Inqilab Logo

শুক্রবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

তুরস্ক কি তালেবানদের দমন করতে পারে?

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৩ জুলাই, ২০২১, ৪:৩৪ পিএম

প্রায় সমস্ত পশ্চিমা সেনা আফগানিস্তান থেকে সরে আসায়, উগ্র ইসলামপন্থী তালেবানদের বিরুদ্ধে লড়াই করা কাবুলের কেন্দ্রীয় সরকারের একার পক্ষে কঠিন হয়ে পড়েছে। তবে আফগানিস্তান এখন তুরস্কের কাছ থেকে সামরিক সহায়তা পাবে।

গত মাসে ব্রাসেলসে ন্যাটো শীর্ষ সম্মেলনের পাশাপাশি আলোচনার সময়, তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেপ এরদোগান তার মার্কিন সমকক্ষ জো বাইডেনের সাথে আফগানিস্তানে তুর্কি সেনা নিয়োগের সম্ভাবনা সম্পর্কে কথা বলেছেন, সম্ভবত কাবুলের হামিদ কারজাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর রক্ষার জন্য। ব্রাসেলসে, ন্যাটো সেক্রেটারি-জেনারেল জেনস স্টলটেনবার্গ তুরস্কের গুরুত্ব এবং আফগানিস্তানের এগিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে তাদেরকে ‘মূল ভূমিকা’ রাখার বিষয়ে জোর দিয়েছিলেন। তবে, মোতায়েনের পরিকল্পনার বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কোন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি, যদিও আঙ্কারা এবং ওয়াশিংটনের মধ্যে বর্তমানে পর্দার আড়ালে আলোচনা চলছে।

যদিও তালেবানরা বলেছে যে, তারা তুরস্কোর সেনা নিয়োগের বিষয়টি সহ্য করবে না। তবে বিষয়টি কেবল তুরস্কের পশ্চিমা অংশীদারদের স্বার্থ রক্ষার নয়, আফগানিস্তানের নিরাপত্তার বিষয়টিও জড়িত। বিদেশী সেনা প্রত্যাহারের মাঝে তালেবানরাও তাদের অঞ্চলে বিজয় অর্জন করার কারণে ক্ষমতার দাবী খুব স্পষ্ট করে দিয়েছে। ন্যাটো কর্মকর্তারা বলেছেন যে তারা আঙ্কারাকে আফগানিস্তানে জড়িত থাকার প্রতি স্বাগত জানায়। তারা মনে করেন, মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ হিসাবে তুরস্ক হিন্দু কুশের মধ্যস্থতার ভূমিকা নিতে পারে।

তালেবান মুখপাত্র সুহেল শাহীন বিবিসির সাথে কথা বলার সময় এই ধারণাটি পরিষ্কারভাবে প্রত্যাখ্যান করে বলেন, সেপ্টেম্বরের পর আফগানিস্তানে থাকা বাকি সমস্ত বিদেশি সেনা দখলদার বাহিনী হিসাবে বিবেচিত হবে। তিনি বলেন, ‘সব বিদেশী বাহিনী, তাদের ঠিকাদার, উপদেষ্টা এবং প্রশিক্ষকদের দেশ থেকে সরে আসা উচিত।‘ বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন কাবুলে তুর্কি সেনা নিয়োগ করা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ হবে। আঙ্কারা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞ ইলহান উজগেল বলেন, গত ২০ বছরে ৬০ হাজার তালেবান ন্যাটো দ্বারা প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত প্রায় ৩ লাখ আফগান সেনার বিরুদ্ধে লড়াই করছে এবং তারা আবারও সেখানে জিতে চলেছে।

আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞ সেজিন ওয়ানও বিশ্বাস করেন যে, তালেবানের সামরিক অগ্রযাত্রা থামানো যাবে না। তিনি বলেন, ‘আফগানিস্তানে বিদেশী সৈন্যদের অবশ্যই তালেবানের সম্মতি নিয়েই থাকতে হবে। এবং এ জায়গাতেই তুর্কি সরকারের হাত বাঁধা।’ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে তুরস্কের সাবেক রাষ্ট্রদূত ফারুক লোগোগলু একই মতামত প্রকাশ করেছেন এবং ইদানীং এই অঞ্চলে তালেবানদের বর্ধিত আধিপত্যের প্রতি ইঙ্গিত করেছেন। তিনি বলেন, তুরস্ক যদি তালেবানদের দ্বারা সৃষ্ট ঝুঁকি উপেক্ষা করে তবে আর্থিক এবং নৈতিকভাবে উভয় ক্ষেত্রেই এর মারাত্মক পরিণতি হবে।’

আঙ্কারা তার আকাশসীমা রক্ষার জন্য রাশিয়ান এস-৪০০ প্রতিরক্ষা ক্ষেপণাস্ত্র কেনার সিদ্ধান্ত নেয়ার পর থেকে অনেক ন্যাটো অংশীদারদের সাথেও তুরস্কের সম্পর্কে সঙ্কট সৃষ্টি হয়েছে। এর ফলে যুক্তরাষ্ট্র তুরস্ককে এফ-৩৫ স্টিলথ ফাইটার জেট প্রোগ্রাম থেকে বের করে দিয়ে তুরস্কের বিমান বাহিনীতে নতুন জেট সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছিল। ওয়াশিংটন প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় তুরস্ক আর্মেনিয়ায় গণহত্যা চালিয়েছিল বলে বিবৃতি দেয়ার পর থেকে দু’দেশের সম্পর্ক আরও শীতল হয়।

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন যে, এরদোগান এখন নিষেধাজ্ঞা থেকে বের হয়ে আসা ও অন্যান্য মতবিরোধগুলো সমাধানের চেষ্টা করছেন। ইলহান উজগেল দাবি করেন, আঙ্কারা তার পশ্চিমা অংশীদারদের সন্তুষ্ট করার প্রয়াসে আফগানিস্তানে এখন ঝুঁকিপূর্ণ মিশন গ্রহণ করতেও প্রস্তুত রয়েছে। তিনি বলেন, ‘আঙ্কারা পশ্চিমে একটি বার্তা পাঠাচ্ছে যে তারা সুরক্ষার বিষয়ে আরও সহযোগিতা করতে চায়।’



 

Show all comments
  • Dadhack ১৩ জুলাই, ২০২১, ৬:৩৫ পিএম says : 0
    এরদোগান কখনোই আল্লাহর আইনের শাসন করে না তারা হচ্ছে আল্লাহর শত্রু আফগানিস্তান থেকে যদি ওরা আফগানিস্তান থেকে যদি তার Army না সরায়ে তবে আফগানিস্তানে তালেবানদের উচিত ওদের সবগুলোকে হত্যা করা. ওরা হচ্ছে আল্লাহ শত্রু Turkey উচিত ছিল তালেবানদেরকে সাহায্য করা অথচ তারা সাহায্য করছে কাফেরদেরকে
    Total Reply(0) Reply
  • Dadhack ১৩ জুলাই, ২০২১, ৬:৩৯ পিএম says : 0
    আল্লাহ বলেছে মুসলমানদেরকে কোরআন দিয়ে সারা বিশ্ব শাসন করতে যারা তালেবানদেরকে ইসলামিক উগ্রপন্থী বলে তারা মুসলিম না তারা কাফের......আল্লাহ তুরস্কের যত শূন্য আছে আফগানিস্থানে ওদেরকে তুমি হত্যা করে ফেলো
    Total Reply(0) Reply
  • Md Taz Uddin Ahmed ১৩ জুলাই, ২০২১, ৯:২০ পিএম says : 0
    তুর্কীর উচিত তালেবানকে সহ যোগ্যতা করা। কারন তারা এতটা বছর কাফেরদের বিরুদ্ধে লড়াই তরে জিতে দ্বীন প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করে যাচ্ছে। চেষ্টা করা মুমিনের কাজ লক্ষে পৌঁছানোর দ্বায়ীত্ব স্রষ্টার। তুর্কীর মনে রাখা উচিত এই আফগান হতেই একদল মুজাহিদ বের হবে যারা হযরত ঈমাম মাহদিকে সহযোগিতা করবে বলে হাদিসে ইংগিত দেয়া হয়েছে। আমি বিশ্বাস করি তুর্কী যদি তালিবানের সাথে যুদ্ধে জড়ায় তাহলে আমেরিকার এক ডিলে দুই পাখি শিকার হবে।
    Total Reply(0) Reply
  • Md Taz Uddin Ahmed ১৩ জুলাই, ২০২১, ৯:২০ পিএম says : 0
    তুর্কীর উচিত তালেবানকে সহ যোগ্যতা করা। কারন তারা এতটা বছর কাফেরদের বিরুদ্ধে লড়াই তরে জিতে দ্বীন প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করে যাচ্ছে। চেষ্টা করা মুমিনের কাজ লক্ষে পৌঁছানোর দ্বায়ীত্ব স্রষ্টার। তুর্কীর মনে রাখা উচিত এই আফগান হতেই একদল মুজাহিদ বের হবে যারা হযরত ঈমাম মাহদিকে সহযোগিতা করবে বলে হাদিসে ইংগিত দেয়া হয়েছে। আমি বিশ্বাস করি তুর্কী যদি তালিবানের সাথে যুদ্ধে জড়ায় তাহলে আমেরিকার এক ডিলে দুই পাখি শিকার হবে।
    Total Reply(0) Reply
  • md sohel rana ১৪ জুলাই, ২০২১, ১১:১৯ পিএম says : 0
    আল্লাহ সকলকেই সঠিক বুঝার তাওফিক দান করুন। আমিন
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: আফগানিস্তান-তুরস্ক


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ