প্রয়োজন কিন্তু ক্যাপিটাল ড্রেজিং এর জন্য আছে মাত্র ৩৫ টি।

মেনটেইন্যান্স ড্রেজিং এর মাধ্যমে বিআইডব্লিউটিএ ২০১৯-২০ অর্থবছরে ৩০০ লাখ কিউবিক মিটার পলি অপসারণের প্রোগ্রাম হাতে নেয় এবং ২০৭ কোটি টাকা বরাদ্দ পায় কিন্তু বন্যায় জমা হওয়া ৪৫০ লাখ কিউবিক মিটার পলি অপসারণের জন্য অধিক অর্থ বরাদ্দ প্রয়োজন। বিআইডব্লিউটিএ-এর ৩৫টি ড্রেজার দিয়ে এ ধরনের কর্মসূচি সমাপ্ত করা কঠিন।

নেদারল্যান্ডস ইঞ্জিনিয়ারিং কনসালটেন্ট ১৯৬৫-৬৭ সালে ৩১০ টি বৃহৎ ও ছোট নদীর পানির প্রবাহ নিয়ে গবেষণা করে। তার মধ্যে ১১৭ টি নদী অবৈধ দখল, পলি ভরাট এবং অব্যবস্থাপনার কারণে প্রবাহ হারিয়েছে বলে প্রতিবেদন পাওয়া যায়। বছর ব্যাপী নদীর বহমানতা বজায় রাখতে নদীভাঙ্গন প্রতিরোধ, নদীর তলদেশে পলি জমা হওয়া, ড্রেজড ম্যাটেরিয়াল ব্যবস্থাপনা এবং প্রতি বৎসর ১০০ থেকে ১২০ কোটি বিলিয়ন কিউবিক মিটার পলি অপসারণ নাব্যতার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

বর্তমানে ১৬টি নৌরুটে ৩৩টি ড্রেজার ড্রেজিং কাজে নিয়োজিত রয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর ৭টি ড্রেজার ছিল বিআইডব্লিউটিএ’র বহরে। বিগত ১০ বছরে নদীর নাব্য রক্ষায় সরকার ২৫টি ড্রেজার সংগ্রহ করেছে। নদীর নাব্য বৃদ্ধির জন্য ১৯৭২ সালে ২ টি, ১৯৭৫ সালে ৫টি, ২০১১ সালে ৩টি, ২০১৪ সালে ৮টি, ২০১৬ সালের ২ টি এবং ২০১৭ সালে ৪টি এম্পিবিয়ান কাটার সাকশান ড্রেজারসহ মোট ২৫ টি ড্রেজার সংগ্রহ করা হয়। ক্যাপিটাল প্রকল্পের আওতায় ২৪টি নৌপথে ৯৯৭ লাখ ঘনমিটার খননের মাধ্যমে ২ হাজার ৩৮৬ কিলোমিটার নৌ পথের উন্নয়ন করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। ইতিমধ্যে বেসরকারি ড্রেজার দ্বারা ৪৭৪.৭৪ লাখ ঘনমিটার, বিআইডব্লিউটিএ›র নিজস্ব ড্রেজার দ্বারা ৭০.৭০ লাখ ঘনমিটার এবং এক্সকাভেটর দ্বারা ২৫ লাখ ঘনমিটার সহ ৫৭০.৪৪ লাখ ঘনমিটার ড্রেজিং করে ১ হাজার ১৮০ কিলোমিটার নৌপথ নাব্য করা হয়েছে। সারাদেশে নদীর নাব্য ফিরিয়ে আনার জন্য ২ হাজার ৩৮৬ কিলোমিটার নৌপথ উদ্ধারে মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছে অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)। ৫৩ টি নৌরুটের ১২ হাজার কিলোমিটার নৌপথ খননের জন্য প্রথম পর্যায়ে ২৪টি নদী খনন করা হয়েছে। দ্বিতীয় দফায় ২৯টি গুরুত্বপূর্ণ নদী খনন করার কথা রয়েছে। নদী খননের মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে প্রায় ১২ হাজার কিলোমিটার নৌপথ সচল হবে।

বাংলাদেশ সরকার নদী ও নৌপথ উন্নয়নে এবং যাত্রী ও পণ্য পরিবহনে নদীর নাব্য রক্ষা, নদীর মাধ্যমে জলাধার সৃষ্টি ও নিরাপদ নৌপথ উন্নয়নে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। সড়ক পথের পরিবর্তে নৌপথ ব্যবহার করে পণ্য কার্গো পরিবহনে প্রতিবছর সাশ্রয় হয় ৭৫০ কোটি টাকা। পক্ষান্তরে যাত্রী ও পণ্য পরিবহনে নদীর নাব্য রক্ষা ও নিরাপদ নৌপথ উন্নয়নে প্রতিবছর ড্রেজিং বাবদ ব্যয় হয় প্রায় ৬০ কোটি টাকা। ব্যাপক খননের পরিকল্পনা হিসেবে সরকারের বর্তমান মেয়াদে প্রায় ১০ হাজার কিলোমিটার নৌপথ খনন করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। ২০০৯-১০ সাল থেকে ডিসেম্বর ২০১৯ সময় পর্যন্ত গত ১০ বছরে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের আওতায় বাস্তবায়নাধীন প্রকল্প সমূহের মাধ্যমে প্রায় ১৭০৩ কিলোমিটার পুনরুদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। এই ১৭০৩ কিলোমিটার নৌপথ পুনরুদ্ধার করতে প্রায় ৯৬২ লক্ষ ঘনমিটার খনন কার্যক্রম সম্পাদন করতে হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক ১৩২০ কিলোমিটার পুনঃখনন করা হয়েছে এবং ৮২৩ কিলোমিটার নদী ড্রেজিং হয়েছে।

বাংলাদেশে বর্তমানে বেসরকারি মালিকানাধীন ১০০ টিরও বেশি ড্রেজার রয়েছে। বেসরকারি ড্রেজার সংখ্যাসহ বর্তমানে দেশের মোট ড্রেজিং সক্ষমতা বছরে প্রায় ৮০০ লক্ষ ঘনমিটার। অপরদিকে বিআইডব্লিউটিএ এর বার্ষিক ড্রেজিং চাহিদা প্রায় ১৬০০ লক্ষ ঘনমিটার অর্থাৎ বর্তমানে বার্ষিক ড্রেজিং ঘাটতির পরিমাণ প্রায় ৮০০ লক্ষ ঘনমিটার। প্রস্তাবিত ৩৫টি ড্রেজার সংগৃহীত হলে বিআইডব্লিউটিএ-এর ড্রেজার সংখ্যা ৮০ টিতে উন্নত হয়ে বার্ষিক ড্রেজিং সক্ষমতা দাঁড়াবে ৬২৫ লক্ষ ঘনমিটার। এর ফলে বিআইডব্লিউটিএ-এর বার্ষিক ড্রেজিং চাহিদার ৭০ শতাংশ পূরণ করা সম্ভব হবে এবং ঘাটতির পরিমাণ নেমে আসবে ৪৭৫ লক্ষ ঘনমিটারে। খসড়া ড্রেজিং মহাপরিকল্পনা অনুযায়ী, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃক ১৭৮টি নৌপথ এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের আওতায় ৩১৩টি নদী খননের জন্য নির্ধারিত রয়েছে। এছাড়া খালসমূহ খননের জন্য স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগকে দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছে। তবে সকল নদীর রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বিআইডব্লিউটিএ-কে।

বর্তমান সরকার বিআইডব্লিউটিএ›র ড্রেজিং বিভাগের মাধ্যমে সংরক্ষণমূলক ড্রেজিং ও ক্যাপিটাল ড্রেজিং এবং মৃত বা মৃতপ্রায় নদীর নব্য উন্নয়নের লক্ষ্যে ড্রেজিং কার্যক্রমে সাফল্য অর্জন করেছে। সে ধারাবাহিকতা বজায় রাখার জন্য নৌপথের নাব্য বৃদ্ধির লক্ষ্যে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে দেশের ৫০টি নৌপথের ফিজিবিলিটি স্টাডি করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে আন্তর্জাতিক পরামর্শক প্রতিষ্ঠান হ্যাসকনিং ডিএইচভি ন্যাদারল্যান্ড বি. ভি. কর্তৃক সমীক্ষা সম্পাদনের পর তাদের প্রতিবেদনে প্রতিফলিত সুপারিশ অনুযায়ী, সারাদেশের নৌপথ খনন কাজ চলছে।

বাংলাদেশের ২৫% জনগোষ্ঠীর যোগাযোগের মাধ্যম নৌপথ। স্বাধীনতার পর বিআইডব্লিউটিএ যে জরিপ করে তাতে দেখা যায়, দেশের মোট আয়তনের ৭ শতাংশ নৌপথ। ১৯৭৫ সালে যেখানে দেশের মোট পরিবহন ক্ষেত্রে নৌপথে যাত্রী পরিবহন ছিল ১৬ শতাংশ ও মালামাল পরিবহন ৩৭ শতাংশ, ২০০৫ সালে তা কমে দাঁড়ায় ৮ ও ১৬ শতাংশ।
স্বাধীনতার ৫০ বছরে নৌপথ কমেছে প্রায় ১৮০০০ কি.মি.। নৌপথ সচল রাখতে জমি অধিগ্রহন করার প্রয়োজন হয় না, ফসলি জমিও নষ্ট হয় না। পরিবেশ এবং প্রতিবেশ উভয়ের জন্য নৌপথ সবসময়ই স্বস্তিদায়ক।

বৈশ্বিক উষ্ণায়ন ও জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর একটি বাংলাদেশ। যে রকম অস্বাভাবিক দ্রুত গতিতে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বাড়ছে, তাতে কয়েক দশকের মধ্যে বাংলাদেশের একটি বড় অংশই তলিয়ে যেতে পারে। অন্যদিকে বর্ষায় বন্যা এবং শীতকালে নদীগুলোতে পানি না থাকায় চাষাবাদ ব্যাহত হচ্ছে। পাশাপাশি দেশের উত্তরাঞ্চলে মরুকরণ প্রক্রিয়া ক্রমেই বাড়ছে। তাই অস্তিত্বের প্রয়োজনেই নদীগুলোকে ড্রেজিং করতে হবে। ড্রেজিং বা খনন শিল্প বাংলাদেশ বিকাশমান নতুন শিল্প। ১৯৭৫ সাল থেকে বাংলাদেশের ড্রেজিং শুরু হলেও বর্তমান সরকার এবং আগের মেয়াদে দুইটি সরকারের সময়ে ড্রেজিং শিল্পের বিকাশ হয়েছে। বাংলাদেশে বর্তমানে সরকারি এবং বেসরকারি পর্যায়ে ড্রেজার ক্রয় এবং পরিচালনার কার্যক্রম আশার সঞ্চার করেছে। ড্রেজারের দাম তার কার্য ক্ষমতার উপর নির্ভর করে। উদ্যোক্তাগণ বিপুল অর্থ ব্যয় করে ড্রেজার ক্রয়ের পর অনেক ক্ষেত্রে সরাসরি কাজে অংশগ্রহণ করতে পারে না। টেন্ডার মূল্যায়নে ম্যাট্রিক্স সিস্টেমের সীমাবদ্ধতার কারণে নতুন উদ্যোক্তাদের কাজ পাওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। ফলে তারা বাধ্য হয়ে ড্রেজার ভাড়া দিয়ে থাকেন। অন্যদিকে ম্যাট্রিক্স সিস্টেমের সুবিধা নিয়ে বড় বড় ঠিকাদার অধিক কাজ হাতে নিয়ে নদী শাসনকে অনেক ক্ষেত্রে হুমকির মুখে ফেলছেন। সরকার সম্প্রতি এ ধরণের ঠিকাদারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া শুরু করেছে। সম্ভাবনাময় এ শিল্পের প্রসারে ড্রেজার শিল্প বান্ধব নীতি প্রণয়ন এবং প্রনোদনা প্রদান জরুরী। ড্রেজিং শিল্পের উৎকর্ষতা নদী শাসনে যুগান্তরকারী অধ্যায়ের সূচনা করেছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড এবং বিআইডব্লিউটিএ নদী শাসন এবং নৌ-পথের নাব্যতা রক্ষায় কাজ করে। এ দু’টি সংস্থাই ড্রেজিং কার্যক্রম প্রত্যক্ষভাবে পরিচালনা করে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের ২০০০ কিলোমিটার এবং বিআইডব্লিউটিএ’র ১৮০০ কিলোমিটার ড্রেজিং এর পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে বাংলাদেশের নদী কেন্দ্রিক অর্থনীতির চেহারা আমূল বদলে যাবে। নদী সমূহে মাছের বিচরণ ক্ষেত্র বৃদ্ধি পাবে। নদী বন্দরগুলো অনেক বেশী কার্যক্ষম হবে, নৌ-পথে যানবাহনের সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে। একই সাথে নৌ-পথে মালামাল ও যাত্রী পরিবহন অনেকগুন বৃদ্ধি পাবে। নদী কেন্দ্রিক বাণিজ্যে বিনিয়োগ বৃদ্ধি পাবে। বিপুল সংখ্যক কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। দেশের আর্থ সামাজিক অবস্থার ইতিবাচক পরিবর্তন হবে। নদী সমূহের পানি ধারণ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে ফলে অতিবন্যার সম্ভাবনা ও ঝুঁকি কম হবে। নদী কেন্দ্রিক অর্থনীতির প্রাণ সঞ্চার হবে। শুধুমাত্র অতি বন্যা প্রতিরোধ করতে পারলেই জিডিপির ৩-৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন সম্ভব হবে।

পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় এবং নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের চলমান প্রকল্পসমূহ বাস্তবায়ন হলে নৌপথ হবে জনগণের নিরাপদ যাত্রার প্রথম পছন্দ। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা, দূষণ প্রতিরোধ, কর্মসংস্থান সৃষ্টি ছাড়াও বিনোদনসহ বিনিয়োগের নতুন হটস্পট হতে পারে নদী। সেক্ষেত্রে ড্রেজিং শিল্পকে পৃষ্ঠপোষকতা খুবই জরুরি। উন্মুক্ত নদীপথই হবে আগামীর বাংলাদেশের অর্থনীতি অন্যতম প্রধান চালিকাশক্তি। (সমাপ্ত)
লেখক: উপ-মন্ত্রীর একান্ত সচিব (উপ-সচিব), পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বিকাশমান ড্রেজিং শিল্প
আরও পড়ুন