Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অলিম্পিক যেন প্রতিবাদের মঞ্চ

স্পোর্টস ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৮ জুলাই, ২০২১, ১২:০০ এএম

করোনাকাল পেরুনো এবারের অলিম্পিক যেন প্রতিবাদের এক মহামঞ্চে পরিণত হয়েছে। কেউ দেশের প্রতি অন্যায়ের প্রতিবাদ করছেন, তো কারো আবার থাকছে গোটা বিশ্ব থেকেই যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান। এবার নিজেদের পোশাকে বড় পরিবর্তন এনে অন্যরকম এক প্রতিবাদ জানালো জার্মান দল। নারী জিমন্যাস্টিকসের চিরায়ত পোশাক ‘যৌন আবেদনময়’, এমন ভাবনা থেকেই সেটিকে বর্জণ করেছে তারা।
গত পরশু জিমন্যাস্টিকসের বাছাইপর্বেই নতুন ধরণের পোষাকে নেমে সবাইকে চমকে দেয় জার্মান নারী দল। নারী জিমন্যাস্টরা সাধারণত বিকিনি-কাট লেওটার্ড নামের খোলামেলা পোষাক পড়েন। সেই চিরায়ত পোশাকের বদলে তারা পরেছে অন্য রকম ডিজাইনের পোশাক। জিমন্যাস্টসরা যেমন বিকিনির মতো পোশাক পরেন, সেটির বদলে তাঁদের গায়ে হাঁটুর নিচ পর্যন্ত ঢাকা পোশাক। জার্মান জিমন্যাস্টিকস ফেডারেশনের ইচ্ছাতেই পোশাকে এমন পরিবর্তন তাদের। জার্মান জিমন্যাস্টিকস ফেডারেশন চায় না নারী দলের খেলার পোশাকে কোনো ধরনের ‘যৌন আবেদনময়তা’ থাকুক।
ব্যাপারটা স্বস্তির সঙ্গেই স্বাগত জানিয়েছেন জার্মান নারী জিমন্যাস্টসরা। দলের অন্যতম সদস্য এলিসাবেথ সেইটজ মনে করেন, পরিবর্তিত এ পোশাকে একধরনের বার্তা দেওয়া হয়েছে, যেটি নারীকে আরও সম্মানিত করবে, ‘পোশাকের ব্যাপারটা পুরোপুরিই হচ্ছে কোনটাতে আপনি আরাম পান। আমরা এই পোশাক বদলের মধ্য দিয়ে বার্তা দিতে চেয়েছি, প্রত্যেক নারীর পোশাক বাছাইয়ের একান্ত নিজস্ব অধিকার রয়েছে।’ জার্মান জিমন্যাস্টরা গত এপ্রিলে প্রথমবারের মতো হাত-পা ঢাকা লেওটার্ড পরেছিলেন। সেই সময় এলিজাবেথ বলেছিলেন, ‘আমি চাই যে কোনো খেলায় মেয়েদের তাদের ইচ্ছেমতো পোশাক পরার সুযোগ থাকুক।’
জার্মান জিমন্যাস্টিকস ফেডারেশন এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তাদের এই উদ্যোগ খেলার পোশাকে যেকোনো ধরনের যৌন আবেদনময়তা তৈরির বিরুদ্ধে, ‘আমরা চাই না নারীদের খেলার পোশাকে কোনো ধরনের যৌন আবেদনময়তা সৃষ্টি হোক। নারী জিমন্যাস্টিকস দলের পোশাকের ডিজাইন পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে আমরা এই বার্তাই দিতে চেয়েছি। আমাদের লক্ষ্য, প্রত্যেক নারী ক্রীড়াবিদকে সুন্দর করে, সম্মানের সঙ্গে উপস্থাপন করা। তারা যেন পোশাকটি পরে আরাম পায়, বিব্রত না হয়, কোনো ধরনের অস্বস্তিতে না থাকে।’
আন্তর্জাতিক জিমন্যাস্টিকস ফেডারেশন অবশ্য এ ব্যাপারে কোনো ধরনের আপত্তি করেনি। জার্মান নারী দলের কোনো সদস্যও এ ব্যাপারে কোনো আপত্তি তোলেননি। বরং পুরো বিষয়টিকে দারুণ ইতবাচকভাবেই দেখছেন তারা। তবে যদি কোনো নারী জিমন্যাস্টস বিকিনি ঢঙয়ের চিরায়ত পোশাক পরে খেলায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চান, তাহলে সেটিও তারা পারবেন। এ নিয়ে কোনো জবরদস্তি নেই। জার্মান নারী জিমন্যাস্টস সারাহ ভোস পুরো বিষয়টিতেই আরাম কিংবা স্বস্তির বিষয়টিই বড় করে দেখছেন, ‘আমরা নারীরাই এ পরিবর্তনের পক্ষে বেশি করে আছি। আমাদের কোচরাও কোনো আপত্তি করেননি। তারা বলেছেন, আমরা নিজেদের সেরা পারফরম্যান্সটি দেওয়ার ব্যাপারে যেভাবে স্বস্তি বোধ করি, যে পোশাকেই করি, তাঁদের কোনো আপত্তি নেই। আমি তো মনে করি, পরিবর্তিত ডিজাইনের এই পোশাকে আমরা আরও বেশি আত্মবিশ্বাসী।’
আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় পা ঢাকা পোশাক পরার অনুমতি আছে। তবে এতদিন পর্যন্ত প্রায় সব ক্ষেত্রেই শুধু ধর্মীয় কারণে এমন পোশাক পরা হয়েছে। তবে এতকিছুর পরও জার্মান জিমন্যাস্টরা প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত পর্বে যেতে পারেননি।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: অলিম্পিক

১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২২
১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ