পবিত্র লাইলাতুল বরাত
আজ দিবাগত রাত পবিত্র লাইলাতুল বরাত। পরম করুণাময় আল্লাহতায়ালা তার বান্দাদের গুনাহ মাফ, বিপদমুক্তি ও
আমরা সবকিছু ঘটে যাওয়ার পরেই পদক্ষেপ নিই। এটা আমাদের একটা রীতিতে পরিণত হয়েছে। সামনে বিপদ অপেক্ষা করছে জেনেও আমরা অসচেতন। অল্প কিছুদিন পরেই যার খেসারত হিসেবে দিতে হয়, বহু সময়, অর্থ এবং সর্বোপরি মূল্যবান বহু জীবন। বিষয়টা ‘সময়ের এক ফোঁড় আর অসময়ের দশ ফোঁড়’ প্রবাদের শামিল। সবসময় আমাদের টনক নড়ে একটু দেরিতে। দেশে এখন করোনার দ্বিতীয় ঢেউ চলছে। বাড়ছে আক্রান্তের হার, মৃত্যুর হার, শনাক্তের হার। সেই সাথে ভিন্ন ভিন্ন ভ্যারিয়েন্ট পাওয়া যাচ্ছে। বিষয়গুলো এমনই ইঙ্গিত দিচ্ছে যে, করোনার এই ঢেউ থামাতে বেশ হিমশিম খেতে হবে। সেইসাথে সবকিছু এভাবে এলোমেলো চলতে থাকলে আগামীতে তৃতীয়, চতুর্থ ঢেউ যে আসবে না সেটার নিশ্চয়তা কী? বিশেষজ্ঞরা ভালোভাবেই বুঝতে পারছেন, এই আক্রান্তের লাগাম থামানো খুবই কঠিন হবে। পূর্ব হতে বাড়তি সচেতনতা ও নিয়মনীতির যথাযথ প্রয়োগ থাকলে দ্বিতীয় ঢেউ নিয়ে এত বেশি সংকিত বা এত বেশি আক্রান্ত হতে হতো না।
প্রশাসনের বেশ কিছু ভুল পদক্ষেপের জন্য করোনা ভাইরাস এখন রাজধানী থেকে বিভাগ, বিভাগ থেকে শহর, শহর থেকে গ্রাম এবং বিপরীতক্রমে একইভাবে আবার গ্রাম থেকে রাজধানীতে ফিরে আসছে। সবারই জানা, আমাদের দেশের জনগণ সকল নিয়ম নীতির ঊর্ধ্বে। তাদেরকে কাগজ-কলমে লিখিত নিয়ম নীতি প্রয়োগ করে আদৌ থামানো সম্ভব নয়। তাহলে নীতি নির্ধারকরা কেন কঠোর পদক্ষেপ নিতে দেরি করল সেটা আমাদের মাথায় আসে না। গেল ঈদুল ফিতরের কিছু দিন আগের কথাই ধরা যাক। করোনা ভাইরাস নিয়ন্ত্রণ রাখতে কয়েক দফার নিয়মনীতি সম্বলিত প্রজ্ঞাপন জারি করা হলো। সমস্ত মার্কেট খুলে দেওয়া হলো। এরপর আবার দেশের জনগণের আবাধে ঈদ বাজার করতে দেওয়া হলো। খুশি রাখা হলো ব্যবসায়ী মহলকে। যেখানে বিশেষজ্ঞরা বার বার সতর্ক বার্তা দিয়ে বলেছেন ‘জনস্রোত থামানো না গেলে অচিরেই বড় ধরনের খেসারত সকলকে দিতে হবে’, সেখানে তাদের কথার কোনরকম মূল্যায়ন না করে জনগণের ঈদ মার্কেট, ব্যবসায়ীদের বাণিজ্য ফুরফুরে রাখতে কর্তৃপক্ষ ব্যতিব্যস্ত ছিল। ফলাফল কী হয়েছে বা হচ্ছে আমরা সেটা এখন হাতেনাতে বুঝতে পারছি।
অন্যদিকে আসন সংখ্যা সীমিত রেখে গণপরিবহন চলাচলের প্রজ্ঞাপন জারি হলো। প্রশাসনের এই একই প্রজ্ঞাপন বেশ কয়েকবার ইতোমধ্যে জারি হয়েছে। কিন্তু ফলাফল হয়েছে ‘বজ্র আঁটুনি ফসকা গেরো’র মতো। অর্থাৎ, বাঁধন যত শক্ত হোক সেটা এড়ানো তত সহজ। কেননা, পরিবহন মালিকপক্ষ এই নিয়ম চালু হলে খুব খুশি হয়। নিয়মনীতি বা স্বাস্থ্যবিধির কোনরকমের তোয়াক্কা না করেই পরিবহন ঠিকই তার ধারণ ক্ষমতার দ্বিগুণ বা তিনগুণ যাত্রী নিয়ে চলাচল শুরু করে। স্বাভাবিকের তুলনায় অধিক ভাড়াও আদায় করে। কেননা, যাত্রীর থেকে ভাড়া আদায়ের সময় তারা কথিত সীমিত আসনের ব্যাপারে সর্বদা সোচ্চার। এ সম্পর্কিত প্রজ্ঞাপন তাদের কাছে উদাহরণ হিসেবে আছে। বিভিন্ন জাতীয় পত্রিকার প্রতিদিনকার খবরের শিরোনাম, ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার প্রতিবেদনে তেমনটায় আমরা দেখে অভ্যস্ত। মনে হয়, পরিবহন মালিকের কথা মাথায় রেখেই আমাদের প্রশাসন এই নিয়ম চালু করে। নিয়মে ‘আসন সীমিত রেখে ধারণ ক্ষমতার অর্ধেক যাত্রী নিয়ে গণপরিবহন চলাচল করবে’ কথাটা বার বার বলা হলেও একটি বারও কি কর্তৃপক্ষ এই বিষয় স্বচক্ষে পর্যবেক্ষণ করেছেন, কোথাও নিয়ম মানা হচ্ছে কিনা? কর্তৃপক্ষ যদি তদারকি করতে না পারে তাহলে এসব নিয়মনীতির প্রয়োজন নেই। কেননা, মাঝদিয়ে এগুলোতে পথচারীদের দুর্দশা বহুগুণে বাড়িয়ে দেয়। প্রসাশনের উচিৎ যাত্রীদের হয়রানি বন্ধ রেখে, যথাযথ নিয়ম মেনে পরিবহন চালানো হচ্ছে কিনা সেগুলো তদারকি করা।
বর্তমানে সীমান্তবর্তী জেলাসমূহে করোনা আক্রান্তের হার তুঙ্গে। সাতক্ষীরা, পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও, কুড়িগ্রাম, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, জয়পুরহাট সহ বেশ কয়েকটি সীমান্তবর্তী জেলা তার বাস্তব উদাহরণ। জেলাগুলো ভারতের সাথে স্থল পথে সরাসরি সংযোগ থাকায় বৈধ বা অবৈধ পথে মানুষের সীমান্ত পারাপার অহরহ চলছে। যেগুলো প্রশাসন কড়া পদক্ষেপ নিলে অচিরেই বন্ধ করা কোনো দুঃসাধ্য বিষয় ছিল না। যেখানে ভারতে চলছে করোনার চরম ভয়াবহতা সেখানে এমন পদক্ষেপ নিতে কেন দেরি করা হলো, সেটা ভাববার বিষয়। নীতি নির্ধারকদের সব সিদ্ধান্তের ভিতরে কেন জানিনা একটা ঢিলেমি ভাব আছে। দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়ার পরেই সবাই নড়েচড়ে বসে। এসকল ঘটনার পুনরাবৃতি সর্বক্ষেত্রেই লক্ষ্যনীয়। দেশে করোনার রোগী শনাক্ত হয়েছে প্রায় ১৫ মাসেরও অধিক সময়। করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে এই দীর্ঘ সময়ে নেওয়া হয়েছে নানামুখী পদক্ষেপ। কিন্তু সব পদক্ষেপের ভিতরে কাগজে-কলমে কঠোরতা থাকলেও বাস্তবে তার প্রয়োগ খুবই ক্ষীণ। ফলে করোনার সংক্রমণ থেমে গিয়ে আবারো লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়ে ওঠে। কিন্তু পূর্ব হতে যথাযথ কঠোর পদক্ষেপে এই লাফিয়ে বেড়ে ওঠার লাগাম ধরে রাখাটা খুব বেশি কঠিন বিষয় ছিল না।
আবার দেশের বিভিন্ন জেলা কঠোর লকডাউনে যাচ্ছে। ঈদের সময় দেশব্যাপী করোনার বিস্তার ছড়িয়ে এখন নতুন করে পুনঃরায় লকডাউনে যাওয়া অনেকটা ছেলেখেলা ছাড়া আর কিছুই নয়। মানুষের অবাধে চলাচল করতে দিয়ে, করোনা ভাইরাস সারাদেশে ছড়িয়ে, এরপর কেন কঠোর লকডাউনে যেতে হবে? পূর্বে হতে করোনা নিয়ন্ত্রণে সকল নিয়মনীতি কঠোরভাবে প্রয়োগ করা গেলে পরিস্থিতি অনুকূলে থাকত, সেটা আমাদের সবারই জানা। শুধু আমাদের দেশের নীতি নির্ধারকদের বোঝার ভুল। দেশের বেশিরভাগ খাতে আজ খুবই নাজুক অবস্থা। করোনার ভিতরে সব সেক্টর আজ ক্ষতির মুখে। তার মধ্যে শিক্ষা ব্যবস্থার দিকে নজর দিলে পুরোটাই হতবাক হতে হয়। দেশের সকল স্তরের শিক্ষার্থীরা দিশেহারা। সেইসাথে দিশেহারা তাদের অভিভাবকরা। করোনার ভয়াবহতা কমার কোন সম্ভবনা খুব তাড়াতাড়ি দেখা যাচ্ছে না। এমন পরিস্থিত চলতে থাকলে আগামী এক বছরেও শিক্ষা ব্যবস্থায় গতি আসবে বলে আশা করা যায় না, যেটার মস্ত বড় খেসারত জাতিকে আগামীতে দিতে হবে। শিক্ষামন্ত্রীর সাম্প্রতিক বক্তব্যে এমনটায় ইঙ্গিত পাওয়া যায়, খুব শীঘ্রই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার মতো পরিকল্পনা বা পরিস্থিতি দেশে এখনো সৃষ্টি হয়নি। কবে হবে সেই রূপরেখাও কারো জানা নেই। মধ্যদিয়ে শিক্ষার্থীদের জীবন থেকে হারিয়ে যাচ্ছে অতি মূল্যবান সময়। প্রতিযোগিতার চাকরির বাজারে দিনকে দিন তৈরি হচ্ছে হাহাকার। যেগুলো আগামীতে দেশে শিক্ষিত বেকার বহুগুণে বাড়ার ইঙ্গিত বহন করে। সেইসাথে পর্যাপ্ত কর্মসংস্থানের অভাবে দেশের কিশোর অপরাধ, চুরি, ছিনতাই বহুগুণে বাড়বে, সেটাও সহজেই অনুমেয়।
দেশের বিভিন্ন প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় তাদের অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম পুরোদমে চালু রেখেছে। প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা তুলনামূলক সচ্ছল পরিবারের হওয়ায় উক্ত কার্যক্রমে তেমন কোনো সমস্যা হচ্ছে না ঠিকই। বিপরীত পক্ষে অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে একই শিক্ষাবর্ষে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীরা পিছিয়ে যাচ্ছে। যেটা পরবর্তীতে তাদের ভিতর সকল ক্ষেত্রে একটা বৈষম্য সৃষ্টি করবে। অন্যসব ক্ষেত্রে স্বাভাবিক গতি লক্ষ করা গেলেও শিক্ষা ব্যবস্থার পুনুরুদ্ধারে তেমন কোনো আশার বাণী এখনো কেউ শুনতে পায়নি। অথচ ঘোষিত নিয়মনীতির যথাযথ প্রয়োগ থাকলে অন্য সব ব্যবস্থার মতো শিক্ষা ব্যবস্থাও সচল থাকত। সচল থাকত শিক্ষার্থীদের মস্তিষ্ক। আমরা দেশের প্রযুক্তিগত উন্নয়ন নিয়ে গর্ব করি। কিন্তু সেটা কতটা বাস্তবসম্মত সেটাও ভাববার বিষয়। স্বশরীরে পাঠদান সম্ভব না হলে অনলাইন শিক্ষার ব্যাপারটি বহু পূর্বে নীতি নির্ধারকদের গুরুত্বের সাথে ভাববার বিষয় ছিল। গ্রামাঞ্চল থেকে শুরু করে সকল পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের অনলাইন শিক্ষার আওতায় আনার জন্য যথোপযুক্ত পদক্ষেপ নেওয়া ছিল অতীব জরুরি। কিন্তু সেধরনের তৎপরতা আদৌ দেখা যাচ্ছে না।
বেশ কিছু বিষয়ে আগে হতে সুদূর প্রসারী পদক্ষেপ নিলে অনেকাংশে মহাবিপদ থেকে রক্ষা মেলে। দেশের নদী পথে লঞ্চ-স্পীডবোট দুর্ঘটনা, সড়ক পথে পরিবহন দুর্ঘটনা, আকাশ পথে বিমান দুর্ঘটনা সবক্ষেত্রেই ব্যাপক প্রাণহানি এবং ক্ষয়ক্ষতি ঘটে যাওয়ার পরেই আমাদের দেশে প্রশাসনের টনক নড়ে। ঘটনার রহস্য জানতে, প্রকৃত দোষীদের আইনের আওতায় আনতে গঠিত হয় একের অধিক তদন্ত কমিটি। সবক্ষেত্রে শুরু হয় ব্যাপক তোড়জোড়। কিন্তু প্রকৃত বাস্তবতা যদি এমনটা না হয়ে ঘটনা ঘটে যাওয়ার আগে এই তোড়জোড় বা এমন কড়াকড়ি নিয়মনীতির প্রয়োগ থাকত তাহলে মাঝ দিয়ে ওই ধরনের দুর্ঘটনাগুলো ঘটে অকালে অনেকগুলো তাজা প্রাণ ঝরে যেত না। আমরা সবাই জানি, এসব দুর্ঘটনার প্রধান কারণগুলোর মধ্যে অন্যতম অধিক যাত্রী বহন, চালকের খামখেয়ালিপনা ও চালকের যথাযথ দক্ষতার অভাব, যেগুলো তদারকি করা ওই সেক্টরের দায়িত্বরত প্রশাসনের আওতায় পড়ে। কিন্তু সেগুলো যথাসময়ে পালন না করে দুর্ঘটনা ঘটার পরবর্তীতে রহস্য উদ্ঘাটনে গঠিত হয় তদন্ত কমিটি, যে তদন্ত কমিটির প্রকৃত তদন্ত প্রতিবেদন পেতে পেরিয়ে যায় বছরের পর বছর। কোন কোন ক্ষেত্রে আদৌ দেওয়া হয় কিনা সেটার খোঁজ আমরা কেউ রাখি না। কেননা, ততদিনে আমরা পুরো ঘটনা ভুলতে বসি। অন্যদিকে মাঝ দিয়ে ঠিকই সর্বক্ষেত্রে আবার সেই আগের মতো মহড়া চলতে থাকে। এই তদন্ত কমিটি করে কি আদৌ কোন সুফল দেশ বা জনগণ পেয়েছে কিনা আমাদের জানা নেই। নাকি প্রকৃত ঘটনা চাপা দিতেই গঠিত হয় এটা, তা নিয়েও আছে অনেকের মনে সংশয়।
আমাদের দেশের একই ঘটনার পুনরাবৃতি ঘটে শিল্পকারখানা, মার্কেট, রাসায়নিক দ্রব্যাদির গুদামসহ অন্যান্য ভবনে কোন দুর্ঘটনায় ব্যাপক প্রাণহানি এবং ক্ষয়ক্ষতির পরে। কিন্তু যদি সামান্য সচেতনতা বা নিয়ম মাফিক তদন্ত যেমন, শিল্পকারখানা, মার্কেটগুলোতে যাবতীয় অগ্নি নির্বাপক ব্যবস্থা, আপদকালীন সময়ের সঠিক ব্যবস্থাপনা, জীবন রক্ষাকারী সরঞ্জামাদি পূর্ব হতে আছে কিনা নিয়মিতভাবে সেটা খুটিয়ে দেখা হতো তাহলে এধরনের দুর্ঘটনা আদৌ ঘটত না। প্রাণহানির পরেই বের হয়ে আসে, সেখানে প্রয়োজনীয় সুরক্ষা সরঞ্জামাদি ছিল না। লঞ্চ বা স্পীডবোটে প্রয়োজনীয় লাইফ জ্যাকেট ছিল না। ধারণ ক্ষমতার অধিক যাত্রী ছিল। এগুলো দেখার দায়িত্ব ছিল সেখানে দায়িত্বরত প্রশাসনের। তারা তাদের দায়িত্বে অটল ছিল না বলেই অহরহ এসব দুর্ঘটনা ঘটে। আমাদের প্রশাসনের এসব বিষয়গুলো এখন অনেকটা সয়ে গেছে। কেননা, দেশের প্রেক্ষাপটে সাধারণ জনগণের জীবন অনেকটাই মূল্যহীন। তাই এগুলোতে তেমন কারো কিছু যায় আসে না। যেটা আদৌ কাম্য নয়।
যেকোন কাজে সুদূর প্রসারী পরিকল্পনা নিয়েই এগুনো বুদ্ধিমানের কাজ। আমাদের দেশের নীতি নির্ধারকদের প্রতি বিষয়গুলো গুরুত্বের সাথে ভেবে দেখার অনুরোধ রইল। তাহলে অনেক বড় বড় ভুলের খেসারত দেওয়া লাগবে না। করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় গৃহীত পদক্ষেপগুলো তার মধ্যে অন্যতম। বারবার এসব ভুল এবং স্বল্পমেয়াদী সিদ্ধান্ত আগামীর জন্য বড় ধরনের ক্ষতি বয়ে আনে, সেটা আমরা বার বার দেখে অভ্যস্ত। ক্ষুদ্র মহলের স্বার্থ রক্ষার্থে অনেক ঠুনকো সিদ্ধান্তে জানমালের নিরাপত্তা হুমকির সম্মুখীন হয়। দেশের প্রতিটা বিভাগে প্রতিদিনের পাওয়া তথ্য অতি দ্রুত করোনার সংক্রমণ বেড়ে চলেছে সেটা দেখেই পরিস্থিতি কোন দিকে মোড় নিচ্ছে আমাদের বুঝতে বাকি থাকার কথা নয়। আমাদের পরিস্থিতি যে ভারতের মতো হবে না, সেটার নিশ্চয়তা কেউ দিতে পারছে না। সরকারি হিসাব অনুযায়ী, যে হারে সংক্রমণ, শনাক্তের হার, মৃত্যুর হার বাড়ছে তাতে অদূর ভবিষ্যতে আমাদের ভুলের বড় ধরনের খেসারত দিতে হতে পারে।
ধনী গরীব, ছোট বড় সকলের জীবনের মূল্য সমান। যাদের পরিবারের কেউ চলে যায়, কেবল তারাই বোঝে প্রিয়জন হারানোর বেদনা। সকল মানুষের জীবনের মূল্য বুঝে সব কিছুতে সুদূরপ্রসারী উদ্যোগ নিলে অনেক অংশে সুফল বয়ে আনবে। পরিশেষে বলতে চাই, দেরি হয়ে গেছে তবুও এখনি করোনার লাগাম টেনে ধরতে না পারলে দেশের সর্বত্র ছড়িয়ে পড়া এই ভাইরাস অনেক বেশি ক্ষতি করবে। কাগজে-কলমে নিয়ম নীতির পরিবর্তে কঠোর হয়ে এর লাগাম টেনে ধরাই হবে বুদ্ধির পরিচয়।
লেখক: গবেষক, ফুজিয়ান এগ্রিকালচার এন্ড ফরেস্ট্রি ইউনিভার্সিটি, ফুজো, ফুজিয়ান, চীন।
[email protected]
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।