বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
দাদন ব্যবসায়ীর সঙ্গে এক লাখ টাকার চুক্তিতে লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলায় চার জেলে সহযোগীদের হাতে খুন হয়েছেন। প্রথমে ঘটনাটি জলদস্যুতার বলে প্রচার হলেও নৌ-পুলিশের প্রচেষ্টায় বেরিয়ে আসে চার খুনের আসল তথ্য।রোববার এ তথ্য জানিয়েছেন স্থানীয় বড়খেরী নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক মো. কামরুজ্জামান। হত্যাকাণ্ডের শিকার চার জেলে হলেন- রামগতি উপজেলার চর আলেকজান্ডার ইউনিয়নের সোনালী গ্রামের নাসির উদ্দিন মাঝি (৪৫) তার ছেলে মো.রিয়াজ (১২) নোয়াখালীর চরজব্বর এলাকার মো.করিম (৪৫) ও একই এলাকার মো.মিরাজ (১৮)। এ ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারা হলো- মো. ইউছুফ মিয়া (৩৩) মোঃ রাসেল (৪০) ও আল-আমিন (৩৫)। গ্রেফতারকৃতরা বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ড শেষে তারা এখন কারাগারে রয়েছে।বড়খেরী নৌ-পুলিশ সূত্রে জানা যায়,উপজেলার আলেকজান্ডার ইউনিয়নের সোনালী গ্রাম এলাকার নাসির উদ্দিন মাঝি পেশায় জেলে। নদী ও সমুদ্রে মাছ শিকারের জন্য তার একটি ট্রলার রয়েছে। প্রায় ১০ মাস আগে তিনি চট্টগ্রামের বাকলিয়া নতুন ফিশারিঘাটের আড়তদার মো. ইউছুফ মিয়ার কাছ থেকে তিন লাখ টাকা দাদন নেন। এরপর থেকে নিয়মিত ওই আড়তে মাছ বিক্রি করছিলেন। কিন্তু সম্প্রতি অভাব-অনটনে পড়ে নাসির মাছঘাটের অপর এক আড়তদারের কাছ থেকে দাদন নিয়েছেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে গত ১২ মে ইউছুফ ট্রলারসহ নাসির মাঝিকে ঘাট এলাকায় আটকে রাখে। কিন্তু নাসির কৌশলে ট্রলার নিয়ে পালিয়ে এলাকায় চলে আসেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ইউছুফ ট্রলারটি নিজের কবজায় নেওয়াসহ নাসিরকে হত্যার পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা অনুযায়ী নাসিরের ট্রলারের সহযোগী জেলে রাসেল, সুমন, সোহাগ ও আল-আমিনের সঙ্গে সে এক লাখ টাকায় চুক্তি করে। পরিকল্পনা ও চুক্তি অনুযায়ী ১৬ মে চার জেলে রামগতির স্লইসগেট বাজারের একটি দোকান থেকে ঘুমের ১০টি বড়ি কেনে। পরদিন নাসির, অপর তিন জেলেসহ চারজন মেঘনা নদীতে মাছ ধরতে যান। পরে কৌশলে তারা নাসিরকে কক্সবাজারের কুতুবদিয়া এলাকায় সাগরে মাছ ধরার জন্য নিয়ে যায়। সেখানে ২০ মে তারা চায়ের সঙ্গে ঘুমের বড়ি মিশিয়ে নাসির, রিয়াজ, করিম ও মিরাজকে খেতে দেয়। চা খেয়ে তারা ঘুমিয়ে পড়লে বাকি চারজন মিলে তাদের সাগরে ফেলে হত্যা করে। পরে ট্রলারটি চট্টগ্রামের বাকলিয়া নতুন ফিশারিঘাট এলাকায় নিয়ে ইউছুফকে বুঝিয়ে দেয়।আর আল-আমিন এলাকায় গিয়ে প্রচার করে, জলদস্যুরা তাদের ট্রলারে হামলা চালিয়েছে। তিনিসহ চার জেলে পালিয়ে আসতে পারলেও নাসির মাঝি ও তিন জেলেকে জলদস্যুরা অপহরণ করে নিয়ে গেছে।
পুলিশ জানায়, গত ১৩ জুন মীরজানের মোবাইল ফোনে রাসেল নামের এক ব্যক্তি কল করেন। অপর প্রান্ত থেকে বলা হয়, নাসির মাঝিসহ চার জেলে তার হেফাজতে রয়েছেন,এক লাখ টাকা মুক্তিপণ দিলে তাদের ছেড়ে দেওয়া হবে। বিষয়টি মীরজান থানায় গিয়ে জানালে পুলিশ লিখিত অভিযোগ দেওয়ার পরামর্শ দেয়। বড়খেরী নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির পুলিশ মোবাইল ফোন ট্র্যাকিংয়ের মাধ্যমে ১৫ জুন যশোরের চৌগাছা থেকে রাসেলকে আটক করে। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে কমলনগরের হাজিরহাট এলাকা থেকে আল-আমিন এবং চট্টগ্রাম থেকে হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী ইউছুফকে গ্রেপ্তার করা হয়।
বড়খেরী নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক মো. কামরুজ্জামান বলেন, এ ঘটনায় প্রথমে কোনো ক্লু পাওয়া না গেলেও মোবাইল ফোন ট্র্র্যাকিংয়ের মাধ্যমে রাসেলকে আটকের মধ্য দিয়ে তথ্য বেরিয়ে আসতে শুরু করে। এ ঘটনায় সম্পৃক্ত সুমন ও সোহাগকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।