নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
ইউরোর কোয়ার্টার ফাইনালে দারুণ একটি রাত উপহার পেল ফুটবলবিশ্ব। টানটান উত্তেজনা আর মুহুমুহ করতালিতে নিজ নিজ দলের সমর্থন জানাতে গ্যালারিতে উপস্থিত ছিলেন সমর্থকরা। কিন্তু ফুটবলতো কাউকে হাসায়, কাউকে কাঁদায়। একসঙ্গে সবাই হাসতেও পারেনা আবার কাঁদতেও পারেনা। যেমন প্রথম কোয়ার্টার ফাইনালে স্পেন-সুইজারল্যান্ড ম্যাচের কথাই ধরুন না। শেষ ষোলতে ফ্রান্সকে বিদায় করা দলটি স্পেনকেও বিদায় করে দেয়ার পুরো মঞ্চ প্রস্তুত করে রেখেছিল। শেষ পর্যন্ত বড় আসরের কোয়ার্টারে নার্ভকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনি তারা। তারই খেরাসত দিয়েছে দলটি। অন্যদিকে হাঁফ ছেড়ে যেন বেঁচেছে ২০১০ সালের বিশ্বকাপ জয়ীরা। খেলোয়াড়, ঐতিহ্য, পরিসংখ্যান-সব বিবেচনায় দু’টি দলের মধ্যে অনেক ফারাক থাকলেও সুইজরা বুঝিয়ে দিল-দিন যার ভালো যায় সেই জেতে। ফুটবলে ফেভারিট বলে কিছু নেই।
আরেক ম্যাচ শুরু হওয়ার কয়েকদিন আগে থেকেই তুমুল কথার লড়াই। কেউ এগিয়ে রেখেছেন ইতালিকে। আবার কারো পাল্লায় ভারী ছিল বেলজিয়াম। ২০১৮ বিশ্বকাপে বেলজিয়ামকে যে দেখেছে, সেই মুগ্ধ হয়েছে। যারা বেলজিয়ামকে পঝন্দ করেনা, তারাও বাধ্য হয়েছে দলটির খেলা দেখতে। অন্যদিকে সবশেষ চারবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ইতালি গত বিশ্বকাপের মঞ্চে সুযোগই পায়নি। অবশ্য সাম্প্রতিক সময়ে আজ্জুরিদের পারফরমেন্স ছিল চোখধাঁধানো। কিন্তু এতে অনেকেই বলেছিল, দুর্বল দলের বিপক্ষে খেলায় কিছু প্রমান হয় না। বেলজিয়ামের সঙ্গে খেললে বোঝা যাবে, দলটা আসলে কেমন। এসব যেন নীরবেই শুনে যাচ্ছিলেন ইতালিয়ানরা। অপেক্ষায় ছিলেন নিজেদের অস্তিত্বের জানান দিতে। বেলজিয়ামকে ২-১ ব্যবধানে হারিয়ে সেই জবাবটাও দিয়ে দিল তারা। ৭ জুন সেমিফাইনালে তাদের পরবর্তী হবে পরীক্ষা স্পেনের বিপক্ষে।
চোট কাটিয়ে মাঠে নেমেছিলেন ডি ব্রুইন। তাকে নিয়ে এত আলোচনার কারণটাও বুঝিয়ে দিয়েছিলেন, সামান্যের জন্য গোল পাওয়া হয়নি। তাতে অবশ্য কৃতিত্ব ইতালি গোলরক্ষকের। বক্সের কিনারা থেকে নেওয়া ডি ব্রুইনের বাঁ পায়ের অসাধারণ শট সেভ দিয়ে বেলজিয়ামকে গোলবঞ্চিত করেন জিয়ানলুইজি ডোনারুমা। এরপর আরেকবার কাউন্টার অ্যাটাকে উঠে গিয়ে ডি ব্রুইন বল লুকাকুর দিকে বল বাড়ালে বক্সের ভিতর থেকে লুকাকু বাঁ পায়ে শট নেন, সেটিও ফিরিয়ে দেন ডোনারুমা।
গোলের দেখা না পেলেও ম্যাচে উত্তেজনার কমতি ছিল না। ইতালি কোচ মানচিনি টুর্নামেন্ট শুরুর আগেই বলেছিলেন, তিনি চান তার দলের খেলা যেন মানুষ উপভোগ করে। টুর্নামেন্টের হট ফেভারিট বেলজিয়ামের সাথে প্রথমার্ধে উপভোগের সকল রসদই উপস্থিত ছিল। একের পর এক আক্রমণে চোখ সরানোর উপায় নেই। শেষমেশ ব্যবধান গড়ে দেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় উপাদান গোলও হাজির হয়ে যায় ম্যাচে। প্রথমার্ধেই দেখা মিলে তিন তিনটি গোলের। তার সবকটিই এসেছে শেষের পনেরো মিনিটে।
পুরো দ্বিতীয়ার্ধে আক্রমণের পাশাপাশি বেলজিয়ামের প্রতি-আক্রমণ দারুণভাবে সামলানো ইতালিই তাই শেষ হাসিটা হেসেছে। ম্যাচের সমাপ্তি ঘটেছে ২-১ গোলের ব্যবধানেই। দুই রবার্তোর লড়াইয়ে জয় হলো মানচিনিরই। তাতে বেলজিয়াম গেলবারের পর এবারও ইউরোতে বিদায় নিল কোয়ার্টার ফাইনাল থেকেই। গন্তব্যের বহু আগে, বেলজিয়ামের এই সোনালী প্রজন্ম সম্পর্কে তো মন্তব্য ছিল-এবার শিরোপা না হলে আর কোনওবারই না। ইতালির তেমন লক্ষ্য থাকলেও টুর্নামেন্টের আগে মানচিনি বলেননি, আমরা শিরোপা জিততে এসেছি। তবে ইতালি তাদের খেলায় তা বুঝিয়ে দিচ্ছে পরিষ্কারভাবেই। কোয়ালিফায়ার সহ ইউরোতে টানা ১৫ ম্যাচ জয়ের রেকর্ডও তারা করে ফেলেছে। টানা ১৪ ম্যাচ জেতা বেলজিয়াম যা পারেনি ইতালির কাছে হারাতে। এনিয়ে টানা ৩২ ম্যাচ অপরাজিত থাকল ইতালি।
আরেক ম্যাচে দশ জনের সুইজারল্যান্ডও স্পেনের সঙ্গে লড়ে গেছে প্রাণপণ। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। ফ্রান্সের সঙ্গে টাইব্রেকারে জিতলেও এবার আর ভাগ্য সহায় হয়নি সুইজারল্যান্ডের। ইয়োয়ান সমারকে এবার আড়াল করে দিলেন উনাই সিমন, তার বীরত্বে ২০১২ সালের পর আরও একবার ইউরোর সেমিতে চলে গেল স্পেন।
ম্যাচের ১৭ মিনিটে একটা কর্নার পেয়ে যায় স্পেন। জর্দি আলবা বক্সের বাইরে থেকে কিক করেছিলেন, সেটা ডেনিস জাকারিয়ার পায়ে লেগে দিকবদল করে ঢুকে যায় জালে। আরও একটি আত্মঘাতি গোল যোগ হলো এবারের ইউরোতে, আত্মঘাতী গোলের সংখ্যা দুই অংক ছুঁল এবার, আগের সব আসরের চেয়েও যা বেশি। ৬৮ মিনিটে সমতা ফেরতায় সুইসরা। স্পেনের রক্ষণের ভুলে বল পেয়ে যান ফর্যলার। তার পাস থেকে ঠান্ডা মাথায় ফিনিশ করে সমতা ফেরান শাকিরি।
কিন্তু সুইসদের দুর্ভাগ্য শুরু এরপর। ৭৭ মিনিটে মরেনোকে দুই পায় ট্যাকল করে লাল কার্ড দেখেন ফ্রয়লার। যদিও রিপ্লে দেখে মনে হয়েছে, ফ্রয়লারের শাস্তিটা বেশিই হয়ে গেছে। কিন্তু দশ জন নিয়েও দমে যায়নি, একের পর এক সেভ করতে থাকেন সমার। তখন মনে হচ্ছিল এই ম্যাচে টাইব্রেকারে গেলে সমার আরও একবার নায়ক হতে পারেন।
কিন্তু সেখানে আর হয়নি। অথচ শুরুর শট মিস করেছিলেন বুস্কেটস, ফিরে আসে পোস্টে লেগে। এরপর অলমো গোল দেওয়ার পর টানা দুইটি শট ঠেকিয়ে দেন সিমন। ওদিকে সমার রদ্রির শট ফিরিয়ে দিলে সমতায় থাকে সুইসরা। কিন্তু ভার্গাস আবার বারের ওপর মেরে দিলে এগিয়ে যায় স্পেন। শেষ কিকটা নিতে আসেন ওরিয়াজাব, কিন্তু মিস করেননি। চতুর্থবারের মতো ইউরোর নকআউটে টাইব্রেকারে জিতে উঠে গেল স্পেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।