Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার, ১৬ মে ২০২৪, ০২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ০৭ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

ডেনিশ রূপকথা থামিয়ে ইংলিশ হাসি

স্পোর্টস ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৯ জুলাই, ২০২১, ১২:০৪ এএম

সবকিছু রূপকথার মতোই হচ্ছিল ডেনমার্কের জন্য। ১৯৯২ সালে ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা জেতার পর প্রথমবারের মতো শেষ আটে ওঠা ডেনিশরা এবার সেমিফাইনালের টিকেটও কেটে নেয়। ফাইনালে ওঠার লড়াইয়েও দাঁতে দাঁত রেখে লড়লো তারা। তবে এবার আর ফল পক্ষে এলো না। রুদ্ধশ্বাস লড়াইয়ে তাদেরকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো ইউরোর ফাইনালে উঠলো ইংল্যান্ড।
গতপরশু রাতে লন্ডনের ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামে দ্বিতীয় সেমি-ফাইনালে ডেনমার্ককে ২-১ গোলে হারিয়েছে ইংল্যান্ড। ডেনমার্কের হয়ে গোল করেন মিকেল ড্যামসগার্ড। প্রতিপক্ষের আত্মঘাতী গোলে সমতায় ফেরা ইংল্যান্ড অতিরিক্ত সময়ে হ্যারি কেইনের গোলে উৎসবে মাতে। আগামী ১১ জুলাই লন্ডনে শিরোপার লড়াইয়ে ইতালির মুখোমুখি হবে ইংলিশরা।
যোগ্যতর দল হিসেবেই ফাইনালে উঠেছে ইংল্যান্ড। পুরো ম্যাচে অবিরত আক্রমণে ডেনমার্ককে দিশেহারা করে তুলেছিল ইংলিশরা। ১২০ মিনিটের লড়াইয়ে ৫৯ শতাংশ সময় বল নিজেদের পায়ে রাখে ইংল্যান্ড। গোলমুখে তাদের নেওয়া ২০টি শটের ১০টি ছিল লক্ষ্যে। গোলরক্ষক কাসপের স্মাইকেলের বাধায় বেশ কয়েকবার রক্ষা পাওয়া ডেনমার্ক ৬টি শট নেয়, এরমধ্যে ৩টি ছিল লক্ষ্যে।
তবে ইংল্যান্ডের সাম্প্রতিক ফুটবল ইতিহাসের সবচেয়ে বড় ও গৌরবের রাতের জৌলুস কিছুটা হলেও ফিকে করে দিল একটি বিতর্কিত সিদ্ধান্ত। ডেনমার্ক-ইংল্যান্ডের সেমিফাইনাল নির্ধারিত ৯০ মিনিটের পর অমীমাংসিত শেষ হওয়ায় অতিরিক্ত সময়ে গড়ায়।
১০৪ মিনিটে ইংল্যান্ড অধিনায়ক হ্যারি কেইন পেনাল্টি থেকে গোল করে ৫৫ বছর ফাইনালের টিকিট সুনিশ্চিত করেন। ইংল্যান্ড ম্যাচটি জিতে নেয় ২-১ গোলে। তবে এই পেনাল্টি ঘিরেই উঠেছে সমালোচনার ঝড়। ইংল্যান্ড উইঙ্গার দুরন্তভাবে পেনাল্টি বক্সে বল নিয়ে গেলে জোয়াকিম মেইলা তাকে ফাউল করায় রেফারি পেনাল্টির সিদ্ধান্ত নেন। ভিএআরও সিদ্ধান্ত বহাল রাখে।
তবে হাইলাইটসে দেখা যায় মেইলা স্টার্লিং-এর তেমন কোন সংঘর্ষ তো হয়ইনি, উল্টো তাদের সংঘর্ষের আগেই ইংল্যান্ডের উইঙ্গার নিজের ভারসাম্য হারিয়ে মাটিতে পড়ে যাচ্ছিলেন। শেষ পর্যন্ত হ্যারি কেইনের পেনাল্টি স্পট থেকে শট ক্যাসপার স্মাইকেল প্রথমবার বাঁচিয়ে দিলেও ফিরতি বল জালে জড়িয়ে দেন কেইন।
ইংল্যান্ডের এই জয়ে গোটা দেশ আনন্দে মাতলেও একাধিক বিশেষজ্ঞ থেকে সমর্থক কিছুতেই রেফারির এই সিদ্ধান্ত মেনে নিতে পারছেন না। সাবেক ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড তারকা মাইকেল সুয়ার্ট ঘটনাটিকে ‘চরম লাঞ্চনা’র আখ্যা দেন, তো কেউ কেউ আবার স্টালিংয়ের ‘ডাইভ’ নিয়ে ক্ষুব্ধ। সাড়ে পাঁচ দশক পরে এখনও পর্যন্ত ইংল্যান্ড ফুটবলের সবচেয়ে গৌরবের রাতেও তাই জয়ের উচ্ছ্বাসকে কিছুটা হলেও ফ্যাকাশে করে দিল এই বিতর্ক।
এরআগে ম্যাচ শুরুর বাঁশি বাজতেই ডেনমার্কের রক্ষণভাগে হানা দিতে শুরু করে ইংল্যান্ড। এরপর আক্রমণ-প্রতিআক্রমণে চলতে থাকে খেলা। ২৫তম মিনিটে হ্যারি কেইনের কাছ থেকে বল কেড়ে নিয়ে ইংল্যান্ডের রক্ষণভাগে হানা দেয় ডেনমার্ড। ডি-বক্সের মধ্য থেকে বাঁকানো শট নেন মিকেল ড্যামসগার্ড। কিন্তু ডেনিশ উইঙ্গারের শট একটুর জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। ২৯তম মিনিযে ডি-বক্সের একটু বাইরের ফ্রি-কিক পায় ডেনমার্ক। চোখ ধাঁধানো এক শটে ফ্রি-কিকে বল জালে জড়ান ড্যামসগার্ড।
প্রথমার্ধেই অবশ্য হতাশা কেটে যায় ইংল্যান্ডের। হ্যারি কেইনের পাস থেকে বল নিয়ে ডান প্রান্ত থেকে ডি-বক্সে ঢুকে পড়েন ইংলিশ উইঙ্গার বুকাইয়ো সাকা। বাম পাশে থাকা স্টার্লিংয়ের উদ্দেশে বল পাঠান তিনি। শুয়ে পড়ে দলকে বিপদমুক্ত করতে গিয়ে নিজেদের জালেই বল জড়িয়ে দেন ডেনমার্কের অধিনায়ক সিমোন কেজার। প্রথমার্ধ ১-১ সমতায় শেষ হয়।
এরপর একের পর এক আক্রমণ করে গেলেও দ্বিতীয়ার্ধে কোনো দলই গোল না পাওয়ায় খেলা গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। যেখানে গোল করে দলকে জয় এনে দেন ইংলিশ অধিনায়ক হ্যারি কেইন। ১০৪তম মিনিটে পেনাল্টি থেকে গোল করেন তিনি।
অবশ্য কেইনের স্পট কিক ফিরিয়ে দিয়েছিলেন পুরো ম্যাচে বেশ কয়েকবার ডেনমার্ককে বাঁচানো স্মাইকেল। কিন্তু বল ফিরিয়ে হারে রাখতে পারেননি তিনি। ফিরে আসা বলে শট নিয়ে গোল আদায় করে নেন হ্যারি কেইন। বাকি সময়ে অনেক চেষ্টা করেও গোল শোধ করতে পারেনি ডেনমার্ক। তাই ১৯৯২ সালের চ্যাম্পিয়নদের রূপকথা থেমে যায় সেমিফাইনালেই। আর ইংলিশ হাসিতেই শেষ হয় আনুষ্ঠানিকতা।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ফুটবল কাপ

১৫ জুলাই, ২০২১
১৩ জুলাই, ২০২১
১৩ জুলাই, ২০২১

আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ