নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
এক নজরে ফল
ইংল্যান্ড ৪-০ ইউক্রেন
চেক প্রজাতন্ত্র ১-২ ডেনমার্ক
জিব্রাল্টার প্রণালী যেমন আটলান্টিক মহাসাগর ও ভূমধ্যসাগরকে এক করেছে একইভাবে উত্তর সাগর ও আটলান্টিক মহাসাগরকে এক করেছে ইংলিশ চ্যানেল। এটি মূলত আটলান্টিক মহাসাগরের একটি অংশ। এর দৈর্ঘ্য প্রায় ৫৬০ কিলোমিটার এবং অবস্থানভেদে প্রস্থ সর্বোচ্চ ২৪০ কিলোমিটার থেকে সর্বনিম্ন ৩৪ কিলোমিটার। খেলার খবরে এই কঠিন পাঠ হয়তো বিরক্তির খোরাক জোগাতে পারে অনেককেই। কিন্তু গতপরশু রাতে চেক প্রজাতন্ত্রকে বিদায় করে ১৯৯২ ইউরোর স্মৃতি ফেরানোর আরও কাছে পৌঁছে গেছে ডেনমার্ক। শেষ চারে ওঠার লড়াইয়ে দাপুটে ফুটবল খেলে ২-১ গোলের জয় পেয়েছে ১৯৯২ ইউরো চ্যাম্পিয়নরা।
ইউরোয় ডেনমার্কের অগ্রযাত্রা রূপকথার গল্পকেও হার মানায়। এরিকসেন-দুর্ঘটনার পর বিদায়ের মুখ থেকে ফিনিক্স পাখির মতো জেগে উঠেছে ড্যানিশরা। এখন শিরোপা স্বপ্নও তাদের দূরের কোনো বাতিঘর নয়। মাত্র দু ধাপ দূরে তারা। কিন্তু একই রাতে আরেক ম্যাচে ইউক্রেনকে ৪-০ গোলে উড়িয়ে সেমিফাইনালে ডেনিশদের প্রতিপক্ষ ইংল্যান্ড। অধিনায়ক হ্যারি কেইনের জোড়া গোল ছাড়াও জালের দেখা পান হ্যারি মাগুইরে ও জর্ডান হেন্ডারসন। ফুটবলীয় দৃষ্টিকোণ থেকে হ্যারি কেইন, রাহিম স্টার্লিংদের এই ইংল্যান্ডকে হারানো ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দেয়ার চেয়েও বেশি কষ্টসাধ্য। ৮ জুন মুখোমুখি হবে দল দু’টি। তবে এটা যে অসম্ভব নয়, তাও ইতিমধ্যে প্রমান করেছে ডেনমার্ক।
খেলার শুরুতেই ইউক্রেনের জালে বল। তবুও একটা ভয়। ইতিহাসের না আবার পুনরাবৃত্তি ঘটে! ইউরোতে শুরুতে গোল দেওয়ার পর এর আগেও ইংল্যান্ড পাঁচ-পাঁচবার হেরেছে। কিন্তু এবার পুরোনো রেকর্ডকে ভুল প্রমাণ করল ইংল্যান্ড। হ্যারি কেনের ঝলকানিতে ইউক্রেনকে উড়িয়ে শেষ চারে ইংলিশরা।
১৯৯২-২০০৪ টানা চারটি ইউরো এবং সর্বশেষ ২০১৬ ইউরো; প্রতিবার একই ছবি। প্রথম ৫ মিনিটে গোল দিলেই হেরে যায় ইংল্যান্ড! ১৯৯২ ইউরোতে সুইডেনের বিপক্ষে প্রথম ৫ মিনিটেই গোল পেয়েও ম্যাচে হার ২-১ ব্যবধানে। ১৯৯৬ সেমিফাইনালে জার্মানির বিপক্ষেও শুরুর ৫ মিনিটেই গোল পেয়েছিল ইংলিশরা। তবু শেষমেশ টাইব্রেকে জার্মানদের কাছে হার! ২০০০ ইউরোর গ্রুপ পর্বে পর্তুগালের জালেও ইংল্যান্ড বল জড়িয়েছিল শুরুর ৫ মিনিটেই। লাভ হয়নি, শেষ পর্যন্ত হার ৩-২ গোলে। ২০০৪ ইউরোতে একই প্রতিপক্ষ পেয়েছিল তারা কোয়ার্টার ফাইনালে। সেই একই ছবি। শুরুতে এগিয়ে গিয়েও শেষ পর্যন্ত পেনাল্টি শুটআউটে পেরে ওঠেনি ইংল্যান্ড। আর গত ইউরোর শেষ ষোলোয় আইসল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম ৫ মিনিটেই গোল দিয়েও শেষ পর্যন্ত ইংলিশদের হার ১-২ ব্যবধানে।
ম্যাচের চতুর্থ মিনিটে রাহিম স্টার্লিংয়ের থ্রু বলের সহায়তায় হ্যারি কেনের গোলে এগিয়ে গিয়েছিল ইংল্যান্ড। ইউক্রেন পাল্টা-আক্রমণে গেলে ইংল্যান্ডকে হয়তো ‘পরিসংখ্যান জুজু’ চোখ রাঙাচ্ছিল! তবে প্রথমার্ধের চেয়ে দ্বিতীয়ার্ধে আরও বেশি আক্রমণাত্মক খেলে ইংল্যান্ড। ৫০ মিনিটে ইংলিশ অধিনায়ক কেন ম্যাচের দ্বিতীয় গোলটি করেন। এই গোল করে কেন ইংল্যান্ডের হয়ে বড় টুর্নামেন্টে ৯ গোল করে অ্যালান শিয়ারারকে ছুঁয়েছেন। ইংলিশ অধিনায়কের সামনে এখন শুধুই কিংবদন্তি গ্যারি লিনেকার (১০)।
এদিন ম্যাচ শেষে গ্যারেথ সাউথগেটও ছিলেন অনেক বেশি উচ্ছ¡সিত। ইংল্যান্ড কোচ বলেছেন, ‘ছেলেরা দুর্দান্ত খেলেছে। রাতেই অনেক মানুষ খুশিতে বিয়ার খাচ্ছিলেন। দুর্দান্ত জয়ের পর এমন উদ্যাপনই তো করা উচিত। জার্মানি ও ইউক্রেনকে হারিয়ে সেমিফাইনালে ওঠা দর্শকদের অনেক আনন্দ দিয়েছে। এখন ওয়েম্বলিতে সেমিফাইনালে আমাদের প্রতিপক্ষ ডেনমার্ক।’ এখনই আত্মতুষ্টিতে ভুগতে না করছেন সাউথগেট। শিরোপায় চোখ করতে বলেছেন সাউথগেট, ‘খেলা এখনো শেষ হয়নি। আমরা আরও দুই পা এগোতে চাই।’ সাবেক ইংলিশ অধিনায়ক শিয়ারারের অনুমান, এবার ইংলিশদের কিছু একটা হবে! বলেছেন, ‘এবার বিশেষ কিছু হচ্ছে। আমরা ধীরগতিতে টুর্নামেন্ট শুরু করেছি; কিন্তু প্রতি ম্যাচেই আমাদের উন্নতি হচ্ছে। মাথা শান্ত থাকতে বললেও হৃদয় তা মানছে না। সাবাস গ্যারেথ ও ইংল্যান্ড! ইতিবাচক খেলাটা ধরে রেখো।’ শেষ ষোলয় জার্মান জুজু কেটেছে, শেষ আটে কেটেছে পরিসংখ্যান জুজুও। এবার কি তবে ভিন্ন গল্প লিখতে যাচ্ছে ইংল্যান্ড? সেটা সময়ই বলে দেবে।
এদিকে, বাকুতে সেমিফাইনালে যাওয়ার আরেক লড়াইয়ে সতর্কভাবে শুরু করেছিল ডেনমার্ক ও চেক রিপাবলিক। তবে চেকরা গুছিয়ে নেওয়ার আগে ম্যাচের ৫ মিনিটেই এগিয়ে যায় ডেনমার্ক। কর্নার থেকে বল পেয়ে দারুণ এক হেডে লক্ষ্যভেদ করেন আনমার্ক টমাস ডেলেনি। এগিয়ে গিয়ে চেক রক্ষণের ওপর আক্রমণের ঝড় তোলে ডেনমার্ক। ৪২ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন কেসপার ডলবার্গ। জোয়াকিম মায়েলের দুর্দান্ত এক ক্রস থেকে নিঁখুত ফিনিশিংয়ে কাজটি সারেন তিনি। বিরতির পর দুই বদলি নামিয়ে ম্যাচের গতি বদলানোর চেষ্টা করে চেকরা। আকস্মিক কাউন্টার প্লেসিংয়ে কিছুটা কোনঠাসা হয়ে পড়ে ড্যানিশরা। তেমনই এক আক্রমণে ভ্লাদিমির কউফালের ক্রসে চেকদের হয়ে টুর্নামেন্টে নিজের পঞ্চম গোলটি করেন শিক। টুর্নামেন্টে সর্বোচ্চ গোলের তালিকায় ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোকেও ছুঁলেন এই চেক তারকা। দ্বিতীয় গোলের জন্য মরিয়া চেক এ সময় ডেনমার্কের রক্ষণে বেশ চাপ তৈরি করে। তবে হতাশা নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয় চেক প্রজাতন্ত্রকে। আর বিজয় উল্লাস ডেনিশ শিবিরে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।