লিবিয়া থেকে ইতালি যাওয়ার পথে ভূমধ্যসাগরে নৌকা ডুবে কমপক্ষে ১৭ বাংলাদেশির মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে বিভিন্ন দেশের আরও ৩৮০ অভিবাসনপ্রত্যাশীকে। বুধবার তিউনিসিয়ান রেড ক্রিসেন্টের বরাতে বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ তথ্য জানিয়েছে।
রেড ক্রিসেন্ট বলেছে, নৌকাটি লিবিয়ার উত্তরপশ্চিম উপকূলের জুওয়ারা থেকে যাত্রা শুরু করেছিল। এতে সিরিয়া, মিসর, সুদান, ইরিত্রিয়া, মালি ও বাংলাদেশের অভিবাসনপ্রত্যাশীরা ছিলেন।
সংস্থাটির কর্মকর্তা মঙ্গি স্লিম বলেন, লিবিয়া থেকে ইউরোপ যাওয়ার পথে নৌকা ডুবে ১৭ বাংলাদেশি মারা গেছেন এবং ৩৮০ জনের বেশি অভিবাসনপ্রত্যাশীকে উদ্ধার করা হয়েছে।
নিহতদের নাম-পরিচয় এখনো জানা যায়নি। উদ্ধার অভিবাসনপ্রত্যাশীদের মধ্যে আর কোনো বাংলাদেশি রয়েছেন কি-না তাও নিশ্চিত নয়।
গত কয়েক মাসে তিউনিসিয়া উপকূলে বেশ কয়েকটি নৌকাডুবির ঘটনা ঘটেছে। আবহাওয়ার উন্নতি হওয়ায় তিউনিসিয়া ও লিবিয়া থেকে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের ইতালি প্রবেশের চেষ্টাও বেড়েছে।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে হাজার হাজার মানুষ ভূমধ্যসাগরের বিপজ্জনক পথ পাড়ি দিয়ে অবৈধভাবে ইউরোপ প্রবেশের চেষ্টা করেছেন। এদের বেশিরভাগই আফ্রিকা বা মধ্যপ্রাচ্যের দরিদ্রতম ও যুদ্ধপ্রবণ দেশগুলোর বাসিন্দা। তবে বাংলাদেশিরাও এভাবে ইউরোপ যাওয়ার চেষ্টা করায় বিষয়টি নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
গত ২৪ জুন ভূমধ্যসাগরে ভাসমান অবস্থা থেকে আড়াইশর বেশি বাংলাদেশিকে উদ্ধার করা হয়। তিউনিসিয়া কোস্টগার্ড জানায়, ২৬৪ বাংলাদেশি ও তিন মিসরীয় নাগরিক, অর্থাৎ মোট ২৬৭ অভিবাসনপ্রত্যাশী একটি নৌকায় করে অবৈধভাবে লিবিয়া থেকে ইউরোপ যেতে চাচ্ছিলেন। কিন্তু মাঝসমুদ্রে নৌকাটি বিকল হয়ে গেলে বিপদে পড়েন তারা।
এর মাত্র তিনদিন পরেই সাগরে ভাসমান অবস্থায় ১৭৮ অভিবাসনপ্রত্যাশীকে উদ্ধার করে তিউনিসিয়ার নৌবাহিনী। উদ্ধার করা হয় দুটি মরদেহও। উদ্ধার ব্যক্তিদের বেশিরভাগই ছিলেন বাংলাদেশি। অন্যরা ইরিত্রিয়া, মিসর, মালি ও আইভরি কোস্টের নাগরিক।
এরপর ৩ জুলাই লিবিয়া থেকে ইতালি যাওয়ার পথে বাংলাদেশ, মিসরসহ চারটি দেশের অন্তত ৪৩ জন অভিবাসনপ্রত্যাশী ও শরণার্থী নিয়ে ভূমধ্যসাগরে একটি নৌকা ডুবে যায়। নৌকার সকল আরোহীর মৃত্যুর আশঙ্কার কথা জানিয়েছিল তিউনিসিয়ার রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি।
এর মাত্র পাঁচদিন পরে (৮ জুলাই) ভূমধ্যসাগরে ডুবে যাওয়া আরেকটি নৌকা থেকে ৪৯ জন বাংলাদেশিকে উদ্ধার করে তিউনিসিয়ার নৌবাহিনী।