Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

না থেকেও ছিলেন ম্যারাডোনা

স্পোর্টস ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১২ জুলাই, ২০২১, ১২:০০ এএম

আর্জেন্টিনার খেলা হলেই তিনি ছুটে যেতেন মাঠে। দুই হাত উঁচিয়ে, বুকটা চিতিয়ে শিশুতোষ উল্লাসে ফেটে পড়তেন।শেষ পর্যন্ত হতাশায় অঞ্জলি দিয়ে মুখ ঢেকে মাঠ ছাড়তে হতো তাকে। দিনের পর দিন। টুর্নামেন্টের পর টুর্নামেন্ট। হ্যাঁ, তিনি দিয়েগো আরমান্দো ম্যারাডোনা; আর্জেন্টিনার ১৯৮৬ বিশ্বকাপের নায়ক, অনেকের চোখে যিনি সর্বকালের সেরা। বেঁচে থাকলে হয়তো মারাকানার গ্যালারিতে থাকতেন তিনি। উচ্ছ্বাস, উল্লাসে ফেটে পড়তেন উত্তরসূরিদের অর্জনে। গভীর আলিঙ্গনে বাঁধতেন মেসি-ডি মারিয়াদের।

ফুটবল বিশ্বকে কাঁদিয়ে গত ২৫ নভেম্বর কার্ডিয়াক অ্যারেস্টে না ফেরার দেশে পাড়ি জমান ম্যারাডোনা। বয়স হয়েছিল ৬০ বছর। মাঠে বসে তিনি দেখে যেতে পারলেন না লিওনেল মেসি, অ্যাঞ্জেল ডি মারিয়াদের সাফল্য, জীবদ্দশায় যেটা ছিল তার বহুকাক্সিক্ষত। কে জানে, হয়ত ওপারে বসেই তিনি উপভোগ করছেন উত্তরস‚রিদের সাফল্য! আবেগের বাঁধনহারা উল্লাসে অসীমে ছোটাছুটি করছেন, যেমনটা করতেন গ্যালারিতে।
ব্রাজিলের ঐতিহাসিক মারাকানা স্টেডিয়ামে স্বাগতিকদের কাঁদিয়ে কোপা আমেরিকার শিরোপা জেতে আর্জেন্টিনা। ২২তম মিনিটের গোলে জয়ের নায়ক ডি মারিয়া। এগিয়ে যাওয়ার পর রক্ষণ জমাট করে লিওনেল স্কালোনির দল ধরে রাখে ব্যবধান। এবারের আগে সবশেষ ১৯৯৩ সালে কোনো বড় টুর্নামেন্টের শিরোপা জেতে আর্জেন্টিনা। এরপর থেকে আর সাফল্য ধরা দিচ্ছিল না। সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ছয়টি ফাইনাল থেকে ফিরতে হয় শূন্য হাতে। ২০১৪ ব্রাজিল বিশ্বকাপে দারুণ সুযোগ কড়া নেড়েছিল দরজায়, কিন্তু ফাইনালে অতিরিক্ত সময়ে মারিও গোটসের গোলে জার্মানির কাছে হেরে স্বপ্ন ভাঙার যন্ত্রণায় পুড়তে। ১৯৯০ সালে এই জার্মানির বিপক্ষেই ফাইনালে হারের তেতো স্মৃতি আছে স্বয়ং ম্যারাডোনার।
তিনি নিজেও হাল ধরেছিলেন দলের, ২০১০ বিশ্বকাপে গিয়েছিলেন কোচ হিসেবে। কিন্তু কোয়ার্টার-ফাইনালে জার্মানির কাছে ৪-০ গোলে বিধ্বস্ত হওয়ার বিষাদ হয় সঙ্গী। ব্যর্থতা নিত্য সঙ্গী হয়ে ছিল কোপা আমেরিকায়ও। মারাকানার ফাইনালের আগে ১০ আসরে চারবার ফাইনালে উঠলেও কোনোবারই জেতা হয়নি শিরোপা। ২০০৪ ও ২০০৭ সালের ফাইনালে চিরপ্রতিদ্ব›দ্বী ব্রাজিলের কাছে হার। পরে ২০১৫ ও ২০১৬ সালের ফাইনালে টাইব্রেকারে চিলির বিপক্ষে ভরাডুবি।

বড় মঞ্চের সাফল্য খরা কাটানোর সঙ্গে দলের তারকা ফরোয়ার্ড মেসির অনেক হিসাব মেলানোর ছিল। এই শিরোপায় কড়ায় গন্ডায় হয়তো সে সব মিলবে না। কিন্তু নামের পাশে দেশের হয়ে অন্তত একটা বড় শিরোপা তো জমা হলো! ২৮ বছর পর আর্জেন্টিনাও কাটিয়ে উঠল সাফল্য খরা। গড়ল রেকর্ডও। ১৫টি শিরোপা নিয়ে কোপা আমেরিকার সর্বোচ্চ শিরোপাজয়ীর সিংহাসনে এতদিন একাই ছিল উরুগুয়ে। এবার তাদের সঙ্গী হলো আর্জেন্টিনা। এক জয়ে এত প্রাপ্তি, এত উচ্ছ্বাস-উল্লাস কেবল গ্যালারিতে বসে দেখে যেতে পারলেন না ম্যারাডোনা, তার নিবিড় আলিঙ্গন বঞ্চিত হলেন মেসি-ডি মারিয়ারাও।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ফুটবল কাপ

১৫ জুলাই, ২০২১
১৩ জুলাই, ২০২১
১৩ জুলাই, ২০২১

আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ