Inqilab Logo

শুক্রবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বিনয়ী ব্যক্তির ইজ্জত সম্মান বৃদ্ধি করেন আল্লাহ জুমার খুৎবাপূর্ব বয়ান

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৮ জুন, ২০২১, ৪:০৩ পিএম

বিনয়ী হওয়া একটি মহৎ গুণ। যা মানুষের জীবনে শোভা-সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে এবং তাকে আল্লাহর কাছে প্রিয়ভাজন বানিয়ে দেয়। যে ব্যক্তি আল্লাহর জন্যে বিনয়ী হয় আল্লাহ তার ইজ্জত সম্মান বৃদ্ধি করে দেন। বিনয়ী ব্যক্তিরা মহান আল্লাহ’র বন্ধু। আজ জুমার খুৎবাপূর্ব বয়ানে পেশ ইমাম এসব কথা বলেন। যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে বিভিন্ন মসজিদে প্রচুর মুসল্লির সমাগম ঘটে।
বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের পেশ ইমাম মুফতি এহসানুল হক জিলানী আজ জুমার খুৎবাপূর্বে মুসল্লিদের উদ্দেশ্যে বলেন, বিনয়ী হওয়া একটি মহৎ গুণ। যা মানুষের জীবনে শোভা-সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে এবং তাকে আল্লাহর কাছে প্রিয়ভাজন বানিয়ে দেয়। হাদীস শরীফে রাসুলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন " যে ব্যক্তি আল্লাহর জন্যে বিনয়ী হয় আল্লাহ তার ইজ্জত সম্মান বৃদ্ধি করে দেন”। বিনয়ের মাধ্যমে সহজে অন্যের সঙ্গে সৌহার্দ্য ও ভালোবাসার বন্ধন তৈরি করা যায়। পবিত্র কোরআনুল কারীমে বিনয়ীদের আল্লাহর বন্ধু বলা হয়েছে, "তোমাদের বন্ধু তো আল্লাহ, তার রাসুল ও মুমিনগণ, যারা বিনয়ী হয়ে নামাজ কায়েম করে ও যাকাত আদায় করে "। পেশ ইমাম বলেন, যারা আল্লাহর প্রকৃত প্রিয় বান্দা, তাদের বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করে আল্লাহ তা'য়ালা ইরশাদ করেন‘‘দয়াময় আল্লাহর বান্দা তো তারাই, যারা পৃথিবীতে ন¤্রভাবে চলাফেরা করে"। বিনয় ও ন¤্রতার আদেশ দিয়ে আল্লাহ অন্য আয়াতে ইরশাদ করেন "ভূপৃষ্ঠে দম্ভভরে বিচরণ করো না, পদভারে তুমি তো কখনোই ভূপৃষ্ঠ বিদীর্ণ করতে পারবে না এবং উচ্চতায় তুমি কখনোই পর্বতসম হতে পারবে না"। নবীজী (সা.) এর ব্যবহার-আচরণ ছিল বিনয় ও ন¤্রতার প্রকৃষ্ট উদাহরণ। হাদিসে এসেছে, "তিনি ছিলেন সুবিশাল হৃদয়ের মহানুভব। সত্যবাদিতায় সর্বাগ্রে, ন¤্রতা আর কোমলতায় অনন্য, আচার-আচরণে অভিজাত। যে প্রথম তাকে দেখতো, ভয় করতো। কিন্তু যে-ই তার সঙ্গে মিশতো, তাকে ভালোবাসতে শুরু করতো"। পবিত্র কোরআনুল কারীমে আল্লাহ তায়া'লা তাঁর রাসুলের বিনয় ও ন¤্রতার ব্যাপারে ইরশাদ করেন " আল্লাহর অনুগ্রহে আপনি তাদের প্রতি কোমলহৃদয় হয়েছিলেন। আপনি যদি রূঢ় ও কঠোরচিত্ত হতেন, তবে তারা আপনার কাছ থেকে সরে পড়তো "। অতএব আল্লাহর প্রকৃত বান্দা হতে চাইলে অহংকার বর্জন করে বিনয়ী গুণ অর্জন করা আবশ্যক। আল্লাহ তায়া'লা সবাইকে তৌফিক দান করুন। আমীন!

দিনাজপুর গোর-এ-শহীদ কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ খতিব মাওলানা রেজাউল করিম আজ জুমার বয়ানে বলেন, ইসলাম আমাদেরকে কেবল ইবাদতের পথই দেখায় না বরং আমাদের জীবনের প্রতিটি বিষয়ে পথ প্রদর্শন করে। তন্মধ্যে স্বাস্থ্যের প্রতি যতœবান হওয়া অত্যাবশ্যকীয়। কেননা সুস্বাস্থ্য ইবাদত করার জন্য বিশেষ উপযোগী। অসুস্থতাও আল্লাহ দেন। সুস্থতাও আল্লাহ তা'য়ালা দান করেন। আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন, যিনি আমাকে সৃষ্টি করেছেন, অতঃপর তিনি আমাকে পথ প্রদর্শন করেন। তিনি আমাকে আহার ও পানীয় দান করেন। আর যখন আমি রোগাক্রান্ত হই তখন তিনি আমাকে রোগ মুক্তি দান করেন। " সূরা শুআ’রা আয়াত নং ৭৯ /৮০। আবু দাউদ শরীফে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে আল্লাহ তায়ালা রোগও বানিয়েছেন এবং প্রত্যেক রোগের জন্য ঔষধের ব্যবস্থা করেছেন। রাসুল (সা.) বলেন, প্রতি মাসে তিন দিন সকালে যে ব্যক্তি মধু পান করবে তাকে কোন কঠিন ব্যধি আক্রমণ করবে না। ইসলাম মেসওয়াক করা কুলি করা নাকে পানি দেয়া নাপাকি দূর করা অপবিত্র হতে গোসল করার আদেশ দিয়েছেন। রোগ ব্যাধি ও রোগ সংক্রমণ হতে রক্ষা পাওয়াই এসব বিধি-বিধানের মূল উদ্দেশ্য। খাবার পূর্বে এবং পরে ভালো করে দুই হাত কব্জি পর্যন্ত ধৌত করা। পানি পান করার সময় পানিতে শ্বাস ফেলবে না এটাই ইসলামের বিধান। আল্লাহ সবাইকে স্বাস্থ্য সর্ম্পকে যতœবান হওয়ার তৌফিক দান করুন। আমীন!
ঢাকার মিরপুরের বাইতুল আমান কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের খতিব মুফতি আবদুল্লাহ ফিরোজী জুমার খুৎবা পূর্ব বয়ানে বলেন, গোটা দুনিয়ায় আজ নৈতিক অবক্ষয়ের মহোৎসব চলছে। অধঃপতন ঘটছে যুব সমাজের। পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্র কোথাও আজ নৈতিকতার বালাই নেই। বিশ্বব্যাপী এ অবক্ষয়ের হাত থেকে মুক্ত হতে হলে আমাদেরকে রাসুল (সা.) এর আদর্শের দিকে অবশ্যই ফিরে আসতে হবে। কেননা মহানবী (সা.) এর উত্তম আদর্শ বাস্তবায়ন ছাড়া সর্বগ্রাসী নৈতিক অবক্ষয় ও চারিত্রিক ধ্বংস থেকে মানুষের মুক্তির কোন পথ নেই। নৈতিক মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠার জন্য সবাইকে ধর্মীয় শিক্ষা দিতে হবে। কারণ ইসলামের আদর্শ ও মূল্যবোধ থেকে বিচ্যুতির কারণেই কিশোর, তরুণ ও যুব সমাজ নৈতিক অবক্ষয়ের চোরাবালিতে হারিয়ে যাচ্ছে। নবীজী (সা.) বলেন, প্রত্যেক মুমিন নর-নারীর উপর ধর্মীয় জ্ঞানার্জন ফরজ।
তিনি আরও বলেন, জনমনে আল্লাহ তায়ালা ও পরকালের ভয় সৃষ্টি করতে হবে। এজন্য তরুণ প্রজন্মকে তাকওয়ার প্রশিক্ষণ দিয়ে তাদের মধ্যে নৈতিক মূল্যবোধকে জাগ্রত করতে হবে। পরিবারের সবাইকে নামাজি হিসেবে অভ্যস্ত করে তোলা অবিভাবকদের দায়িত্ব। তাই তাদেরকে নামাজের প্রশিক্ষণ দিতে হবে। কারণ নামাজ সব অনাচার ও অশ্লীলতা থেকে বাঁচাতে পারে। আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘তুমি তোমার পরিবারের লোকদেরকে নামাজের আদেশ দাও এবং নিজেও এর ওপর অবিচল থাক।’ (সুরা তাহা : ১৩২)। অন্যত্র ইরশাদ করেন, ‘নামাজ কায়েম কর। অবশ্যই নামাজ অশ্লীল ও অন্যায় কাজ থেকে বিরত রাখে।’ (সুরা আনকাবুত : ৪৫)।
খতিব বলেন, অশ্লীলতা থেকে দূরে থাকতে হবে। কারণ অশালীন বেশভূষা, অশ্লীল দৃশ্য দেখা, ও যেনা-ব্যভিচার ইসলাম কঠোরভাবে নিষিদ্ধ করেছে। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘তোমরা ব্যভিচারের কাছেও যেও না। এটা অশ্লীল ও নিকৃষ্ট আচরণ।’ (সুরা বনি ইসরাইল : ৩২)। মহান আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে আমল করার তৌফিক দান করুন। আমীন!



 

Show all comments
  • Ahmed hossain khan ১৮ জুন, ২০২১, ৪:৪১ পিএম says : 0
    Ai boyan gulo patkori onek kiso siklam.donnobad prio potrika inqilab k (.aklakun nobi ) ba nobi choritro amader jante hoibe. Are binoyeeder jonno Alla subhanahu (obbassiril mukhbiteen. Susonmbad binoyeeder jonno) Allah amaderke binoyee hoer taufiqe dan korun ameen.
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: জুমা

১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ