Inqilab Logo

রোববার ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ০২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ইন্দোনেশিয়ায় দুদিনে প্রায় দুহাজার মৃত্যু

অক্সিজেন-বেডের চরম অভাব

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৯ জুলাই, ২০২১, ৬:০০ পিএম

ইন্দোনেশিয়ায় সম্প্রতি করোনা পরিস্থিতির ভয়াবহ অবনতি ঘটেছে। গত দু’দিনে দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার এই দ্বীপদেশটিতে করোনায় মারা গেছেন ১ হাজার ৮৯২ জন, আক্রান্ত হয়েছেন ৭২ হাজার ৭৭০ জন। ইন্দোনেশিয়ার কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য বিভাগ এই তথ্য জানিয়েছে।

স্বাস্থ্য বিভাগের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ১৯ লাখ ৪ হাজার ৫৬৯ বর্গকিলোমিটারের দেশ ইন্দোনেশিয়ার সীমানাভূক্ত ১৩ হাজার ৪৬৬টি দ্বীপের প্রতিটিতেই ছড়িয়ে পড়েছে করোনা; তবে সবচেয়ে নাজুক অবস্থায় আছে দেশটির বৃহত্তম দ্বীপ জাভা, প্রধান পর্যটন দ্বীপ বালি, পাপুয়া এবং সুমাত্রা। গত দেড় বছরের মহামারি পরিস্থিতিতে এই প্রথম এত স্বল্পসময়ের মধ্যে এত বিপুলসংখ্যক আক্রান্ত ও মৃত্যুর ঘটনা ঘটল ইন্দোনেশিয়ায়।

দেশের যেসব অঞ্চলে সংক্রমণের হার বেশি কিংবা বিপজ্জনক মাত্রায় পৌঁছেছে, ইতোমধ্যে সেসব অঞ্চলকে ‘রেড জোন’ হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হচ্ছে। ইন্দোনেশিয়ার স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বর্তমানে দেশের ৪৩টি এলাকাকে রেড জোন ঘোষণা করা হয়েছে এবং এই এলাকাসমূহে জনগণের চলাচলের ওপর কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে।

ইন্দোনেশিয়ার কেন্দ্রীয় অর্থনমন্ত্রী এয়ারলাঙ্গা হারতার্তো বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘জাভায় বর্তমানে সংক্রমণের যে পরিস্থিতি, দেশের অন্যান্য এলাকায় যেন এই অবস্থা দেখা না দেয় সেজন্যই উপদ্রুত এলাকাসমূহকে রেড জোন ঘোষণা করা হয়েছে।’
এই অঞ্চলসমূহের অফিস-আদালত, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠাগুলোর মোট লোকবলের ২৫ শতাংশকে দফতরে কাজের অনুমতি দেওয়া হয়েছে, দোকান-পাট, বাজার ও রেস্তোঁরাসমূহ খোলা রাখা যাবে বিকাল ৫ টা পর্যন্ত।

এদিকে, করোনা সংক্রমণের এই সাম্প্রতিক উল্লফনে ভয়াবহ চাপের মধ্যে পড়েছে দেশটির ভঙ্গুর স্বাস্থ্যসেবা কাঠামো। জাভা, বালি, পাপুয়াসহ বিভিন্ন দ্বিপের অধিকাংশ হাসপাতালে নতুন রোগী ভর্তি করার জায়গা না থাকায় হাসপাতালে ভর্তি হতে আসা অনেক গুরুতর অসুস্থ রোগীকে ফিরিয়ে দিতে বাধ্য হচ্ছে হাসপাতালগুলো।
হাসপাতালে শয্যা সংকটের পাশাপাশি দ্বীপটিতে দিন দিন ভয়াবহ হয়ে উঠছে অক্সিজেন সংকট। বৃহস্পতিবার ইন্দোনেশিয়ার সংবাদমাধ্যমগুলোতে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, জাভা দ্বীপের ৬টি জেলায় অক্সিজেনের মজুত শেষ হয়ে গেছে।
দেশটির সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও ব্যাপকভাবে উঠে আসছে আসছে এই সংকটের চিত্র। ইন্দোনেশিয়ার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসমূহ ভরে উঠেছে অক্সিজেন ও হাসপাতালে শয্যা সংকট সম্পর্কিত বিভিন্ন পোস্টে।

হাসপাতালসমূহে অক্সিজেন সরবরাহ নিশ্চিত করতে ইতোমধ্যে রাজধানী জাকার্তায় একটি রিফিলিং স্টেশন স্থাপন করেছে দেশটির সরকার, কিন্তু স্টেশন থেকে যে পরিমাণ অক্সিজেন সরবরাহ করা হচ্ছে, বর্তমান সংক্রমণ পরিস্থিতিতে চাহিদার তুলনায় অনেক কম।
এ কারণে চলতি সপ্তাহে এক আদেশে দেশে মোট উৎপাদিত অক্সিজেনের পুরোটাই হাসপাতালে সরবরাহের নির্দেশ দিয়েছে ইন্দোনেশিয়া সরকার। কেউ অক্সিজেন গোপনে মজুত করলে তার বিরুদ্ধে কঠোর আইনী পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারিও জানানো হয়েছে।
পাশাপাশি যেসব করোনা রোগী মৃদু উপসর্গে ভুগছেন, তাদেরকে টেলিমেডিসিন সেবা দেওয়া ও হাসপাতালসমূহে আরও ৮ হাজার শয্যা সরবরাহের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে সরকারি আদেশে।

তবে দেশটির চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, বর্তমানে যে পরিস্থিতি পার করছে ইন্দোনেশিয়া, তাতে এসব উদ্যোগের যথাযথ সুফল আসার সম্ভাবনা কম; কারণ বর্তমানে দেশটির এক হাজারেরও বেশি স্বাস্থ্যকর্মী করোনা আক্রান্ত হয়ে আইসোলেশনে আছেন। সূত্র : রয়টার্স



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ইন্দোনেশিয়া


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ