পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
কঠোর লকডাউনের পঞ্চম দিনে রাজধানীর সড়কে যানবাহন ও মানুষের চলাচল আরও বেড়েছে। সড়ক-মহাসড়কে দাবিয়ে বেড়াচ্ছে ব্যক্তিগত গাড়ি। সড়ক ও আশপাশের অলিগলিতে ব্যাপক মানুষের আগাগোনা লক্ষ্য করা গেছে। সড়কে বের হওয়া বিভিন্ন চেকপোস্টে তল্লাশিতে পড়লেই ব্যাংকার আর জরুরি মেডিকেলের দোহাই দেওয়া মানুষের সংখ্যাই বেশি মিলছে। গতকাল সকাল থেকে বিকেলে পর্যন্ত রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। তবে আইন অমান্য করার রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে ৫৫৫ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এছাড়া ২৩৬ জনের কাছ থেকে ৪ লাখ ৮৩ হাজার ৯৭৫ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। আর ৪৯৭টি গাড়িকে ১১ লাখ ৭৩ হাজার টাকা জরিমানা করে ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগ। গতকাল সন্ধ্যায় ঢাকা মহানগর পুলিশের মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগ থেকে এসব তথ্য জানানো হয়।
তবে রাজধানীর আবদুল্লাপুর, বিমানবন্দর, মহাখালী, বনানী, মগবাজার, কাকরাইল, পল্টন, বিজয়নগর ঘুরে দেখা গেছে, সড়কে রিকশার পাশাপাশি সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের যানবাহন, পণ্যবাহী যান চলছে। বিমানবন্দরে দাঁড়িয়ে থাকা সুবির নামে এক পথচারী বলেন, দেখেন, মনে হবে না ঢাকা শহরে লকডাউন চলছে। যেভাবে মানুষজন যাতায়াত করছে, তাতে লকডাউন কাগজে কলমেই কঠোর। খিলক্ষেত এলাকায় মুদি ও কাঁচাবাজারে লোকজনের উপস্থিতি দেখা গেছে। ভ্যানে করে তরকারি বিক্রি করতে দেখা গেছে মৌসুমী ব্যবসায়ীদের। তাদের ঘিরে রেখেছেন ক্রেতা সাধারণ।
কাকরাইলের মোড়ে গিয়ে দেখা গেছে, রিকশার জটলা। পুরো সড়ক জুড়ে রিকশার বিচরণ। কেউ যাত্রী নিয়ে আবার কেউবা খালি রিকশা নিয়ে চলছে। গুলশান-বনানী এলাকায় ব্যক্তিগত গাড়ির সংখ্যা ছিল অন্য যেকোনো দিনের চেয়ে বেশি। ধানম-ি, সাত মসজিদ রোড এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মঙ্গলবার প্রধান সড়কে রিকশা ও মানুষের চলাচল বেড়েছে। পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের টহলও দেখা গেছে। শাহবাগ, গুলিস্তানে ব্যক্তিগত গাড়ির পাশাপাশি বহু রিকশা সড়কে দেখা গেছে।
মালিবাগ ও মতিঝিল এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, মোড়ে মোড়ে পুলিশের চেকপোস্ট নেই। কোনো কোনো মোড়ে চেকপোস্ট থাকলেও তাতে পুলিশের উপস্থিতি দেখা যায়নি। এলাকাগুলো ঘুরে দেখা যায়, মোটরসাইকেলে দুজন এবং রিকশায় দু-তিনজনও চলাচল করছেন। মোটরসাইকেলে দুজন চলাচল করলেও পুলিশ তাদের দেখে অনেকটা নিশ্চুপ অবস্থায় রয়েছে। এমনকি মোটরসাইকেলে ডেকে ডেকে যাত্রী তুলতেও দেখা যায় অনেক রাইডারকে।
রাজধানীর নিউমার্কেট ও ফার্মগেট এলাকায় প্রায় ৩০ মিনিটের পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, গত কয়েক দিন যেখানে পুলিশের চেকপোস্ট ছিল সেখানে গতকাল পুলিশের উপস্থিতি দেখা যায়নি। এছাড়া রাজধানীর কিছু কিছু সড়কে যানজট না থাকলেও কোথাও কোথাও সিগন্যাল লক্ষ্য করা গেছে। সড়কজুড়েই ব্যক্তিগত গাড়ি, রিকশা আর মোটরসাইকেলের আধিপত্য। সড়কে মানুষের উপস্থিতিও ছিল চোখে পড়ার মতো।
নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক কারওয়ান বাজারে কর্তব্যরত একজন ট্রাফিক সার্জেন্ট বলেন, রাস্তায় চলাচলে বিধিনিষেধ থাকলেও অনেকে বিনা প্রয়োজনেও রাস্তায় বের হচ্ছেন। আমরা এমন ক্ষেত্রে জরিমানা করছি। আবার কেউ কেউ বিভিন্ন অজুহাত দেখাচ্ছেন। জরুরি সেবায় সম্পৃক্ত ব্যক্তিরা অবাধে চলাচল করতে পারছেন।
রমনা ট্রাফিক জোনের এসি মো. রেফাতুল ইসলাম বলেন, রোদ-বৃষ্টি উপেক্ষা করেও দিনের পর দিন সরকার ঘোষিত কঠোর বিধিনিষেধ নিশ্চিতে মাঠে থেকে কাজ করছে পুলিশ সদস্যরা। সকাল থেকে দুপুর, দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত ট্রাফিক পুলিশ সদস্যরা কাজ করছে। সকাল ৭টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত এবং দুপুর ২টা থেকে সড়কে যতক্ষণ গাড়ির চাপ থাকে ততক্ষণ দুটি শিফটে কাজ করছে। বৃষ্টির জন্য ট্রাফিক সদস্যদের রেইন কোট ও ছাতা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, মানুষ নানা অজুহাত দিয়ে বাইরে বের হওয়ার চেষ্টা করছে। কঠোর লকডাউনের মধ্যেও সবারই জরুরি কাজের অজুহাত। সকালে অফিস টাইমে গাড়ির চাপ কিছুটা বেশি থাকে। এরপর বেলা ১১টার পর সেই চাপ ধীরে ধীরে কমতে থাকে। আবার বিকেল ৪টার পর কিছুটা চাপ থাকে। সব সময়ই পুলিশ সদস্যরা চেষ্টা করেন সড়কে থাকার জন্য।
এদিকে, যাত্রাবাড়ীর ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে মানুষের চলাচল ছিল আগের যেকোন দিনের তুলনায় বেশি। গতকাল সকাল থেকে এই মহাসড়কের বিভিন্ন স্থান ঘুরে দেখা গেছে, প্রাইভেটকার, পণ্যবাহী যানবাহন ছাড়াও রিকশা, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ও ইজিবাইক চলাচল করছে। এছাড়া এ মহাসড়কে ভ্যানে করে মানুষের চলাচলও অনেক বেড়েছে। ভ্যানে মানুষকে গাদাগাদি করে চলাচল করতে দেখা গেছে। রায়েরবাগে দেখা যায়, একটি ভ্যানে আটজন উঠেছেন। যাত্রীদের কারো কাঁধে ট্রাভেল ব্যাগ আবার কারো হাতে ফাইলপত্র। তারা সাইনবোর্ড এলাকা থেকে শনির আখড়া যাচ্ছেন।
রাজধানীর বিভিন্ন চেকপোস্টে থাকা পুলিশের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সকাল ৯টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত সড়কে বের হওয়াদের বেশিরভাগই ব্যাংক কর্মকর্তা পরিচয় দিচ্ছেন। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে জরুরি মেডিকেল সেবার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বলে পরিচয় দিচ্ছেন অনেকে। আবার অনেককে অনলাইন জরুরি ব্যবসার দোহাই দিতে দেখা যায়। তবে বেশিরভাগের ক্ষেত্রেই সঠিক পরিচয় মেলাতে হিমশিম খেতে হয় পুলিশের।
ধানমন্ডির রাসেল স্কয়ারের চেকপোস্টে দায়িত্বরত সার্জেন্ট মো. নাজমুল হক বলেন, লোকজনের বের হওয়ার পরিমাণ প্রতিদিনই বাড়ছে। যৌক্তিক কারণ ছাড়াও অনেক বের হচ্ছেন। গাড়ি আটকালেই বলেন ব্যাংকার। এটা সকালে অফিসের সময়ে বেশি হয়। এরপর কাউকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে জরুরি মেডিকেল, কিছু অনলাইন ভিত্তিক সেবার কথাও বলেন। সন্দেহ হলে গাড়ি থামানো হয়। বিশেষ করে ঢাকার বাইরে থেকে আসা গাড়িগুলো থামানো হয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।