Inqilab Logo

শুক্রবার, ১০ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১, ০১ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

ফরিদপুরের সিভিল সার্জনসহ হাসপাতালের ৬ ষ্টাফ করোনায় আক্রান্ত

ফরিদপুর জেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২৭ জুন, ২০২১, ৭:৫৬ পিএম

ফরিদপুরের সিভিল সার্জন মোঃ ছিদ্দীকুর রহমান সহ সদর হাসপাতালের ৬ জন ষ্টাফ করোনায় আক্রান্ত হয়ে পরছে। এতে প্রচন্ড ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পরছে সদর হাসপাতালের চিকিৎসা সেবা। এছাড়াও আজ করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন, ফরিদপুর সদর থানার গুহললক্ষীপুর এলাকার বাসিন্দা মোঃ হাফিজুর রহমান মিন্টু এবং ফরিদপুর অটো টেম্পু ও মাহেন্দ্র মালিক সমিতির নেতা মোঃ বাছের মিয়া।

সদর হাসপাতালে কয়জন করেনায় আক্রান্ত এ বিষয় জেলা সিভিল সার্জনের সাথে কথা বললে তিনি প্রতিনিধিকে জানান, আমি নিজে করোনায় আক্রান্ত হয়ে আজ ১১ দিন হোম কোয়ারেন্টাইনে বসে অফিস করছি। আরও অনেকে আক্রান্ত আছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেল সিভিল সার্জনের অফিসের প্রধান হিসাব রক্ষক কর্মকর্তা মোঃ গেলাম কিবরিয়া, সদর হাসপাতালের ক্যাশিয়ার মোঃহুমায়ন কবির, ব্লাড ব্যাংকের ষ্টাফ মোঃ ইমরান, সমীর রঞ্জন, মোহম্মদ আলী,এবং মোঃ শাহীন ও করেনায় চরম ভাবে আক্রান্ত হয়েছে বলে জানা গেল। বিষয়টি সিভিল সার্জনই নিশ্চিত করছেন।

হঠাৎ করে সদর হাসপাতালের ৬ জন ষ্টাফ করোনায় আক্রান্ত হওয়ার কারণ খুঁজলে বের হয়ে আসলো হাসপাতালের এক ভয়াবহ চিত্র।

সরেজমিন, অনুসন্ধানে দেখা গেল, সদর হাসপাতালে প্রশাসনিক ভবন এবং টিনসেট বারান্দার খোলা জায়গায় জনাকীর্ণ পরিবেশে রোগী/রোগিণী শিশু কিশোর বৃদ্ধ আবাল বনিতার করোনা পরীক্ষাগার এবং সাধারণ রোগীদের ব্লাড টানার জন্য একটা মাত্র বেড এবং একটা চেয়ার। একটি বেড একটি চেয়ার শতাধিক মানুষ সবাই এই দুটি ব্যবহার করছেন। নাই ব্লাড টানার জন্য কোন রুম। নাই ব্লাড রাখার জন্য মানসম্পন্ন ফ্রিজ। মানুষের জীবন নিয়ে খেলার করার স্থানের নাম সদর হাসপাতালের ব্লাড রাখার অর্ধেক ভাঙ্গা পুরানো ব্যবহারের অযোগ্য ফ্রিজ।
যে স্থানটিতে বসে প্রতিদিন ব্লাড ব্যাংকের স্টাফদের মৃত্যুর ঝুঁকি নিয়ে রক্ত পরীক্ষা করতে হয় তাহা গোয়াল ঘরের মত নাজুক, সংকুলান এবং অপরিছন্ন। এতে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পরছে রোগী ও হাসপাতালের স্টাফরা। কেউ দেখে না, মানুষের জীবন রক্ষাকারী ব্লাড ব্যাংকের করোনাযোদ্বাদের কষ্ট ও সমস্যা। করোনাযোদ্বারা খুবই সংকুলান জায়গায় গাদাগাদি অবস্থায় সমস্ত প্যাথলজিকাল কাজ করছে পুরো কালীন সময়টা। আজকে হাসপাতালে যারা নিয়মিত আন্তরিক হয়ে রোগীদের জরুরী সেবাটা দেন তার মধ্যে ৪ জন করোনা যোদ্বা আজ ৮/১০ দিন করোনায় আক্রান্ত। এখন তাদের জীবনই সংকটাপন্ন।

গোপন একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র দাবি করছেন জেলার সিভিল সার্জনের অবহেলার কারণে আজ ব্লাড ব্যাংকের ৪ জন করোনায় আক্রান্ত।

আউটসোর্সিং এ কাজ করেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন সেবক জানান সরকার ব্লাড ব্যাংক এবং করোনার রক্ত পরীক্ষা করার জন্য দুই তলায় কোটি টাকা ব্যয়ে দৃষ্টি ও নিচ্ছিদ্র নিরাপত্তা বলয়ের এসি রুমে অতি উন্নতমানের ব্লাড রাখা ও পরীক্ষক রুমটি বরাদ্দ ছিল। আজ সেখানে কতিপয় ডাক্তারদের অলস সময় কাটানোর জায়গা হয়েছে। আর স্টাফরা আক্রান্ত হয়েছে ভয়াবহ করোনায়।

উল্লেখিত, বিষয়ে সিভিল সার্জন জনাব, মোঃ ছিদ্দীকুর রহমানের সাথে কথা বললে তিনি প্রতিনিধিকে জানান, আসলে উল্লেখিত তথ্য সঠিক নয়। আমার হাসপাতালে ডাক্তার নাই। যা আছে তাদের জন্য ভাল রুম দরকার। তাছাড়াও এখানে শিশু ডাক্তার ও নাক কান গলার ডাক্তার বসে এই পরিবেশে ব্লাড ব্যাংকটি স্থানান্তর করাটা খুবই কষ্টসাধ্য ব্যাপার।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ফরিদপুর

১১ নভেম্বর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ