বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
আইসিইউ সংকটের পর এখন করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসায় শয্যা সংকট দেখা দিয়েছে সিলেটে। সেই সাথে রোগীর চাপ অতিরিক্ত বাড়লেও প্রয়োজনীয় অক্সিজেন সরবরাহ না থাকায় মারাত্মক অক্সিজেন সংকটের আশংকা করছেন সংশ্লিষ্টরা। ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে উপ-পরিচালক ডা. হিমাংশু লাল রায় বলেন, জটিল করোনা রোগী বেড়ে যাওয়ায় অক্সিজেন খরচ বেশি হচ্ছে। অনেক সময় বেশি খরচ হওয়ার কারণে প্ল্যান্টগুলো নিতে পারছে না প্রেশার। সব মিলিয়ে বড় অক্সিজেন সংকটে পড়তে যাচ্ছে হয়তো সিলেট। তিনি বলেন, শামসুদ্দিনে ১০ হাজার লিটার ও ওসমানীতে ৩০ হাজার লিটারের নিজস্ব অক্সিজেন প্লান্ট থাকলেও অক্সিজেনের যোগান মিলছে না নিয়মিত। দেশের অন্যান্য জায়গায় অক্সিজেনের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় নির্ধারিত দুটি কোম্পানি নিজস্ব পরিবহনের স্বল্পতা দেখিয়ে নিয়মিত অক্সিজেন সরবরাহ করছে না। এ সমস্যা নিরসনে অক্সিজেন সংশ্লিষ্টদের একাধিকবার চিঠি দিয়েছেন বলে জানানা তিনি।
এদিকে ইতোমধ্যে করোনা রোগী বেড়ে যাওয়ায় শংকাও দেখা দিয়েছে শয্যা সংকটের। সর্বশেষ বুধবার একদিনে সিলেট বিভাগে ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার অতীতের সব রেকর্ড চাপিয়ে ৩৮৭ জনের দেহে শনাক্ত হয়েছে করোনা। বৃহস্পতিবার সিলেট বিভাগে শনাক্তের হার ৪০ দশমিক ১৪ শতাংশ। তবে গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে মাত্র ৯৬৯ টি। এমনকি এ সময়ে হাসপাতালে নতুন করে চিকিৎসা নিতে ভর্তি হয়েছেন ৩৯ জন। স্বাস্থ্য অধিদফতর সিলেট বিভাগীয় কার্যালয় সূত্র জানায়- বিভাগের এক কোটির অধিক মানুষের জন্য সকল সরকারি হাসপাতালে আইসিইউ এবং সাধারণ শয্যা মিলে শয্যা সংখ্যা মাত্র ৪৪৮টি। এর মধ্যে সিলেট বিভাগে করোনাভাইরাসের জন্য একমাত্র ডেডিকেটেড সিলেটের ডা. শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালে ১৬টি আইসিইউ বেডসহ ১০০টি, এছাড়া খাদিম শাহপরান হাসপাতালে ৩১, দক্ষিণ সুরমা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৩১, হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে ১০০, মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে ৬ টি আইসিইউ শয্যা মিলে ৫৬ টি এবং রাজনগরে হাসপাতালে ৩০ টি। তবে এসব হাসপাতালের মধ্যে কেন্দ্রীয় সেন্ট্রাল অক্সিজেন ব্যবস্থা আছে কেবল শামসুদ্দিন হাসপাতালে। সে ক্ষেত্রে বর্তমানে চাহিদার সাথে শয্যার ব্যবধান আকাশ পাতাল।
এই অবস্থায় আর মাত্র ১০ জন রোগী বাড়লেই শয্যা সংকট দেখা দিবে বলে জানিয়েছেন ডা. শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত আরএমও ডা. সৈয়দ নাফি মাহদি। তিনি বলেন, এখানে আইসিইউ এবং সাধারণ শয্যা সবগুলোতেই ভর্তি রোগী। কোন শয্যা নেই খালি। তবে প্রতিদিন আমাদের এখান যে পরিমাণ ছাত্রপত্র নিচ্ছেন, সেই পরিমাণ আবার ভর্তিও হচ্ছেন। তবে সেই সংখ্যা যদি একসাথে ১০ জন রোগী হয় তাহলে সংকট হয়ে যাবে। ভর্তি করা যাবে না এই হাসপাতালে। এমন অবস্থায় করোনা সংক্রমণের সংকটকালিন সময়েও কাজে লাগছেন না সিলেটের একমাত্র সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতাল। শুরুতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে এ হাসপাতালকে করোনা রোগীদের জন্য প্রস্তুত করার কথা থাকলেও এখন এটি আগের মতই আছে। এমনকি বাড়ানো হচ্ছে না কোন সাধারণ শয্যাও। কেবল তাই না, সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ২০০ শয্যার নতুন করোনা ডেডিকেটেড ইউনিট চালুর সংবাদ দিলেও এখন বাজেট না থাকায় তা করা সম্ভব হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন হাসপাতালে উপ-পরিচালক ডা. হিমাংশু লাল রায়।
সিলেট বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক (রোগ নিয়ন্ত্রণ) ডা. মোহাম্মদ নূরে আলম শামীমের দাবি, শামসুদ্দিন হাসপাতালে শয্যা খালি না থাকলেও এখনো কয়েকটি শয্যা খালি আছে অন্যান্য হাসপাতালে। কিন্তু যে ভাবে করোনা বাড়ছে তাতে শয্যা বাড়িয়েও কোন কাজে আসবে না, যদি না সচেতন হয় মানুষ। অপরদিকে সিলেট বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক ডা. সুলতানা রাজিয়ার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘এটা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব। তারা ব্যবস্থা নিবে।’ তবে আইসিইউ শয্যা প্রসঙ্গে ওসমানী মেডিকেল কলেজের মেডিসিন বিভাগের সাবেক বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. আ ফ ম নাজমুল বলেন, আইসিইউ চাইলেই বাড়ানো যায় না এটা সত্য। কিন্তু বিগত এক বছর থেকে অন্তত চাইলে সাধারণ শয্যাটা বাড়ানো যেতো। এমনকি গুরুত্ব বিবেচনায় সরবরাহ থাকত অক্সিজেন। কিন্তু তা না করতে পারাটা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বড় একটি ব্যর্থতা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।