নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
বহুল আকাক্সিক্ষত এক ফাইনাল। আইসিসি আয়োজিত প্রথম বিশ^ টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা লড়াইয়ে শীর্ষ দুই দল ভারত-নিউজিল্যান্ড। করোনাকালীন গুমোট ভাব আর শঙ্কা কাটিয়ে বসেছিল রোমাঞ্চের পসরা সাজিয়ে। তবে সেই রোমাঞ্চে পানি ঢালতে বসেছিল বেরসিক বৃষ্টি। অনাহুত এই অতিথির কারণে পরিত্যাক্ত হয়ে যায় ৫ দিনের দুই দিন। তাতেও যেন চোখ রাঙানি ছিল ম্যাচটিই ভাসিয়ে নেবার। তবে সেসবকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে জয় হয়েছে ক্রিকেটের। রিজার্ভ ডেতে এসে রঙ ছড়ানো এক লড়াইয়ে ভারতের দর্পচূর্ণ করে টেস্টে বিশ^সেরার রাজদ- নিজেদের করে নিয়েছে নিউজিল্যান্ড।
ইংল্যান্ডের সাউদাম্পটনের রোজ বোলে বুধবার শেষ হওয়া ম্যাচটি ৮ উইকেটে জিতেছে কেন উইলিয়ামসনের দল। দ্বিতীয় ইনিংসে ভারতের দেয়া ১৩৯ রানের লক্ষ্য ৭.১ ওভার আগেই ২ উইকেট খুইয়ে রেমাঞ্চ জেতে নিউজিল্যান্ড! অধিনায়কোচিত ফিফটি তুলে ৫২ রানে অপরাজিত ছিলেন উইলিয়ামসন। অবিস্মরণীয় এই কীর্তির আরেক দাবীদার অভিজ্ঞ রস টেলরও ছড়ি ঘুড়িয়েছেন ভারতের বোলারদের উপর, চার মেরে দলকে জিতিয়ে মাঠ ছেড়েছেন অপরাজিত ৪৭ রান নিয়ে।
মোহাম্মদ শামির বলটা ফ্লিক করে মিড উইকেট দিয়ে বাউন্ডারিতে পাঠিয়ে উল্লাসে মাতলেন টেলর। দৌড়ে ছুটে এসে তাকে জড়িয়ে ধরলেন অধিনায়ক উইলিয়ামসন। নিউজিল্যান্ডের ড্রেসিং রুমে তখন আনন্দের ফল্গুধারা। গর্জে উঠলেন গ্যালারির কিউই সমর্থকেরাও। ভারতকে হারিয়ে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ জিতে নিল নিউজিল্যান্ড। আইসিসি টেস্ট র্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষে ওঠার পর টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপেরও চ্যাম্পিয়ন, ক্রিকেটের সবচেয়ে অভিজাত আঙিনায় প্রতিষ্ঠিত হলো কিউই শ্রেষ্ঠত্ব।
এমন উচ্ছ্বাসের কারণটাও অনুমেয়। বরাবরই ভারত টেস্টে নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব দাবী করে আসছিল। সেই দলটিকে হারানোর এমন বুনো উল্লাসতো হতেই পারে! ম্যাচও যে বদলেছে ক্ষণে ক্ষণে। দুই বছরের পথচলায় সেরা দুইয়ে জায়গা করে নেওয়ার তীব্র লড়াই, অনেক চড়াই-উৎরাই, অনিশ্চয়তা-উত্তেজনার নানা মোড় পেরিয়ে ট্রফির ফয়সালা পৌঁছে গেল ফাইনালের শেষ দিনের শেষ সেশনের শেষ ঘণ্টায়।
তাতেও যেন বার বার বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল প্রকৃতি। পুরো দুই দিন ভেসে গিয়েছিল বৃষ্টিতে। আরও দুদিনের অনেকটা সময়ও বাগড়া দিয়েছিল প্রতিকূল আবহাওয়া। রিজার্ভ ডের বাড়তি একদিনসহ মোট চার দিনে যা খেলা হলো তাতে ব্যাট বলের লড়াই হলো জম্পেশ। দারুণ কিছু পেস বোলিং, ব্যাটিংয়ে ছোট কিন্তু কার্যকর দৃঢ়তা, দেখার মতো ফিল্ডিং আর মনোবলের হলো চূড়ান্ত পরীক্ষা। তাতে জয়ী উইলিয়ামসনের দল।
গতকাল ২ উইকেটে ৬৪ রানে রিজার্ভ ডেতে খেলা শুরু করে ভারত। তবে লাঞ্চের পরই কিউই বোলিং তোপে কোহলিসহ (১৩) একে একে ফেরেন প্যাভিলিয়নে। দল গুটিয়ে যায় মাত্র ১৭০ রানে। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৪১ রান করেন ঋষভ পন্ত। নিউজিল্যান্ডের হয়ে ৪ উইকেট নেন সাউদি। ৩টি পান বোল্ট। আগের ইনিংসে ৫ উইকেট নেওয়া জেমিসনের শিকার ২টি।
প্রথম ইনিংসে ভারতের ২১৭ রানের জবাবে ২৪৯ রানে গুটিয়ে ৩২ রানের লিড পেয়েছিল নিউজিল্যান্ড। দ্বিতীয় ইনিংসে ভারতকে তারা আটকে দেয় মাত্র ১৭০ রানে। দিনের প্রায় ৫২ ওভার বাকি থাকতে পায় ১৩৯ রানের লক্ষ্য। তাতে তুলে নিতে এগিয়ে আসেন দলের অভিজ্ঞ দুই ব্যাটসম্যান উইলিয়ামসন আর টেইলর।
তবে নিউজিল্যান্ডের জেতার ভিত তৈরি করে দিয়েছিলেন তাদের চার পেসার। ম্যাচে সকলের বড় অবদান। দুই ইনিংস মিলিয়ে কাইল জেমিসন নিলেন ৭ উইকেট, টিম সাউদি ৫, ট্রেন্ট বোল্ট ৫ আর নেইল ওয়েগনার ৩ উইকেট।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
ভারত ১ম ইনিংস : ২১৭
নিউজিল্যান্ড ১ম ইনিংস : ২৪৯
ভারত ২য় ইনিংস : (আগের দিন ৬৪/২) ৭৩ ওভারে ১৭০ (পুজারা ১৫, কোহলি ১৩, রাহানে ১৫, পান্ত ৪১, জাদেজা ১৬, অশ্বিন ৭, শামি ১৩, ইশান্ত ১*, বুমরাহ ০; সাউদি ১৯-৪-৪৮-২, বোল্ট ১৫-২-৩৯-৩, জেমিসন ২৪-২-৩০-২, ওয়্যাগনার ১৫-২-৪৪-১)।
নিউজিল্যান্ড ১ম ইনিংস : (লক্ষ্য ১৩৮) ৪৫.৫ ওভারে ১৪০/২ (ল্যাথাম ৯, কনওয়ে ১৯, উইলিয়ামসন ৫২*, টেইলর ৪৭*; ইশান্ত ৬.২-০-২১-০, শামি ১০.৫-৩-৩১-০, বুমরাহ ১০.৪-২-৩৫-০, অশ্বিন ১০-৫-১৭-২, জাদেজা ৮-১-২৫-০)।
ফল : ৮ উইকেটে জিতে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের চ্যাম্পিয়ন নিউজিল্যান্ড।
ম্যান অব দ্য ফাইনাল : কাইল জেমিসন (নিউজিল্যান্ড)
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।