পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
চিকিৎসক কাজী সাবিরা রহমানের হত্যাকারীদের ধরতে কোনো সূত্র খুঁজে পাচ্ছে না পুলিশ। হত্যাকান্ডের দশ দিন পেরিয়ে গেলেও জড়িত কাউকে শনাক্ত করতে পারেনি তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। ঘটনার পর থেকে সন্দেহভাজন, প্রত্যক্ষদর্শী ও নিহতের স্বজনদের দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করেও কোনো ক্লু মিলছে না। তবে ঘটনার আলামত বিশ্লেষণ করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা বলছেন, খুনি ঠান্ডা মাথায় খুন করে পালিয়েছে। এ ঘটনায় থানা পুলিশের পাশাপাশি গোয়েন্দা পুলিশ, র্যাব, পিবিআইসহ সবাই ‘ক্লু’ উদ্ধারে কাজ করছে। সবার ভাষ্য, হত্যাকান্ডটি ক্লু লেস ও জটিল। সাবিরার মুঠোফোনের কলের সূত্র ধরে হত্যাকান্ডের রহস্য উদ্ঘাটন করে তারা হত্যাকারীদের শনাক্ত করার চেষ্টা চালাচ্ছেন।
মামলাটির ছায়া তদন্ত করা ডিবির একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, সাবিরা হত্যাকান্ড রহস্যে ঘেরা। তার স্বামী-সন্তান থাকলেও তাদের ছেড়ে তিনি একা আলাদা ফ্ল্যাটে ভাড়া থাকতেন। তাকে খুন করে খুনিরা চলে গেলেও দরজা ভাঙার আলামত নেই। তাকে গায়ে আগুনও ধরিয়েও দেয়া হয়নি। তোশকে ধরে যাওয়া আগুন দেয়া যা ধীরে ধীরে ছড়িয়ে তিনি দগ্ধ হন। হয়তো পরিচিতরাই পরিকল্পিতভাবে ওই হত্যাকান্ড ঘটিয়ে ভেতর থেকে দরজা বন্ধ করে পালিয়ে গেছে।
নিউ মার্কেট জোনের সহকারী কমিশনার শরীফ মোহাম্মদ ফারুকুজ্জামান বলেন, সাবিরার সাবলেট কানিজ সুবর্ণা, তার বন্ধু, বাড়ির তত্ত¡াবধায়ক ও গৃহকর্মী, ভবনের বাসিন্দা ও সাবিরার স্বজনসহ ১৪-১৫ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তাদের কাছ থেকে হত্যাকান্ডের বিষয়ে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। তা ছাড়া ওই ভবন ও আশপাশের বাড়িতে কোনো সিসিটিভি না থাকায় কোনো ফুটেজও পাওয়া যায়নি। তবে ঘটনা উদ্ঘাটনে সাবিরার জব্দ করা মুঠোফোনটির ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য সিআইডিতে পাঠানো হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, হত্যাকান্ডের আগে গত ৩০ মে সকাল ১০টার দিকে বা তারও আগে চিকিৎসক সাবিরার কাছে কে কে এসেছিলেন বাসার বাইরে থাকায় তা কানিজ দেখেননি বলে দাবি করছেন। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে কানিজ সুবর্ণা চিকিৎসক সাবিরার ভাড়া বাসায় সাবলেটে ওঠেন।
তদন্ত সংশ্লিষ্ট একজন গোয়েন্দা কর্মকর্তা বলেন, পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে সুবর্ণা বলেছেন ঘটনার দিন সকাল ছয়টায় তিনি প্রাতর্ভ্রমণে বেরিয়ে যান। তখন সাবিরার কক্ষের দরজা বন্ধ ছিল। সকাল সাড়ে নয়টায় ফিরে এসে তিনি ওই কক্ষ থেকে ধোঁয়া বেরোতে দেখেন। তখন তিনি দারোয়ানকে ডেকে আনেন। দারোয়ান ডেকে আনেন আরেক নারীকে। এরপর মিস্ত্রি ডেকে এনে দরজার তালা ভেঙে ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করেন তারা। তখন কক্ষটিতে আগুন দেখতে পেয়ে ফায়ার সার্ভিসে ফোন দেন। ফায়ার সার্ভিস এসে আগুন নেভানোর পর সাবিরাকে বিছানার ওপর উপুড় হয়ে পড়ে থাকতে দেখে। আগুন নিভিয়ে একটি চাদর দিয়ে দেহটি তারা ঢেকে দেয়। এরপর কানিজ সুবর্ণা কলাবাগান থানা-পুলিশকে খবর দেন। পরে পুলিশ এসে সাবিরার লাশ উদ্ধার করে।
তদন্ত সংশ্লিষ্টরা জানান, ঠান্ডা মাথায় পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে চিকিৎসক সাবিরাকে। খুনি ফ্ল্যাটের সব তথ্যই জানত। ফলে পালাতে সুবিধা হয় খুনির। বাড়ির দারোয়ান সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করত না। আবার ওই বাসাতে কোনো সিসি ক্যামেরাও নেই। আশেপাশের কোনো বাড়িতেও নেই। এমনকি কয়েকটি সড়কেও সিসি ক্যামেরা নেই। দূরের একটি সড়কে ক্যামেরা রয়েছে। সেটির ফুটেজ সংগ্রহ করেছে পুলিশ।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের রমনা বিভাগের ডিসি এইচ এম আজিমুল হক বলেন, এখনও হত্যাকান্ডের ক্লু উদঘাটন করা যায়নি। আমরা সম্ভাব্য সব বিষয় আমলে নিয়ে তদন্ত অব্যাহত রেখেছি। যেহেতু হত্যাকান্ডটি ক্লু লেস সেহেতু উদঘাটনে একটু সময় লাগবে। উল্লেখ্য, গত ৩১ মে সকালে রাজধানীর কলাবাগানের ৫০/১ নম্বর ছয়তলা বাড়ির তৃতীয়তলার একটি ফ্ল্যাট থেকে গ্রিন লাইফ হাসপাতালের চিকিৎসক কাজী সাবিরা রহমানের রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এর আগে ওই ফ্ল্যাট থেকে আগুনের ধোঁয়া বের হতে দেখে স্থানীয়রা ফায়ার সার্ভিসে খবর দেন। ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা আসার আগেই স্থানীয়রা সহভাড়াটে কানিজ সুবর্ণার সহায়তায় ফ্ল্যাটটিতে প্রবেশ করে। পরে সাবিরার কক্ষের তালা ভেঙে আগুন নেভায় তারা। ওই ফ্ল্যাটের যে কক্ষ থেকে সাবিরার লাশ উদ্ধার করা হয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।