নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
স্পেনের বিপক্ষে সোমবার (২৮ জুন) শেষ ষোলোর ম্যাচে এগিয়ে থেকেও ক্রোয়েশিয়া দুই গোলে পিছিয়ে পড়ে। কিন্তু ঘুরে দাঁড়িয়ে ম্যাচ অতিরিক্ত সময়ে নেয় তারা। ৮ গোলের রোমাঞ্চ শেষে যদিও হেরে গেছে ক্রোটরা। ঠিক একই পথে হেঁটেছে ফ্রান্স-সুইজারল্যান্ডের ম্যাচ। সুইশরা লিড নেয়, পরে ফরাসিরা ৩-১ গোলে এগিয়ে যায়। অবিশ্বাস্য প্রত্যাবর্তনে দুই গোল শোধ দিয়ে সুইজারল্যান্ড নির্ধারিত সময়ের খেলা শেষ করে ৩-৩ ব্যবধানে। অতিরিক্ত সময়েও একই স্কোর ছিল। শেষ পর্যন্ত টাইব্রেকারে ৫-৪ গোলে ফ্রান্সকে হারিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে সুইজারল্যান্ড। আগামী ২ জুলাই সেন্ট পিটার্সবার্গে তারা শেষ আটে খেলবে স্পেনের বিপক্ষে।
বুখারেস্টের ন্যাশনাল এরেনায় দারুণ আক্রমণে শুরুতেই এগিয়ে যায় সুইজারল্যান্ড। ১৫ মিনিটে সেফেরোভিচ বক্সের বাইরে থেকে লক্ষ্যে শট নেন। প্রতিপক্ষ ডিফেন্ডারের গায়ে লেগে বল যায় জুবেরের কাছে। ততক্ষণে বক্সে ঢুকে গেছেন সেফেরোভিচ। জুবেরের মাপা ক্রসে লাফিয়ে দুর্দান্ত হেড করেন তিনি, ফরাসি গোলকিপার হুগো লরিস বল আটকাতে পারেননি। শুরুতেই লিড নিয়ে ২০০৪ সালের পর প্রথম কোয়ার্টার ফাইনালে খেলার স্বপ্ন দেখা শুরু করে সুইজারল্যান্ড।
প্রথমার্ধে ফ্রান্স কোনও সুযোগ তৈরি করতে পারেনি। কিলিয়ান এমবাপ্পে, র্যাবিওট শট নিলেও তা লক্ষ্যে ছিল না। ১-০ গোলে এগিয়ে থেকে বিরতিতে যায় সুইশরা। দ্বিতীয়ার্ধে ফিরে ব্যবধান দ্বিগুণ করার বড় সুযোগ পায় তারা। ৫২ মিনিটে ফরাসির বক্সে ঢুকেই বেঞ্জামিন পাভার্দের ফাউলের শিকার হন জুবের। সুইজারল্যান্ডের আবেদনে সাড়া দিয়ে ভিএআর যাচাই করে পেনাল্টি দেন রেফারি।
৫৫ মিনিটে পেনাল্টি কিক নিতে যান রিকার্ডো রদ্রিগেজ। বাঁ দিক দিয়ে কোনাকুনি নিচু শট নেন তিনি। বলের দিকে ঝাঁপিয়ে পড়ে দুর্বল শট এক হাতে রুখে দেন লরিস। অধিনায়কের এই বীরত্বের পর যেন গা ঝারা দিয়ে ওঠে ফ্রান্স। মাত্র ৯০ সেকেন্ডের ব্যবধানে জোড়া গোল করেন করিম বেনজেমা। ৬ বছর পর জাতীয় দলে ফিরে অবিশ্বাস্য তিনি। পর্তুগালের বিপক্ষে জোড়া গোল করা রিয়াল মাদ্রিদ ফরোয়ার্ড ৫৭ মিনিটে চোখ ধাঁধানো গোল করেন।
এমবাপ্পের ছোট পাস থেকে দারুণভাবে গোলের সুযোগ তৈরি করে কাজে লাগান বেনজেমা। পিএসজি স্ট্রাইকার বল বক্সের মধ্যে বাড়ান। কিছুটা পেছনে থাকা বল বাঁ পা দিয়ে টেনে সামনে নেন বেনজেমা, তারপর এগিয়ে গিয়ে বাঁ পায়ের শটেই লক্ষ্যভেদ। ৫৯ মিনিটে দলকে এগিয়ে দেন তিনি। আন্তোয়ান গ্রিয়েজমানের উঁচু শটে বল সুইশ গোলরক্ষক সমারের হাতে লেগে দূরের পোস্ট দিয়ে বের হওয়ার পথে ছিল, কিন্তু তার আগেই হেড করেন বেনজেমা। টানা দুই ম্যাচে জোড়া গোল করে গোল্ডেন বুট পাওয়ার দৌড়ে এগিয়ে থাকলেন তিনি।
সুইজারল্যান্ডকে দুই গোলে পেছনে ফেলে ফ্রান্স ৭৫ মিনিটে। কিছুটা জায়গা খুঁজে বের করে বক্সের বাইরে থেকে শক্তিশালী শটে স্কোর ৩-১ করেন পল পগবা।
কিন্তু ফ্রান্সকে সহজে ছেড়ে দেয়নি সুইজারল্যান্ড। ৮১ মিনিটে এমবাবুর চমৎকার ক্রস থেকে সেফেরোভিচের শক্তিশালী হেড জালে জড়ায়। আরেকটি গোলের জন্য বুক চিতিয়ে লড়াই করে গেছে ১৯৯২ সালের সেমিফাইনালিস্টরা। ফলও পেয়ে যায় হাতেনাতে। নির্ধারিত সময়ের শেষ মিনিটে তৃতীয় গোল করে ম্যাচ অতিরিক্ত সময়ে নেয় সুইশরা। গ্রানিত জাকার পাস ধরে প্রেসনেল কিম্পেম্বেকে বোকা বানিয়ে বক্সে ঢুকে ৯০ মিনিটে লরিসকে পরাস্ত করেন বদলি নামা মারিও গাভ্রানোভিচ।
অতিরিক্ত সময়ে ম্যাচ গড়াতো না, যদি যোগ করা সময়ের তৃতীয় মিনিটে কোমানের শট ক্রসবারে না লাগতো। বুক দিয়ে বল নিয়ন্ত্রণে নিয়ে দারুণ শট নিয়েছিলেন। কিন্তু গোলপোস্ট হতাশ করে তাকে।
বাড়তি ৩০ মিনিটর খেলায় শুরুতে সুযোগ তৈরি করে ফ্রান্স। ৯৫ মিনিটে পাভার্দের রকেট গতির শট ডান হাত উঁচু করে থামিয়ে দেন সুইশ গোলকিপার সমার। অতিরিক্ত সময়ের দ্বিতীয়ার্ধে দুইবার এমবাপ্পে সুযোগের সদ্ব্যবহার করতে পারেননি। ১০৯ মিনিটে কোমানের বাড়ানো বল বক্সে পেয়েছিলেন তিনি, কিন্তু ডান পায়ের বদলে বাঁ পায়ে শট নেওয়ায় ডানদিকের পোস্টের বাইরে দিয়ে লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। দুই মিনিট বাদে বাঁ দিক দিয়ে বক্সে ঢুকে শট নেন এমবাপ্পে, এবারও গোলবারের পাশ দিয়ে বল মাঠের বাইরে। ১১৯ মিনিটে জিরুদের হেড দুহাতে লুফে নিয়ে স্কোর অপরিবর্তিত রাখেন সমার। তাতে অতিরিক্ত সময়েও ফল অমীমাংসিত থাকায় টাইব্রেকারে গড়ায় ম্যাচ।
প্রথম শটে সুইজারল্যান্ডের গাভ্রানোভিচ গোল করেন। ফ্রান্সকে স্বস্তি এনে দিয়ে গোল করেন পগবাও। দ্বিতীয় শুটে সুইশদের উল্লাসে মাতান ফ্যাবিয়ান স্কার। ডানপ্রান্ত দিয়ে জালে বল জড়ান জিরুদ। মানুয়েল আকানজি ঠাণ্ডা মাথায় তৃতীয় শটে লক্ষ্যভেদ করে সুইজারল্যান্ডকে ম্যাচে রাখেন। তৃতীয় শট থেকে ফ্রান্সের হয়ে লক্ষ্যভেদ করেন থুরাম। ভারগাসের শট ডান হাত দিয়ে লরিস ঠেকালেও বল রাখতে পারেননি। কিম্পেম্বে করেন চতুর্থ গোল। মেহমেদি লরিসকে ভুল দিকে পাঠিয়ে পঞ্চম গোল করেন। শেষ শটে এমবাপ্পে মিস করেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।