Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ফরিদপুরে চিকিৎসক ও নার্সদের অবহেলায় করোনা রোগীর মৃত্যু!

জেলা পুলিশের নিকট লিখিত অভিযোগ

ফরিদপুর জেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৮ জুলাই, ২০২১, ৯:০৩ পিএম

ফরিদপুরে চিকিৎসক ও নার্সদের অবহেলায় বকুল বেগম (৫৪) নামের এক করোনা উপসর্গ রোগীর মৃত্যু হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার (৮ জুলাই) সকাল সাড়ে ১১ টায় তার মৃত্যু হয়। বকুলের বাড়ি গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরের বড়দিয়া গ্রামে। সে ওই গ্রামের হাবুল মোল্লার স্ত্রী।

নিহতের পরিবারের অভিযোগ, আজ বৃহস্পতিবার (৮ জুলাই) সকাল সাড়ে ১০ টায় রোগীকে গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর থেকে ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরী বিভাগে ভর্তি করা হয়। ভর্তি হওয়ার পর রোগীর অবস্থা বেগতিক হলে রোগীকে ওই হাসপাতালের ক‌রোনা সাস‌পেক্ট ওয়ার্ডে নিয়ে গে‌লে ওই ওয়ার্ডে কর্মরত ডাক্তার কিংবা নার্স কেউ তা‌কে রি‌সিভ বা গ্রহণ ক‌রেনি। প্রায় ১ ঘন্টা রোগীর লোকজন চেষ্টা করার পরও রোগী রি‌সিভ ক‌রেনি এমনকি অক্সিজেনের ব্যবস্থাও করা হয়নি বলে ডাক্তার ও নার্সদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে রোগীর স্বজনরা সাংবাদিকদের কাছে কান্নাজড়িত কণ্ঠে বিলাপ করেন। এই অবস্থায় উক্ত রোগী সকাল সাড়ে ১১ টায় মারা যায়। এ ঘটনায় রোগীর স্বজনরা ডাক্তার ও নার্সদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুললেও বিচার পায়নি কোথাও!

পরে, কোথাও বিচার না পেয়ে ফরিদপুর জেলা পুলিশের কাছে একটা অভিযোগ দায়ের করেন মৃত্যু রোগীর স্বজনরা। পুলিশের পক্ষ থেকে গণমাধ্যমকে জানানো হয়, এব্যাপারে তদন্ত চলছে। তাই আপাতত কিছু বলা যাচ্ছে না। এরকম শতশত অভিযোগ এখানে করোনা কিংবা অন্য চিকিৎসা নিতে আসা রোগী ও তাদের স্বজনদের। তবুও কর্তৃপক্ষ না দেখার ভান করে এড়িয়ে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত।

এ হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা হালিমা খাতুন নামের এক গৃহবধূ বলেন, এ হাসপাতালের অধিকাংশ ডাক্তার ও নার্সদের আচরণ বেশ রুক্ষ। কোনো একটা বিষয় নিয়ে অভিযোগ তুললেই আমাদের সাথে খারাপ আচরণ করেন।

হালিমার মতো একাধিক ব্যাক্তি ডাক্তার ও নার্সদের বিরুদ্ধে সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ তুলে বলেন, কার কাছে দিব বিচার? কে করবে এদের বিচার?

এছাড়াও এদিকে অভিযোগ উঠেছে, করোনা ডেডিকেটেড এ হাসপাতালের আইসিইউর ভেতরের শৌচাগারগুলোও অনেকটা ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে পড়েছ।

আইসিইউতে থাকা একাধিক রোগীর স্বজনদের অভিযোগ, আইসিইউর মতো স্পর্শকাতর স্থানে সবসময় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকার কথা ছিলো, সেখানে এতো বড় একটা নামীদামী সরকারি হাসপাতালের নোংরা ও আবর্জনার স্তূপ দেখে অবাক হচ্ছি। তারা বলেন, এখানের শৌচাগার ও মেঝেতে মাঝে মাঝেই ময়লা জমে থাকে তবুও পরিষ্কার করার বালাই নেই।

হাসপাতাল ঘুরে দেখা যায়, এ হাসপাতালের আইসিইউ ছাড়াও অন্যান্য ওয়ার্ডে চিকিৎসা নিতে আসা রোগী ও স্বজনদের ব্যবহারের শৌচাগারগুলোরও নাজুক অবস্থা।

এবিষয়ে ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডাঃ সাইফুল ইসলাম চিকিৎসা অবহেলার বিষয়টি বারবার এড়িয়ে যেয়ে বলেন, আমাদের হাসপাতালে এরকম কোনো ঘটনা ঘটেনি। এ হাসপাতালে সবসময় ডাক্তার ও নার্স নিষ্ঠার সাথে কাজ করেন। তিনি বলেন, এরকম চিকিৎসা অবহেলার ঘটনা যদি ঘটেই থাকে তবে রোগীর স্বজনরা অভিযোগ করলে বিষয়টি দেখবো বলে ফোন কেটে দেন।

এদিকে, আইসিইউ ও অন্যান্য ওয়ার্ডের শৌচাগারের বিষয়টি তার দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি এ বিষয়টিও অস্বীকার করে বলেন, আমাদের হাসপাতালের শৌচাগারগুলোর কোনো সমস্যা নেই। যদি সমস্যা থাকতো তবে রোগীর স্বজনরা নিশ্চয় তার কাছে অভিযোগ করতো বলে তিনি জানান।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ফরিদপুর

১১ নভেম্বর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ