পবিত্র লাইলাতুল বরাত
আজ দিবাগত রাত পবিত্র লাইলাতুল বরাত। পরম করুণাময় আল্লাহতায়ালা তার বান্দাদের গুনাহ মাফ, বিপদমুক্তি ও
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কর্মনিষ্ঠা ও দায়িত্বশীলতা কিংবদন্তিতুল্য। শত কর্মব্যস্ততার মধ্যেও তিনি তার দাফতরিক কাজ ফেলে রাখেন না, যথাসময়ে তা সম্পাদন করেন। সরকারের প্রধান নির্বাহী হিসেবে তাকে গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন বিষয়ে সিদ্ধান্ত ও নির্দেশনা দিতে হয়। এ ব্যাপারে তিনি কখনো সময়ক্ষেপণ করেন না। যেখানে যে অবস্থায় থাকুন না কেন, সিদ্ধান্ত ও নির্দেশ প্রদান করতে এতটুকু কার্পণ্য প্রদর্শন করেন না। তার দায়িত্বব্রতিতা ও কর্তব্যপরায়ণতার বহু উজ্জ্বল নজির রয়েছে। সম্প্রতি আর একটি নজির স্থাপনের খবর পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। খবরে জানা গেছে, তিনি গত শনিবার যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়া থেকে ৯টি জরুরি ফাইল অনুমোদন করেছেন। জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭১তম অধিবেশনে যোগদানের পর তিনি এখন যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন। সেখানে তিনি তার পুত্র, কন্যা ও নাতি-নাতনিদের সঙ্গে সময় কাটাচ্ছেন। এর মধ্যেও তিনি প্রতিনিয়ত দেশের খবরাখবর রাখছেন। তিনি সেখানে অবস্থানকালেই প্রয়োজনীয় ফাইল তার কাছে পাঠানোর নির্দেশ দেন তার দফতরকে। সে মোতাবেক ফাইলগুলো ই-মেইলে পাঠানো হয়। এ সব ফাইলের মধ্য ৯টিতে তিনি অনুমোদন দিয়েছেন। এখনো যুক্তরাষ্ট্রে তার কর্মব্যস্ততা কম নয়। তার মধ্যেও তিনি ফাইল অনুমোদনের কাজটি করেছেন। একজন সরকার বা রাষ্ট্রপ্রধানের তো এমনই হওয়ার কথা। রাষ্ট্র ও জনকল্যাণই তার প্রধানব্রত। রাষ্ট্র ও জনকল্যাণে দৃঢ় নীতি ও প্রতিজ্ঞাই একজন রাজনীতিককে রাষ্ট্রনায়কে পরিণত করে। শেখ হাসিনা একজন অগ্রগামী সফল রাজনীতিকই নন, সফল রাষ্ট্রনায়কও বটেন। তিনি তার সততা, দায়িত্বশীলতা, কর্মনিষ্ঠা, দক্ষতা ও যোগ্যতার গুণে রাজনীতিক থেকে রাষ্ট্রনায়ক ও জাতীয় নেতার সুউচ্চ আসনে অধিষ্ঠিত হয়েছেন। বিশ্বের প্রভাবশালী নেতাদের মধ্যেও তার নাম শীর্ষ সারিতে স্থান পেয়েছে। তার এই সুনাম, সুখ্যাতি, অবস্থান দেশ-জাতির জন্য বিরল গৌরব বয়ে এনেছে।
রাজনীতিক ও রাষ্ট্রনায়ক বা সরকার পরিচালক হিসেবেই নন, শেখ হাসিনা তার ব্যক্তিগত মহানুভবতা ও জনদরদী চারিত্র্যিক বৈশিষ্ট্যের কারণেও খ্যাতির শীর্ষে আরোহণ করেছেন। তার মানবিকতা ও মহানুভবতার অসংখ্য নজির রয়েছে। দরিদ্রজনের অর্থদান, অসুস্থ মানুষের চিকিৎসা, বিপদগ্রস্ত মানুষের সাহায্য, অসহায় মানুষে আশ্রয় প্রদান তার স্বভাব ও চরিত্রেরই অংশ। নারী, বৃদ্ধ ও শিশুর প্রতি তার বিশেষ পক্ষপাতিত্ব ও দায়বদ্ধতার কোনো তুলনাই হয় না। পুরনো ঢাকায় দুর্ঘটনায় সর্বস্ব হারানো, অসহায় কয়েকজন মেয়েকে নিজের কন্যা হিসেবে ঘোষণা, তাদের বিবাহ ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করে দেয়া শেখ হাসিনার অগণিত সুকর্মের অন্যতম। এ পর্যন্ত তিনি সমাজের বিভিন্ন স্তরের কত মানুষের যে চিকিৎসার ব্যবস্থা করে দিয়েছেন, তার ইয়ত্তা নেই। তার ভেতরে দরদী মন, শিশু মন, মাতৃ মন, সেবা ও কল্যাণদায়ী মন এতটাই সক্রিয় যে, তিনি মানুষের অভাব, দরিদ্র, কষ্ট, অসহায়ত্ব ও বিপন্নতায় বিচলিত হয়ে পড়েন। যে কোনো বয়সের মানুষই হোক না কেন, তাকে গুরুত্ব দেয়া, তার কথা শোনা এবং তার জন্য কিছু করা শেখ হাসিনার একটা বড় গুণ। কিছুদিন আগে পটুয়াখালীর এক স্কুলছাত্র পায়রা নদীতে একটি ব্রিজ তৈরির অনুরোধ জানিয়ে চিঠি লিখেছিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে। প্রধানমন্ত্রী সে চিঠির জবাব দিয়েছেন এবং প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ব্রিজ নির্মাণের। তিনি তার চিঠিতে তাকে স্নেহাশিস জানিয়ে বলেছেন, ‘তুমি শুধু এদেশের একজন সাধারণ নাগরিক নও। বরং দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম এবং দেশকে উন্নয়নের পথে এগিয়ে নেয়ার অগ্রসৈনিক। আমি জানি, পটুয়াখালী জেলার মির্জাগঞ্জ উপজেলার পায়রা নদীটি অত্যন্ত খরস্রোতা। নিজের পিতা-মাতাসহ অন্যান্য পরিবারের সদস্যদের নিয়ে এই নদীকেন্দ্রিক তোমার নিরাপত্তা সচেতনতা আমাকে মুগ্ধ করেছে। ....মির্জাগঞ্জের পায়রা নদীতে একটি সেতু নির্মাণের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে তোমাকে আশ্বস্ত করছি।’
প্রধানমন্ত্রীর গুরু দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি দেশের বৃহত্তম রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের সভানেত্রী হওয়ার কারণে শেখ হাসিনাকে আরো অনেক দায়িত্ব পালন করতে হয়। প্রায় অষ্টপ্রহরই তিনি কর্মব্যস্ত থাকেন। শোনা যায়, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তার বিশ্রামের সময় মাত্র কয়েক ঘণ্টা। এত কর্মব্যস্ততার মধ্যেও একটি শিশুর চিঠি যে তার দৃষ্টি এড়িয়ে যায়নি, চিঠি পড়ে তার জবাব দিয়েছেন, এটা একটা বিরল দৃষ্টান্ত। প্রধানমন্ত্রীর চিঠি পেয়ে সেই শিশু, তার মা-বাবা, স্কুলের শিক্ষক, ছাত্র-ছাত্রী ও এলাকাবাসীই কেবল আবেগাপ্লুত ও মুগ্ধ হয়নি, গোটা দেশের মানুষ আবেগতাড়িত ও বিমুগ্ধ হয়েছে। দেশবাসীর সঙ্গে আমরাও প্রধানমন্ত্রীকে অকুণ্ঠ ধন্যবাদ জানাই। প্রধানমন্ত্রীর মানবিক গুণাবলী, সহৃদয়তা, দেশ-জাতিঅন্তপ্রাণা চারিত্র্যিক ঐশ্বর্য উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া। বঙ্গবন্ধুও ঠিক এমনটিই ছিলেন। দুঃখজনক হলেও বলতে হচ্ছে, প্রধানমন্ত্রীর এই গুণাবলী তার সহকর্মীদের মধ্যে কমসংখ্যকেরই আছে। তার মধ্যে ব্যক্তির অভিভাবকত্বে, সান্নিধ্যে ও নৈকট্যে থেকে তারা তার মতো হতে পারেননি। এটা তাদের দুর্ভাগ্য, দেশেরও দুর্ভাগ্য। তার সহকর্মীরা সবাই যদি তাকে অনুসরণ করতেন, তাহলে কাক্সিক্ষত সোনার বাংলা অনেক আগেই হয়ে যেতো। শেখ হাসিনা দেশ-জাতির সেবার জন্য, মানবিক গুণের জন্য, সৎকর্মের জন্য নিয়তই জনগণের দোয়া পাচ্ছেন, আগামীতে পাবেন। আমরা আশা করি, তার সহকর্মীরাও তাকে অনুসরণ করবেন। তাহলে শেখ হাসিনার স্বপ্ন দেশবাসীর স্বপ্ন, দ্রুতই বাস্তবরূপ পাবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।