বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
খুলনা মহানগরীর সুন্দরবন ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে অবৈধ গর্ভপাত, নবজাতক বিক্রি ও পাচার চেষ্টার অপরাধে ক্লিনিক মালিকসহ ১০ জনকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-৬। এ ঘটনায় গতকাল লবনচরা থানায় মামলা হয়েছে। দুপুরে র্যাব-৬ কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানিয়েছেন অধিনায়ক লে. কর্ণেল রওশনুল ফিরোজ।
গত শুক্রবার রাতে ওই ক্লিনিকে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃতরা হল- ক্লিনিক ব্যবসার আড়ালে অবৈধ বাচ্চা প্রসব এবং পাচার সংক্রান্ত চাঞ্চল্যকর ঘটনার প্রধান আসামি বাগেরহাটের রামপালের রামেশ চন্দ্র রায়ের পুত্র রংধনু আবাসিকের সুন্দরবন ক্লিনিকের মালিক তুষার কান্তি মন্ডল, তার স্ত্রী বেবী চন্দন রায়, বাগেরহাটের মোড়েলগঞ্জের জিওধরা গ্রামের মৃত আলী আক্কাস হাওলাদারের ছেলে মো. সোহরাব হাওলাদার, তার মেয়ে ও নবজাতকের মা তামান্না তমা, খুলনার লবনচরার ফাতেমাবাদ এলাকার মৃত আ. খালেকের ছেলে মো. মজুনুর রহমান খাঁন লালু, একই এলাকার মো. শাহাজাহান সানার ছেলে মো. মহিদুল ইসলাম, হরিণটানা জয়খালী এলাকার মো. শাহজাহান খানের ছেলে মো. শামীম হোসেন, ডুমুরিয়ার গজেন্দ্রপুরের মো. মজনুর রহমান লালুর স্ত্রী নবজাতক ক্রেতা মো. লাজলী খাতুন, একই এলাকার শওকত মোল্লার স্ত্রী মোছা. লাকী আক্তার এবং লবনচরার ফাতেমাবাদ এলাকার মো. জাকির হোসেনের স্ত্রী মোছা. হোসনে আরা বেগম।
র্যাব-৬ অধিনায়ক লে. কর্ণেল রওশনুল ফিরোজ বলেন, মানব সেবার মত প্রশংসনীয় কাজে নিয়োজিত থেকে সুন্দরবন ক্লিনিক ব্যবসার আড়ালে অবৈধ বাচ্চা প্রসব, অবৈধ গর্ভপাত ও শিশু পাচারসহ বিভিন্ন ঘৃণ্য কর্মকান্ডের সাথে জড়িত। শুধু তাই নয় অবৈধ গর্ভপাত ও শিশু বিক্রির মতো নিকৃষ্ট কাজে রোগীদের উৎসাহিত করতো ক্লিনিকটির মালিক।
র্যাব গোয়েন্দা সূত্রে জানা যায়, জনৈক মহিলা অবৈধ গর্ভবতী হওয়ায় তার সন্তান ভ‚মিষ্ট করা এবং পরবর্তিতে বিক্রি করার মতো ঘৃণ্য কাজের পরিকল্পনা করছে। এক্ষেত্রে সে টিউমার অপারেশনের নামে ক্লিনিকে ভর্তি হয় এবং সন্তান ভূমিষ্ট হওয়ার পর তাকে অসাধু ব্যক্তিদের কাছে বিক্রয়ের জন্য পরিকল্পনা করে। এ ব্যাপারে সুন্দরবন ক্লিনিক ও তার স্বত্ত্বাধিকারী সরাসরি সহায়তা প্রদান ও জড়িত বলে জানা যায়। ওই ক্লিনিকে প্রায়ই অবৈধ বাচ্চা ক্রয় বিক্রয় ছাড়াও নানাবিধ অবৈধ কার্যক্রম পরিচালনা করা হতো বলে জানা যায়। পাশাপাশি মেয়াদ উত্তীর্ণ রেজিস্টেশনের সুন্দরবন ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে রেজিস্টার্ড ডাক্তার কিংবা প্রশিক্ষিত নার্স কারো উপস্থিতি পাওয়া যায়নি। ক্লিনিকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কথিত ডাক্তার মেডিক্যাল অ্যাসিস্ট্যান্ট হয়েও রোগী দেখা থেকে শুরু করে সিজারিয়ান অপারেশনও পরিচালনা করতো।
গত শুক্রবার রাতে সুন্দরবন ক্লিনিকে অভিযান পরিচালনা করে নবজাতক সন্তান বিক্রিকালে শিশুটিকে উদ্ধার ও ঘটনার সাথে জড়িত সকল অপরাধীদের গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, ক্লিনিক মালিক কথিত চিকিৎসক তুষার কান্তি মন্ডল ডাক্তার সেজে তার স্ত্রী বেবী চন্দন রায়ের সহযোগিতায় দীর্ঘদিন যাবৎ ক্লিনিক ব্যবসার আড়ালে অবৈধ বাচ্চা প্রসব, অবৈধ গর্ভপাত ও পাচারের মত জঘন্য অপরাধ করে আসছে। এছাড়াও তাদের নিকট হতে বাচ্চা ক্রয়-বিক্রয়ের চুক্তিনামার তিনটি সাদা ১০০ রেভিনিউ স্ট্যাম্প জব্দ করা হয়। এছাড়া অভিযুক্তরা নারী ও পুরুষ বাচ্চা ক্রয়-বিক্রয় ও পচারের সাথে জড়িত বলে তারা র্যাবের কাছে স্বীকার করেছে। গ্রেফতারকৃত আসামিদের লবনচরা থানায় হস্তান্তর করে তাদের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন এবং মানব পাচার আইনে মামলা করা হয়েছে। একই সাথে জেলা সিভিল সার্জনের সহায়তায় সুন্দরবন ক্লিনিক সিলগালা করে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।