পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বাগেরহাটে সংবাদ সম্মেলন, রংপুরে মানববন্ধন-সমাবেশ
রাজধানীর গাবতলী এলাকা থেকে গত ১০ জুন তিন সঙ্গীসহ নিখোঁজ হন আলোচিত ইসলামী বক্তা আবু ত্ব-হা মুহাম্মদ আদনান। কিন্তু নিখোঁজের এক সপ্তাহ পার হলেও তাদের কারোরই কোন হদিস নেই। তবে কীভাবে বা কোন কারণে তিনি নিখোঁজ হয়েছেন এ বিষয়ে কোনো তথ্য নেই আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে। আবু ত্ব-হার স্ত্রী ও মায়ের অভিযোগের ভিত্তিতে তাকে খুঁজে বের করতে এরইমধ্যে মাঠে নেমেছে পুলিশসহ বিভিন্ন সংস্থা। বেশ কিছু নির্দিষ্ট পয়েন্টকে সামনে রেখে আবু ত্ব-হাকে উদ্ধারের জন্য তারা কাজ করে যাচ্ছেন। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলে এমন তথ্য জানা গেছে।
এ দিকে আবু ত্ব-হাসহ চারজনের কোনো সন্ধান না পাওয়ায় শহরে-গ্রামে, হাটে-বন্দরে, পাড়া-মহল্লায়, দোকানে-বাড়িতে, চায়ের টেবিলে, টেলিভিশন চ্যানেল এবং পত্রপত্রিকায় আলোচনার ইস্যু এখন নিখোঁজের খবর। তার সন্ধান দাবি করে দেশের বিভিন্ন স্থানে কয়েক দিন ধরে মানববন্ধন সমাবেশও অনুষ্ঠিত হচ্ছে। যদিও আদনানদের খোঁজে প্রশাসন কাজ করছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
নিখোঁজ চার জনের সন্ধান চেয়ে লাখো মানুষ সক্রিয় রয়েছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রতিনিয়ত সাধারণ মানুষ অধীর আগ্রহে আশা করছেন, যে বা যারাই আবু ত্ব-হা মুহাম্মদ আদনানকে নিয়ে গেছে দ্রæত আইন-শৃঙ্খালা বাহিনী খোঁজে বের করবে। এছাড়া স্বামীকে ফিরে পেতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে আকুতি জানিয়ে স্ত্রী সাবিকুন্নাহার আরও বলেন, ত্ব-হা কোনো দলের সঙ্গে যুক্ত নন। তিনি না আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও কওমি, না আহলে হাদিস। সাধারণ একজন মানুষ।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার বলেছেন, নিখোঁজ ইসলামী বক্তা আবু ত্ব-হা মুহাম্মদ আদনানসহ চারজনকে উদ্ধারে অন্যান্য সংস্থার সঙ্গে কাজ করছে ডিবি। এ বিষয়ে একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) হয়েছে রংপুরে। রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের সঙ্গে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশও কাজ করছে।
আবু ত্ব-হাসহ ঢাকা থেকে চারজন ‘নিখোঁজ’। এ বিষয়ে ডিবি কী পদক্ষেপ নিচ্ছে? এমন প্রশ্নের জবাবে এ কে এম হাফিজ আক্তার বলেন, চারজন ব্যক্তির খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না, এটা আমরা জেনেছি। আমরা বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে কাজ করছি। একই সঙ্গে কয়েকটি ঘটনা, একটু সময় লাগতে পারে।
আদনানের বোন রিতিকা রুবাইয়াত ইসলাম বলেন, আমার ভাইয়াকে দুজন মানুষ মোটরসাইকেলে করে কয়েক দিন ধরে ফলো করছিল। বিষয়টি ভাইয়া আমাদের জানিয়েছিলেন এবং ঢাকায় গেলে তিনি সেভ থাকবেন বলে জানান। পরে মায়ের সম্মতি নিয়ে ঢাকায় যাওয়ার পথে নিখোঁজ হওয়ার ঘটনাটি ঘটে।
বাগেরহাটে সংবাদ সম্মেলন : গতকাল বৃহস্পতিবার বাগেরহাট প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সচেতন আলেম সমাজের ব্যানারে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন হাফেজ মাওলানা শেখ মহিউদ্দিন মাহদী বিল্লাহ। এ সময় মাওলানা মাহমুদুল হাসান, মাওলানা ইমলার হোসাইন, হাফেজ মাসুম বিল্লাহ উপস্থিত ছিলেন।
লিখিত বক্তব্যে তারা বলেন, ইসলামী বক্তা আদনান নিখোঁজের এক সপ্তাহ পার হয়েছে। নিজ বাড়ি রংপুর থেকে ঢাকা রওনা দেয়ার পরে আর ফেরেননি তিনি। ত্ব-হা মো. আদনান একা ছিলেন না, সঙ্গে তার গাড়ি চালক ও দুইজন সফরসঙ্গী ছিলেন। চারজন মানুষ এভাবে নিখোঁজ হলো, এ দায় কোনোভাবেই রাষ্ট্র এড়াতে পারে না। আমরা অনতিবিলম্বে ত্ব-হা মো. আদনানসহ নিখোঁজদের সন্ধান চাই।
রংপুরে সমাবেশ : আবু ত্ব-হা ও তার সঙ্গীদের সন্ধান চেয়ে রংপুরে লায়ন্স স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন ও সমাবেশ করেন। গতকাল রংপুরে জি এল রায় সড়কে নিখোঁজদের সন্ধান চেয়ে মানববন্ধন ও সমাবেশে কলেজ শিক্ষক বাসেদুল ইসলামের সভাপতিত্বে বক্তৃতা করেন লায়ন্স স্কুল ও কলেজের প্রাক্তন শিক্ষার্থী রাকিবুল বাসার, রাকিব আহমেদ, সিয়াম ইবনে শরিফ, শিবলী সৈয়দ প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, এ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রাক্তন শিক্ষার্থী ইসলামি বক্তা আবু ত্ব-হার নিখোঁজের সাত দিন অতিবাহিত হয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী তার সন্ধান দিতে পারেনি। এটি অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা।
নিখোঁজের পরদিন ত্ব-হার মা রংপুরের কোতোয়ালি থানায় একটি সাধারণ ডায়েরিও (জিডি) করেন। তাদের সন্ধানে দেশের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে গুরুত্ব দেয়ার আহবান জানান তারা। এ বিষয়ে রংপুর কোতোয়ালি থানার ওসি আবদুর রশীদ বলেন, আমাদের পক্ষ থেকে নিখোঁজ ব্যক্তিদের সন্ধানে জোর চেষ্টা চালানো হচ্ছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।