Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

খুলনায় নবজাতক বিক্রির সময় মা সহ ৪ জন গ্রেফতার

খুলনা ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ১৬ জুলাই, ২০২১, ১০:১৪ পিএম

বাগেরহাটের মোড়েলগঞ্জ থেকে এসে খুলনা জিরোপয়েন্টের সুন্দরবন ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে মাত্র ১৫ হাজার টাকায় নিজ কন্যা নবজাতক বিক্রির সময় বিক্রেতা মা ও ক্রেতা দম্পতিসহ ৪ জনকে গ্রেফতার করেছে র‍্যাব। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে নবজাতক বিক্রির সময় আজ শুক্রবার রাতে র‍্যাব ওই ক্লিনিকে অভিযান চালায়।

র‍্যাব-৬ সূত্রে জানা গেছে, খুলনার জিরোপয়েন্ট সংলগ্ন রংধনু আবাসিক এলাকায় মায়ের আশীর্বাদ নামের তিনতলা ভবনে অবস্থিত জনৈকা বেবি মন্ডলের মালিকানাধীন সুন্দরবন ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে দু দিন আগে ভর্তি হন বাগেরহাট জেলার মোড়েলগঞ্জ উপজেলার সোবহান হোসেনের স্ত্রী দুই সন্তানের জননী তমা বেগম (২৮)। তার পিতা সোহরাব হাওলাদার তাকে ভর্তি করেন। স্বামী সোবহান হোসেনের সাথে স্ত্রী তমা বেগমের কলহের কারণে তারা একসাথে থাকেন না। ফলে নবজাতকটির পিতৃ পরিচয় নিয়ে প্রশ্ন ওঠায় তমা বেগমের গ্রামে প্রচার করা হয় টিউমার অপারেশনের জন্য তাকে খুলনায় আনা হয়েছে।

এদিকে ভর্তির পর ভূমিষ্ঠ কন্যা সন্তানকে বিক্রির জন্য তমা বেগম ও তার বাবা সোহরাব হাওলাদার ক্লিনিকের আয়া রেহেনা ও তার বোন হোসনে আরার মাধ্যমে ক্রেতা খুঁজতে থাকে। খবর পেয়ে খুলনার বটিয়াঘাটা উপজেলার সাচিবুনিয়া এলাকার চা বিক্রেতা মজনু ও লাজলি বেগম নবজাতক কিনতে ওই ক্লিনিকে আসেন। এ কাজে সহায়তা করেন ক্লিনিক মালিক বেবি মন্ডল ও তার স্বামী কথিত ডাক্তার পিকে মন্ডল।

গোপন সূত্রে র‍্যাব খবর পেয়ে রাত ৮ টার দিকে ঘটনাস্থলে অভিযান চালায়। র‍্যাব-৬ এর নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট গালিব পাশা অভিযান শেষে জানান৷ ক্লিনিকটির কোন অনুমোদন নেই। বিপুল পরিমাণ ওষুধ জব্দ করা হয়েছে। দীর্ঘদিন যাবত সাইন বোর্ডে খুলনার স্বনামধন্য চিকিৎসকদের নাম ব্যবহার করে ক্লিনিকটিতে অপারেশন করছেন বেবী মন্ডলের স্বামী পি কে মন্ডল। আজ রাতে ১৫ হাজার টাকায় নবজাতক বিক্রির সময় আমরা অভিযান চালাই। অভিযানকালে নবজাতক বিক্রেতা তমা বেগম, তার বাবা সোহরাব হাওলাদার, ক্রেতা দম্পতি মজনু ও লাজলি বেগমকে আটক করা হয়েছে। ক্লিনিক মালিক ও তার স্বামী কথিত ডাক্তার পি কে মন্ডলের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।

অভিযানে থাকা খুলনা জেলা সিভিল সার্জন অফিসের মেডিকেল অফিসার ডাঃ সাবরিয়া রহমান স্নিগ্ধা ক্লিনিকটির কোন অনুমোদন (লাইসেন্স) নেই। তারা ২০১২ সাল থেকে ক্লিনিকটি পরিচালনা করছে। ক্লিনিকটিতে অন্তত ২৪জন স্বনামধন্য চিকিৎসকের নাম সাইনবোর্ডে ব্যবহার করা হয়েছে, যারা কেউ এখানে রোগী দেখেন না। চিকিৎসাশাস্ত্রের বৈধ ডিগ্রি না থাকা সত্ত্বেও পি.কে মন্ডল নামের এই ব্যক্তি নিজেকে ডাক্তার পরিচয় দিতেন, শুধু তাই নয়- তিনি মেজর অপারেশনও করতেন। ক্লিনিকে ভুল অপারেশনে কয়েকজন নারী ও শিশু মৃত্যুর অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের এ ক্লিনিকটিতে কোন নার্স, ওয়ার্ড বয় বা টেকনিক্যাল হ্যান্ডস্ নেই। এমনকি অন্য কোন চিকিৎসকও আসতেন না এখানে। তাই দ্রুত ক্লিনিক খালি করার নির্দেশ দিয়েছে সিভিল সার্জন অফিস।



 

Show all comments
  • রুহুল আমীন যাক্কার ১৬ জুলাই, ২০২১, ১১:২৭ পিএম says : 0
    হায়রে হায়! এ কেমন দেশে বাস করি আমরা! আজ একটি অমানবিক ঘটনার গোপন সংবাদে সুন্দরবন ক্লিনিকে র‍্যাব উপস্থিত হয় এবং কেঁচো খুঁড়তে সাপ বেরিয়ে পড়ে। অথচ এই ধোকাবাজ দম্পতি অনেক বছর যাবৎ দিনদুপুরে তাদের এই অপকর্ম নির্বিঘ্নে চালিয়ে যাচ্ছে। এদের দেখার বা শাসন করার কি কেউ নেই? নাকি সর্ষেয় ভূত ঢুকেছে? সাহেদ-সাবরিনায় কি দেশটা ভরে গেলো?
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: খুলনা


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ