Inqilab Logo

শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জঙ্গি নেটওয়ার্কের মাস্টারমাইন্ডদের গ্রেফতারে তৎপর আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী

প্রকাশের সময় : ১০ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম | আপডেট : ১১:৪৯ পিএম, ৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৬

স্টাফ রিপোর্টার : জঙ্গি নেটওয়ার্কের দুই মাস্টারমাইন্ড মেজর জিয়া ও মারজান যে কোনো সময় ধরা পড়বে। ইতোমধ্যেই র‌্যাব-পুলিশের একের পর এক সফল অভিযানে ভেঙে পড়েছে জঙ্গি নেটওয়ার্ক। মেজর জিয়া ও মারজানও পালিয়ে থাকতে পারবে না। তাদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এমনটাই দাবি করেছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
গত জুন মাসে গুলশানের হলি অর্টিজান বেকারিতে হামলা চালায় জঙ্গিরা। কিন্তু আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কৌশলে তাদের ওই বেকারিতেই ঘিরে রাখে। পরে যৌথ বাহিনী সেখানে অভিযান চালিয়ে জিম্মিদের উদ্ধার করে। ওই সময় যৌথ বাহিনীর অভিযানে মারা যায় ৬ জঙ্গি। এর পর পুলিশ ও র‌্যাবের গোয়েন্দা তৎপরতায় বেরিয়ে আসে কয়েকজনের নাম। ধরাও পড়ে তারা। এরপর পুলিশ একের পর এক জঙ্গি আস্তানায় হানা দেয়। কল্যাণপুরের ৫নং রোডের জাহাজ বিল্ডিং নামে পরিচিত জঙ্গি আস্তানায় পুলিশ সফল অভিযান চালায়। গোয়েন্দা তৎপরতায় পুলিশ জানতে পারে কল্যাণপুরের ওই বাড়িটিকে আস্তানা হিসেবে ব্যবহার করছে জঙ্গিরা। জুলাই মাসে পুলিশ সেখানে অভিযান চালায়। র‌্যাব-পুলিশের সফল এ অভিযানে ৯ জঙ্গি নিহত হয়। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় ধরা পড়ে হাসান নামে এক জঙ্গি। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ দেশে জঙ্গিদের অর্থদাতা ও হোতাদের নাম জানতে পারে। জঙ্গিদের হোতা ও অর্থের জোগানদাতা হিসেবে উঠে আসে তামিম, মেজর জিয়া ও জাহিদুলের নাম। পুলিশ-র‌্যাব তাদের গ্রেফতারে মাঠে নামে। বৃদ্ধি করা হয় গোয়েন্দা কার্যক্রম। এর পর নারায়ণগঞ্জে জঙ্গি আস্তানায় র‌্যাবের অভিযানে সহযোগীসহ নিহত হয় তামিম। এর কয়েকদিনের ব্যবধানে মিরপুরে পুলিশ ও র‌্যাবের অভিযানে মারা যায় দুর্ধর্ষ জঙ্গি মেজর জাহিদ। জঙ্গিদের হোতা হিসেবে এখন পর্যন্ত আরো যাদের নাম উঠে আসে তাদের মধ্যে দু’জন মেজর জিয়া ও মারজান।
পুলিশ সদর দফতরের ডিআইজি (ক্রাইম ম্যানেজমেন্ট) হুমায়ুন কবীর বলেন, পুলিশ জঙ্গি দমনে অনেকটাই এগিয়ে গেছে। একের পর এক অভিযানে তাদের গোয়েন্দা নেটওয়ার্ক তছনছ করে দিয়েছে পুলিশ। তিনি বলেন, মারজান আর মেজর জিয়াকে গ্রেফতারের লক্ষ্যে পুলিশি অভিযান অব্যাহত আছে। তাদেরকে ধরা পড়তেই হবে। তারা ধরা পড়বেই। তিনি বলেন, এ দু’জনকে গ্রেফতার করা গেলে পুরো জঙ্গি নেটওয়ার্ক আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে। এদিকে র‌্যাবের তদন্তে বেরিয়ে এসেছে জঙ্গিদের খাতায় নাম লিখিয়েছে কিছু নারীও। তারা স্বামীর সঙ্গে জিহাদে অংশ নিতেও আগ্রহী। র‌্যাবের তৎপরতায় গত বুধবার সিরিয়া যাওয়ার প্রস্তুতিকালে রাজধানী ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জ থেকে জেএমবির সক্রিয় সদস্য দুই দম্পতিকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। গ্রেফতারকৃতরা হলোÑমারজিয়া আক্তার সুমি (১৯), তার স্বামী মো. শরিফুল ইসলাম ওরফে সুলতান মাহমুদ ওরফে মাহমুদ (১৮), আমিনুল ইসলাম ওরফে আমিনুল (৩৪) ও তার স্ত্রী নাহিদ সুলতানা (৩০)।
ওই ঘটনায় র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া শাখার পরিচালক কমান্ডার মুফতি মাহমুদ বলেন, গ্রেফতারকৃতরা নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন জেএমবির সক্রিয় সদস্য। তারা গোপনে জিহাদের পরিকল্পনাও করে যাচ্ছিল। সম্প্রতি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ক্রমাগত অভিযানের ফলে গ্রেফতারকৃতরা বিদেশ চলে যাওয়ার প্রস্তুতি নিয়েছিল। এ লক্ষ্যে তারা পাকিস্তানসহ বিভিন্ন দেশের জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। অপেক্ষা করছিল বিদেশ থেকে টাকা আসার জন্য। গ্রেফতারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, দেশে জেএমবির চার-পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট কয়েকটি সক্রিয় গ্রুপ রয়েছে। তারা হত্যাসহ আত্মঘাতী হামলার পরিকল্পনা করছে। এ ব্যাপারে বেশকিছু তথ্য এসেছে র‌্যাবের হাতে।
তদন্তসংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, আনসারুল্লাহ বাংলাটিম নিষিদ্ধ হওয়ার পর আনসার আল ইসলাম নামকরণ করা হয়। আনসার আল ইসলামের কা-ারি এই মেজর জিয়া। তার পরিকল্পনায় কয়েকজন ব্লগারকে হত্যা করা হয়। গুলশান হামলার আরেক কা-ারি চট্টগ্রাম বিভাগের আরবি বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী মারজানের সাথে আন্তর্জাতিক একাধিক জঙ্গি সংগঠনের যোগসূত্র থাকার তথ্য গোয়েন্দাদের কাছে রয়েছে। এ দুই কা-ারিকে গ্রেফতারের লক্ষ্যে র‌্যাব-পুলিশ দেশের বিভিন্ন স্থানে হানা দিচ্ছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: জঙ্গি নেটওয়ার্কের মাস্টারমাইন্ডদের গ্রেফতারে তৎপর আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ