নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
ইতিহাস বড় নিষ্ঠুর, স্বার্থপর। সে তার অতল গর্ভে পরম মমতায় আগলে রাখে শুধু বিজয়ীদের। পরাজিতের কোনো ঠাঁই নেই সেখানে। খেলার মাঠ হোক আর রণক্ষেত্র, জয় কীভাবে এলো, তা কেউ মনে রাখে না। সব ভুলে মানুষ কুর্নিশ জানায় শুধু বিজয়ীকে।
আধুনিক এ যুগ আরও বেশি বিজয়-পূজারি। অমোঘ সত্যটা ইংল্যান্ডও জানে। এবারের আসরে তাদের সুন্দরতম যাত্রার শেষটা মধুর না হলে মানুষ একদিন ভুলে যাবে ফুটবলের আবিস্কারক দেশটি ইউরোর ফাইনালে খেলেছিল।
শেষ ভালো যার, সব ভালো তার। শেষ ভালো মানেই চূড়ান্ত সাফল্য। ফুটবলের সর্বোচ্চ শৃঙ্গে পা রেখে জগত জয়ের অবিনাশী তৃপ্তি। আজ সেই অমৃতের পেয়ালায় চুমুক দেয়ার জগত কাঁপানো লড়াই। এক মাসের লড়াই শেষে এবারের ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপের পরম আরাধ্য ফাইনাল আজ।
শেষ যুদ্ধে ইংল্যান্ডের সামনে ইতালি। ইংল্যান্ডের ওয়েম্বলিতে বাংলাদেশ সময় রাত ১টায় শিরোপা লড়াইয়ে মুখোমুখি হবে দু’দল। ১৯৬৮ সালের চ্যাম্পিয়ন ইতালির সামনে দ্বিতীয়বারের মতো শিরোপা জয়ের হাতছানি। আর ইংল্যান্ডের সামনে এগারোতম দল হিসেবে ইউরোজয়ী দেশগুলোর কাতারে নাম লেখানোর সুযোগ। এক্ষেত্রে তাদের রসদ যোগাতে পারে একটি পরিসংখ্যান, ঘরের মাঠে ১৯৬৪ সালে স্পেন, ১৯৬৮ সালে ইতালি এবং ১৯৮৪ সালে ফ্রান্স শিরোপা জিতেছিল। চতুর্থ দেশ হিসেবে ইংল্যান্ডের সামনে ঘরের মাঠে শিরোপা জেতার হাতছানি। ১৯৬৬-র পর ২০২১। বিশ্বকাপের পর ইউরো। ৫৫ বছর পর কোনো বড় ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনালে খেলবে ইংল্যান্ড। ’৬৬ বিশ্বকাপ ফাইনালে তৎকালীন পশ্চিম জার্মানিকে ৪-২ গোলে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ইংল্যান্ড। এরপর শুধুই খরা। আজ লন্ডনের ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামে ৬০ হাজার দর্শকের সামনে ইংল্যান্ড কী পারবে ৫৫ বছর আগের সুখস্মৃতি ফিরিয়ে আনতে? স্বপ্নপূরণে হ্যারি কেইনদের সামনে শেষ বাধা ইতালি। ইউরোর সেমিফাইনালে ডেনমার্কের বিপক্ষে ২-১ গোলের জয় ইংল্যান্ডকে সিঁড়ির শেষ ধাপে নিয়ে গেছে। এবার তুলির শেষ আঁচড় দেওয়ার পালা।
স্বপ্ন ও বাস্তবতার বিরোধ চিরকালের। ফুটবলের কোনো বড় আসরে ইংল্যান্ড আজ পর্যন্ত হারাতে পারেনি ইতালিকে। শেষবার ২০১৪ বিশ্বকাপে ইতালি জিতেছিল ২-১ গোলে। এর আগে চারটি টুর্নামেন্টে প্রতিবারই হেরেছে ইংল্যান্ড। ইউরো ১৯৮০ গ্রুপপর্বে ইতালি জয়ী হয় ১-০ গোলে। ১৯৯০ বিশ্বকাপের তৃতীয় স্থান নির্ধারণী প্লে-অফে ইংল্যান্ড ১-২ গোলে হারে আজ্জুরিদের কাছে। ইউরো ২০১২ কোয়ার্টার ফাইনালে টাইব্রেকারে ইতালি জেতে ৪-২ গোলে। নির্ধারিত সময়ের খেলা গোলশূন্য ড্র ছিল। ২০১৪ বিশ্বকাপের গ্রুপপর্বে ইংল্যান্ড ১-২ গোলে হার মানে একই প্রতিপক্ষের কাছে।
এবারের ইউরোতে গ্রুপপর্বের তিনটি ম্যাচের সবকয়টি জিতেছে ইতালি। একটি গোলও হজম করেনি। এ-গ্রুপে তুরস্ক, সুইজারল্যান্ড এবং ওয়েলসের বিপক্ষে যথাক্রমে ৩-০, ৩-০ ও ১-০ গোলের জয়ে শেষ ষোলোতে জায়গা করে নেয় আজ্জুরিরা। সেখানে অস্ট্রিয়াকে ২-১ এবং কোয়ার্টার ফাইনালে একই ব্যবধানে বেলজিয়ামকে হারায় রবার্তো মানচিনির দল। সেমিফাইনালে টাইব্রেকারে স্পেনকে হারিয়ে শেষ গন্তব্যে পৌঁছে ইতালি। এবার স্বপ্নপূরণ কিংবা স্বপ্নভঙ্গ। ৩৩ ম্যাচে অপরাজিত ইতালির পক্ষে যেমন পরিসংখ্যান, ইংল্যান্ডের পক্ষে তেমনি আবেগ। ফুটবলে সবসময় পরিসংখ্যানের জয় হয় না।
ইংল্যান্ড জিতলে ইউরো পাবে নতুন চ্যাম্পিয়ন। আর ইতালি জিতলে চ্যাম্পিয়নদের অভিজাত ক্লাবের সদস্য সংখ্যা দশেই আটকে থাকবে। এখন ইউরোর কাপ কোথায় যাবে, ইংল্যান্ড না ইতালিতে? তা জানতে চোখ রাখতে হবে টিভি পর্দায়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।