বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
আগামী ২০ নভেম্বর বিএনপির সিলেট বিভাগীয় সমাবেশ। সমাবেশ কেন্দ্র করে তোড়জোড় শুরু হয়েছে সিলেটজুড়ে। প্রস্ততি চলছে স্মরণকালের বৃহৎ গণ জমায়েতের। নেতাকর্মীদের সেই টার্গেট দিয়েছেন শীর্ষ নেতৃবৃন্দ। কেন্দ্রীয় নেতাদের সরাসরি তত্ত্বাবধান ও দিকনির্দেশনায় সেই লক্ষে কাজ করছেন স্থানীয় নেতারা। বিএনপি নেতারা বলছেন, হবে এবার হবে স্মরণকালের সবচেয়ে বড় সমাবেশ। একই সাথে খুলনার সমাবেশ ঘিরে শাসক দলের বাধা আপত্তিতে সিলেট সমাবেশের সফলতা নিয়েও শংকিত তারা। তারপরও জন¯্রােত জনসমুদ্রে পরিণত করতে রয়েছে প্রত্যয়। তাদের মতে জনরোষে সব বাধা আপত্তি উৎরে যাবে। কোন বাধাই মানবে না জনগন। নেতাকর্মীরা বাধা আপত্তি মোকাবেলার কৌশল মাথায় রেখেই সমাবেশ সফলের তৎপরতা চালাচ্ছে। ইতিমধ্যে গত ১৮ অক্টোবর সিলেট বিএনপির দায়িত্বশীল নেতারা জেলা ও মহানগর যুবদলের সকল ইউনিটের নেতাদের নিয়ে প্রস্ততি সভা সম্পন্ন করেছেন। এরপর গত ১৯ অক্টোবর কেন্দ্রীয় নেতারা সিলেট বিভাগীয় বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন নেতৃবৃন্দের সাথে প্রস্তুতি সভায় করেছেন। সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী ড. আব্দুল মঈন খান। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন বিএনপির যুগ্ন মহাসচিব এডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল ্ও কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. সাখাওয়াত হাসান জীবন। পরদিন গত ২০ অক্টোবর জেলা ও মহানগর ছাত্রদলের সকল ইউনিটের দায়িত্বপ্রাপ্তদের নিয়ে হয় বিএনপির প্রস্তুতি সভা। একই দিন জেলা ও মহানগর মহিলা দলের সব ইউনিটের সাথে সভায় বসেন বিএনপি নেতারা।
বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানে বিরুদ্ধে ‘ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা’ মামলা প্রত্যাহার এবং চাল, ডাল, জ্বালানি তেল, গ্যাস, বিদ্যুৎ, সারসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে দেশের সবক’টি বিভাগীয় শহরে গণসমাবেশ করছে বিএনপি। ইতিমধ্যে গত ৮ অক্টোবর চট্টগ্রামে, ১৫ অক্টোবর ময়মনসিংহে এবং ২২ অক্টোবর খুলনায় বিভাগীয় গণসমাবেশ করেছে দলটি। আগামী ২৯ অক্টোবর রংপুরে, ৫ নভেম্বর বরিশালে, ১২ নভেম্বর ফরিদপুরের পর ২০ নভেম্বর সিলেটে হবে গণসমাবেশ। এ ছাড়া ২৬ নভেম্বর কুমিল্লায়, ৩ ডিসেম্বর রাজশাহীতে এবং ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় হবে বিএনপির গণসমাবেশ।
বিএনপি নেতারা জানান, সিলেটের গণসমাবেশের স্থান নগরীর চৌহাট্টা এলাকাস্থ ঐতিহাসিক আলিয়া মাদরাসা ময়দান। সমাবেশের অনুমতির জন্য ইতিমধ্যেই মাদরাসা কর্তৃপক্ষ ও সিলেট সিটি করপোরেশনে (সিসিক) অনুমতি চেয়েছে বিএনপি। এ ছাড়া শিগগিরই অনুমতি চেয়ে চিঠি দেবে পুলিশের কাছে দলটি।
সমাবেশকে কেন্দ্র করে গত ১৯ অক্টোবর কেন্দ্রীয় নেতারা সিলেট বিভাগের চারটি জেলার বিএনপি, ছাত্রদল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবকদল, কৃষকদল, মহিলা দলসহ সকল অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের দায়িত্বশীলদের নিয়ে বিশেষ বৈঠক করেছেন। নগরীর একটি হোটেলে অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী ড. আব্দুল মঈন খান, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব এডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা তাহসিনা রুশদীর লুনা, ড. এনামুল হক চৌধুরী ও খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. সাখাওয়াত হাসান জীবন, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক কলিম উদ্দিন আহমদ মিলন, কেন্দ্রীয় সমবায় বিষয়ক সম্পাদক জি কে গউছ, সহ-স্থানীয় সরকার বিষয়ক সম্পাদক শাম্মি আক্তার, কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আরিফুল হক চৌধুরী ও এম নাসের রহমান প্রমুখ ।
ওই বৈঠকে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ সমাবেশ সফল ও ব্যাপক জমায়েত নিশ্চিত করতে ‘সর্বাত্মকভাবে’ মাঠে কাজ করার নির্দেশ দেন। সিলেট বিভাগের প্রত্যেকটি ওয়ার্ড, পাড়া, উপজেলা ও পৌরসভায় ব্যাপক প্রচারণার সিদ্ধান্তও হয়। ওয়ার্ড, উপজেলা ও পৌরসভা পর্যায়ে প্রচারণায় দিকনির্দেশনা দিতে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে জেলার নেতাদের। অন্যদিকে জেলা ও মহানগর পর্যায়ে প্রচারণার নজর রাখবেন কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক। বিএনপির প্রত্যেকটি অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনকে নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে পৃথকভাবে প্রচারণা চালানোর।
সিলেট মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব মিফতাহ সিদ্দিকী বলেন, ‘বিভাগীয় গণসমাবেশকে ঘিরে সিলেট বিএনপিতে একের পর এক প্রস্তুতি সভা হচ্ছে, সরাসরি তত্ত্বাবধান করছেন কেন্দ্রীয় নেতারা। তিনি বলেন, ‘বিভাগের প্রত্যেকটি ওয়ার্ড, পাড়া, উপজেলা, পৌরসভায় প্রচারণা চলবে। এই গণসমাবেশ মূলত মানুষের জন্য, মানুষের দাবি দাওয়া আদায়ের জন্য। এদিকে, সমাবেশ সুষ্ঠু ও সফল করতে দায়িত্বশীল নেতাদের মধ্যে বিভিন্ন কাজ ভাগ করে গঠন করা হবে বিভিন্ন উপ-কমিটি।
সিলেট জেলা বিএনপির সাধারন সম্পাদক এডভোকেট এমরান আহমদ চৌধুরী বলেন, ‘আলিয়া মাদরাসা মাঠে গণসমাবেশ করতে মাদরাসা কর্তৃপক্ষ ও সিটি করপোরেশনের কাছে অনুমতি চেয়ে আবেদন করা হয়েছে। ‘কেন্দ্রীয় নেতারা দিকনিদের্শনা দিচ্ছেন, আমরা প্রচারণাও শুরু করেছি। লাখ লাখ মানুষের অংশ গ্রহণে সফল হবে এই গণসমাবেশ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।