Inqilab Logo

রোববার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে বাড়ছে অপরাধ

বেকারত্বই মূল কারণ সাবেক আইজিপি এ কে এম শহীদুল হক

খলিলুর রহমান | প্রকাশের সময় : ২৬ আগস্ট, ২০২০, ১২:০২ এএম

সম্প্রতি রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় ভুয়া আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পরিচয়ে ছিনতাই, ডাকাতি ও খুনের মতো গুরুতর অপরাধ বাড়ছে। প্রায় সময় এ ধরনের খবর গণমাধ্যমে প্রকাশ হচ্ছে। এতে সাধারণ মানুষের মধ্যেও দেখা দিচ্ছে আতঙ্ক। কেন এমন অপরাধ বাড়ছে আর এসব অপরাধ কমিয়ে আনতে করণীয় কি এবং অপরাধীদের গ্রেফতারে ব্যস্ত সময় পার করছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। তবে বেকারত্ব ও সামাজিক মূল্যবোধের কারণেই এমন অপরাধ বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। সংশ্লিষ্টরা জানান, ১০ থেকে ১৫ জনের গ্রুপ করে অপরাধীরা বেপরোয়া হয়ে উঠছেন। তারা গায়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর জ্যাকেট, কোমরে পিস্তল ও ওয়াকিটকি আর হাতে হাতকড়া নিয়ে প্রকাশ্যেই ছিনতাই করে যাচ্ছে। শুধু ছিনতাই বা ডাকাতি নয়, এ দলগুলো সব ছিনিয়ে নেয়ার পর হত্যা করছে ভুক্তভোগীদের। সম্প্রতি এমন একটি দুর্র্ধর্ষ ছিনতাইকারী দলকে গ্রেফতার করেছে ডিবি পুলিশ।

এছাড়া গত ১৭ আগস্ট সকালে কোতয়ালী থানার জনসন রোডে ডিবি পুলিশের পরিচয় দিয়ে এক কাপড় ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ৫৫ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয় ওই চক্রের সদস্যরা। এ ঘটনায় ওই ব্যবসায়ী একটি মামলা দায়ের করেন। পরবর্তীতে ঘটনাস্থলের আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ ও তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় ১৯ আগস্ট ভোরে রায় সাহেব বাজার মোড় থেকে মো. সোহাগ নামের একজনকে গ্রেফতার করা হয়। তার দেয়া তথ্যমতে ছিনতাইকারী চক্রের ১১ জনের সন্ধান পাওয়া যায়। পরে তাদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু হয়। গত ১৯ ও ২০ আগস্ট টানা দুই দিন অভিযান চালানো হয়। এসময় গাজীপুরের টঙ্গীর দত্তপাড়া এলাকা থেকে ওই চক্রের সদস্য ইকবাল, জাকির ও সুমনকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তাদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে ২০ আগস্ট ভোরে টঙ্গী চেরাগ আলী থেকে সরোয়ার খাঁকে গ্রেফতার করা হয়। পরবর্তীতে সরোয়ারকে নিয়ে পল্টন ও নর্দা এলাকায় অভিযান চালিয়ে দুলাল, আনোয়ার, আমির, নাসির, ইমন ও রমজান নামের আরো ছয়জনকে গ্রেফতার করা হয়।

পুলিশ আরো জানায়, গ্রেফতারের পর তাদের বিরুদ্ধে রিমান্ড আবেদন করা হয়। তবে রিমান্ডের আগেই সোহাগ, ইকবাল ও দুলাল আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। বাকিদের চারদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। তাদের মধ্যে দুইজন গতকাল স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। বাকিদের রিমান্ড আজ শেষ হবে।

এছাড়াও গত ১০ আগস্ট মিরপুর, মোহাম্মদপুর ও গাজীপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে ডিজিএফআইয়ের ভুয়া সহকারী পরিচালক ও দুইজন সিআইডি কর্মকর্তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। গ্রেফতারকৃত মো. শাহিনুল ইসলাম, মো. আকমল হোসেন ও জহিরুল ইসলাম ওরফে দীপক বিভিন্ন সরকারি দফতরে গিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য পরিচয়ে তদবির বাণিজ্য করত। তবে ভুয়া আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে ছিনতাই চক্রের সদস্যদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছেন ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের এসি মফিজুর রহমান পলাশ।

গতকাল পুলিশের সাবেক আইজিপি এ কে এম শহীদুল হক দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, এসব অপরাধ সব সময় ছিল। বেকার সমস্যার কারণে অনেকেই এ ধরনের অপরাধে জড়িয়ে পড়েন। অপরাধ করতে করতে এক পর্যায়ে তা অভ্যাসে পরিণত হয়। পরবর্তীতে তারা প্রকাশ্যে অপরাধ করে থাকে।

এসব অপরাধ নির্মূল করা সম্ভব নয় জানিয়ে তিনি আরো বলেন, এ ধরনের অপরাধীদের তালিকা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে থাকে। ভুয়া আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পরিচয়ে অপরাধ বেড়ে গেলে ওইসব তালিকা থেকে অপরাধীদের গ্রেফতার করা হয়। তখন অপরাধ কমিয়ে আনা সম্ভব হয়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ