পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
করোনার দ্বিতীয় ঢেউ-এ ঘুরে দাঁড়ানোর মুখে ফের টালমাটাল ভারতের অর্থনীতি। ঝুঁকি নিয়েই প্রায় ৩ কোটি টাকা দামের তাদের সাম্প্রতিকতম এসইউভি মডেল মেব্যাক-এর মধ্যেই ভারতে এনেছিল মার্সিডিজ বেনজ কর্তৃপক্ষ। জার্মান গাড়ি সংস্থাটির লক্ষ্য ছিল, চলতি বছরের মধ্যে ৫০টি গাড়ি বিক্রি করা। কিন্তু, অবাক বিষয়! ভয়ানক করোনা পরিস্থিতির মধ্যেই এক মাসের মধ্যেই বিক্রির সেই লক্ষ্য পূরণ হয়েছে সংস্থার। ধনীদের বিপরীত মেরুতে থাকা গরীবদের জন্য চিত্রটা অন্যরকম। ভারতের মাথা-পিছু বার্ষিক গড় আয় ২ হাজার মার্কিন ডলারের তলায় নেমে গিয়েছে। এই তালিকায় বাংলাদেশও এখন ভারতের উপরে। সেন্টার ফর মনিটরিং ইন্ডিয়ান ইকনমির হিসেবে, গত বছর ভারতে করোনা সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর থেকে প্রায় সাড়ে তিন কোটি মানুষের চাকরি গিয়েছে, যার মধ্যে ৭০ শতাংশ ছিলেন সংস্থার স্থায়ী কর্মী। বেকারত্বের হার প্রতি সপ্তাহে বাড়ছে। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের সাবেক গভর্নর ডি সুব্বারাওয়ের মতে, ‘চূড়ান্ত অসমৃণ’ অর্থনৈতিক পুনরুজ্জীবন এবং ধনী-দরিদ্রের মধ্যে ‘আর্থিক বৈষম্য আরও চওড়া হওয়ায়’ আগামী দিনে ভারতের উন্নয়ন সম্ভাবনা ধাক্কা খেতে পারে। তিনি বলেন, ‘চার দশকের মধ্যে প্রথম গত বছর অর্থনীতি ৭ দশমিক ৩ শতাংশ সঙ্কুচিত হয়েছে। এর ফলে অসংগঠিত ক্ষেত্রের কয়েক কোটি পরিবার অস্তিত্বের সঙ্কটে পড়েছে। আশা ছিল, চলতি বছরে দ্রুত পুনরুজ্জীবন ঘটবে। কিন্তু, তাতে পানি ঢেলে দিয়েছে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ।’
উন্নয়নশীল অর্থনীতিতে আর্থিক বৈষম্য কোনও নতুন সমস্যা নয়। করোনা পরিস্থিতিতে ভারতে সেই বৈষম্য অনেকটা বেড়েছে। একদিকে বিলাসি গাড়ির বিক্রি বৃদ্ধি এবং কোটিপতিদের আরও বিত্তশালী হওয়া এবং অন্য দিকে ক্রমশ চাকরি না থাকা ব্যক্তির সংখ্যা বৃদ্ধি ও সঞ্চয় কমা- স্পষ্ট করেছে মোদি সরকারের নীতি দিশাহীনতা। আয় হ্রাস পাওয়ায় গত বছর দরিদ্ররা কম খাবার খেতে বাধ্য হয়েছে এবং অর্থনীতিবিদরা সতর্ক করছেন, ফের একবার খাবার থেকে বঞ্চিত হওয়ার ঘটনা ঘটতে চলেছে। অত্যন্ত উদ্বিগ্ন সুব্বারাও জানিয়েছেন, যেখানে অধিকাংশ মানুষ কাজ হারিয়েছে এবং রোজগার কমে যাওয়ার সঙ্কটে পড়েছে, সেখানে মহামারীর বছরে কতিপয় ধনীর সম্পত্তি বিপুল বৃদ্ধি পেয়েছে। তার মন্তব্য, ‘উচ্চ-আয়ের ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে সম্পত্তি বৃদ্ধি, নিম্ন-আয়ের পরিবারের উপর পড়া করোনার নেতিবাচক অর্থনৈতিক প্রভাবের একেবারে উল্টো। এতে স্পষ্ট যে, পুনরুজ্জীবন অত্যন্ত অমসৃণ হচ্ছে এবং বৈষম্য আরও বাড়ছে। এটা নৈতিক দিক থেকে ভুল এবং রাজনৈতিক ভাবে ক্ষয়কারক। আগামী দিনে উন্নয়নের সম্ভাবনার উপর এটা বিরাট প্রভাব ফেলবে। পুনরুজ্জীবন যে চূড়ান্ত অমসৃণ, তার সবথেকে বড় লক্ষণ তেজি শেয়ারবাজার।’
আগামী নভেম্বর পর্যন্ত ৮০ কোটি মানুষকে রেশনের মাধ্যমে নিখরচায় নির্দিষ্ট পরিমাণ খাদ্যশস্য দেয়ার ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। গত বছরও সরকারের এই উদ্যোগের সুফল মিলেছিল গরিব মানুষের। কিন্তু, আয় না থাকায় পাত থেকে ডিম, মাছ, মাংসের মতো পুষ্টিকর খাবারকে বাদ রাখতে বাধ্য হয়েছিল দরিদ্র পরিবার। টানা দ্বিতীয় বছর পুষ্টি সঙ্কট যাতে না সৃষ্টি হয়, তা নিশ্চিত করতে দরিদ্রদের মাসে ৪ হাজার ৫০০ রুপি সরাসরি নগদ দেয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন আজিম প্রেমজি বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল অর্থনীতিবিদ। তাদের বক্তব্য, সরকার অন্তত তিন মাসের জন্য নগদে এই অর্থ ট্রান্সফার করুক। তারা বলেছেন, ‘গত বছর দরিদ্রতম ১০ শতাংশ পরিবার যে আয় হারিয়েছে, প্রস্তাবিত নগদ ট্রান্সফার তার সমান। করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের সামনে তারা একেবারে সহায়-সম্বলহীন। হাতে নগদ পেলে তারা পরিস্থিতির মোকাবিলায় কিছুটা রসদ পাবে।’
এ প্রসঙ্গে সুব্বারাও জানিয়েছেন, করোনার দ্বিতীয় ঢেউ গ্রামাঞ্চলেও আছড়ে পড়ায় দরিদ্র মানুষ সমূহ বিপদের মুখে। তিনি বলেন, ‘চিকিৎসার জন্য তাদের সমস্ত সঞ্চয় চলে গিয়েছে। আর গ্রামাঞ্চলে স্বাস্থ্য পরিকাঠামো দুর্বল হওয়ায় গ্রামে বসবাসকারীরা সম্ভাব্য তৃতীয় ঢেউয়ের প্রভাব নিয়ে অনেক বেশি উদ্বিগ্ন ও অনিশ্চিত।’ সূত্র : টিওআই।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।