Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

যে ধরনের ‘মারাত্মক ঘটনা’ ঘটে থাকতে পারে উত্তর কোরিয়ায়

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৩০ জুন, ২০২১, ৮:১৬ পিএম

উত্তর কোরিয়ার কর্তৃপক্ষ করোনাভাইরাস মহামারির শুরু থেকেই বলে আসছে যে, তাদের দেশে কেউ করোনায় সংক্রমিত হয়নি। তবে উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন কোভিড-১৯ জনিত এক "মারাত্মক সংকটের" কথা উল্লেখ করে বেশ কয়েকজন কর্মকর্তাকে এজন্য শাস্তি দেন। গত সপ্তাহেই উত্তর কোরিয়ার কর্তৃপক্ষ বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থাকে বলেছে যে, আড়াই কোটি জনসংখ্যার এই দেশটিতে তারা এখন পর্যন্ত একটিও নিশ্চিত করোনাভাইরাস কেস পায়নি- যদিও এই দাবির ব্যাপারে পর্যবেক্ষকরা বরাবরই সন্দেহ প্রকাশ করে আসছেন। -বিবিসি বাংলা

উত্তর কোরিয়ার কর্তৃপক্ষ ভাইরাস ঢোকা রোধ করতে সীমান্তও বন্ধ করে দিয়েছে, যদিও সীমান্ত বন্ধ রাখা এবং আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা- এ দুই কারণে দেশটিতে খাদ্যাভাব ও অর্থনৈতিক সংকট দেখা দিয়েছে। তবে কিম জং উন একটি অনুষ্ঠানে যেভাবে তার ভাষণে কোভিড-১৯ সংক্রান্ত একটি "গুরুতর ঘটনার" কথা উল্লেখ করেছেন তা হয়তো ইঙ্গিত দিতে পারে যে, এখন দেশটিতে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি আছে। পার্টির নেতাদের এক বিশেষ বৈঠকে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে কাজে অবহেলার অভিযোগ আনেন কিম জং উন। তিনি বলেন, "এ কারণে এক মারাত্মক ঘটনা ঘটেছে - যা জনগণ এবং দেশের নিরাপত্তার ক্ষেত্রে বিরাট হুমকির কারণ"। অন্যদিকে দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানী থেকে বিশ্লেষকরা বলছেন, দু'জন শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তা এবং বিজ্ঞান ও শিক্ষা দফতরের প্রধানকে সম্ভবত তাদের পদ থেকে নিচে নামিয়ে দেয়া হয়েছে। কারণ হিসেবে তারা বলছেন, উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় টিভিতে ওই বৈঠকের সময় তাদেরকে অন্যদের সাথে ভোট দিতে দেখা যায়নি। বিজ্ঞান বিভাগের পরিচালক ওই অনুষ্ঠানটি চলার সময়ই তার আসন ত্যাগ করেন। টিভির রিপোর্টে সেই কথিত "গুরুতর ঘটনা" সম্পর্কে আর কোন বিস্তারিত তথ্য জানানো হয়নি, অপসারিত কর্মকর্তাদের নামও জানানো হয়নি।
কিম কিছুদিন আগে তার দেশে "উদ্বেগজনক খাদ্য পরিস্থিতির" কথা স্বীকার করে নাগরিকদের উদ্দেশ্যে "এ যাবৎকালের সবচেয়ে খারাপ পরিণতির জন্য" তৈরি থাকতে বলেন - যাতে ১৯৯০-এর দশকের মারাত্মক দুর্ভিক্ষের প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে বলে মনে করা হয়। এ ছাড়া গত সপ্তাহে কিম জং উনের ওজন দৃশ্যতঃ কিছুটা কমে গেছে বলে দেখা যাবার পর রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে কিমের "শুকিয়ে যাওয়া" নিয়ে নাগরিকদের মন্তব্য প্রচারিত হয়, যা এক বিরল ঘটনা! উত্তর কোরিয়ার পক্ষত্যাগকারী একজন গবেষক আন চ্যান-ইল এএফপিকে বলেন, রিপোর্টটির অর্থ হচ্ছে - দেশটিতে সম্ভবত নিশ্চিত কোভিড কেস রয়েছে। "এছাড়া এতে একটি বার্তা দেয়া হচ্ছে যে পিয়ংইয়ং এর সম্ভবত আন্তর্জাতিক সাহায্য দরকার হয়ে পড়েছে। তা না হলে তারা এটা করতো না, কারণ এর মানে হলো তারা তাদের মহামারি-বিরোধী প্রয়াসে ব্যর্থতার কথা স্বীকার করে নিচ্ছে। সোলে ইউহা মহিলা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক ঘটনাবলীর অধ্যাপক ড. লেইফ-এরিক ইজলি বলছেন, রিপোর্টটি উত্তর কোরিয়ায় অবনতিশীল স্বাস্থ্য পরিস্থিতির ইঙ্গিত দিচ্ছে, মি. কিম সম্ভবত বলির পাঁঠা হিসেবে কর্মকর্তাদের দোষ দিয়ে তাদের অপসারণ করছেন।

এমনও হতে পারে যে এর মধ্যে দিয়ে বিদেশ থেকে টিকা গ্রহণ করার রাজনৈতিক ক্ষেত্র তৈরি করা হচ্ছে। তিনি বলেন, খাদ্য ও অর্থনৈতিক সংকট সীমান্ত বন্ধ রাখা এবং আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা - এ দুই কারণে উত্তর কোরিয়ায় অর্থনৈতিক সংকট দেখা দিয়েছে। সীমান্ত বন্ধ রাখায় দেশটির প্রধান মিত্র চীনের সাথে বাণিজ্য কমে গেছে এবং খাদ্য ও ওষুধও হয়তো আসতে পারছে না। এ কারণে ত্রাণ সংস্থাগুলো দেশটিতে খাদ্য সংকট এবং অর্থনৈতিক সংকটের হুঁশিয়ারি দিয়েছে। এমন খবরও বেরিয়েছে যে উত্তর কোরিয়ায় খাবারের দাম বেড়ে গেছে, অনাহারে লোক মারা যাচ্ছে এবং অনেক লোক খাদ্যের জন্য ভিক্ষে করছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: উত্তর কোরিয়া


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ