পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
কাগজে কলমে ভারতীয় সীমান্ত বন্ধ। করোনার ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট ডেল্টার সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে ১৬ এপ্রিল প্রথম সীমান্ত বন্ধ করে দেয়া হয়। অতপর দফায় দফায় সীমান্ত বন্ধের সিদ্ধান্ত বৃদ্ধি করা হয়। কিন্তু সীমান্ত কাগজে কলমে বন্ধ থাকলেও প্রতিদিন মানুষ ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ করছে। বিশেষজ্ঞদের অভিমতে এরাই করোনার ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট বহন করে আনছে। শুধু তাই নয় তারা ভারতের ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের বাহক। আর সীমান্ত পারাপার বৈধভাবে আসার চেয়েও অবৈধভাবে দালালদের মাধ্যমে আসা যাওয়া করছে। লকডাউন ও কঠোর বিধি নিষেধের মধ্যে প্রতিদিন দালালদের সহায়তায় সীমান্ত দিয়ে মানুষের আসা যাওয়া অব্যাহত রয়েছে। সীমান্ত এলাকাগুলোতে খোঁজ খবর নিয়ে এ তথ্য জানা গেছে।
দেশে করোনার ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট ডেল্টা ছড়ানো ও সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় সীমান্তবর্তী অনেক জেলায় বিশেষ লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে কয়েকটি জেলায় সীমান্তবর্তী বিভিন্ন উপজেলায় জারি করা হয়েছে বিশেষ বিধিনিষেধ। জোরদার করা হয়েছে বিজিবির টহল। এরপরও থামছে না অবৈধ অনুপ্রবেশ। দালালদের দৌরাত্ম্যে বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে বেড়েছে ভারত থেকে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ।
অভিযোগ রয়েছে, মোবাইল ফোনে দু’দেশের দালালরা যোগাযোগ করে মোটা অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে রাতের আঁধারে লোক পারাপার করছে। এমন অবৈধ পারাপার করোনার ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট ছড়ানোর ক্ষেত্রে খুবই ঝুঁকিপূর্ণ বলে চিকিৎসকরা জানান। পাসপোর্ট অধ্যাদেশ আইনের দুর্বলতা ও মোবাইল ব্যবহারের নজরদারির ঘাটতিও অনেকটা দায়ী বলে মনে করেন আইনজীবীরা। করোনার সাতক্ষিরায় সংক্রমণ ৫০ দশমিক ৫৩ শতাংশ। ঝিনাইদহে সংক্রমণের হার ১২ দশমিক ৯৯ শতাংশ। এ ছাড়াও জয়পুরহাটে শতকরা হিসেবে শনাক্তের হার ২৫ শতাংশের বেশি, চাঁপাইনবাবগঞ্জে ২৯ শতাংশের বেশি, নড়াইল ৪০ দশমিক শূন্য, রাজশাহীতে ২৩ শতাংশের বেশি। তারপরও সীমান্ত দিয়ে দালালরা মানুষ পারাপার করছেই।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিভিন্ন সময় ভারতে থাকা বাংলাদেশিদের সঙ্গে বিভিন্ন অঞ্চলের সীমান্তের ওপারের দালালরা যোগাযোগ রাখে। মোটা অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে রাতের আঁধারে এপারের দালালদের সঙ্গে যোগাযোগ করে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেয়। সীমান্তে প্রবেশের সময় কিছু মানুষ আটক হলেও বেশিরভাগ অধরা থেকে যায়। অন্যদিকে কেউ আটক হলে সে খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তাদের ছাড়াতে আদালতপাড়ায় ভিড় করেন দালাল চক্রের সদস্যরা।
ঝিনাইদহ আদালতপাড়ায় দালাল চক্রের এক সদস্য বলেন, ‘ভারতে অপু ভাই নামে একজন আছেন, তিনি নদীতে নৌকা চালান। তার সঙ্গে কথা হয় হোয়াটসঅ্যাপে। কখনো তাকে দেখিনি। ওপারে তার একটি গোডাউন রয়েছে। সেখানে বাংলাদেশে প্রবেশকারীদের এনে রাখা হয়। বর্ডারে তার লোক আছে। রাতে সুযোগ বুঝে গ্রুপ করে তাদের কাছে এসব মানুষদের ছেড়ে দেয়। এপারে (বাংলাদেশ) সাইফুলদা তাদের বুঝে নেন।’ একই চিত্র অন্যান্য সীমান্তগুলোতে।
এর আগে রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) থেকে জানানো হয় যশোর, সাতক্ষীরা, ঝিনাইদহ, চুয়াডাঙ্গা, রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও সিলেটের এই জেলাগুলোতে সংক্রমণ বেশি। এ জন্য এসব জেলায় লকডাউন ঘোষণার পরামর্শ দেয়া হয়। তবে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় লকডাউন ঘোষণার পর আম বাণিজ্যের কারণে রাজশাহী বিভাগের অন্যান্য জেলাগুলোতে লকডাউন ঘোষণায় বিলম্ব হয়। তবে খুলনা বিভাগের কয়েকটি উপজেলায় লকডাউন ঘোষণা করা হয়। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সীমান্ত বন্ধ থাকলেও যেসব বাংলাদেশির ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যাচ্ছে তারা ভারতে বাংলাদেশি দূতাবাসের বিশেষ অনুমতি নিয়ে দেশে ফিরছেন। বৈধভাবে ফেরার চেয়ে অবৈধভাবে ফেরার সংখ্যা বেশি। আখাউড়া, বিবিরবাজার, বেনাপোল, বাংলাবান্ধা, টেকনাফ, বিলুনিয়া, সোনা মসজিদ, ভোমরা, দর্শনা, বুড়িমারি, সোনাহাট, রৌমারি, হিলি, রাধিকাপুর, তামাবিল, গোয়াইনঘাট, সুতারকান্দি, বিয়ানিবাজার, জকিগঞ্জ, বল্লা চুনারুঘাট, ফুলতলা, চাতলা, নাকুগাও, গোবরাকুড়া, ধনুয়া বকশিগঞ্জ সীমান্ত দিয়ে মানুষ দালালদের মাধ্যমে বাংলাদেশে ফিরে আসছেন বলে খবর পাওয়া গেছে।
ঝিনাইদহ জেলার মহেশপুর উপজেলার সীমান্তের মাটিলা গ্রামে বসবাসকারী নুরুন নবী জানান, সীমান্তের বিভিন্ন এলাকা দিয়ে ভারত থেকে লোক আসে। তারা সীমানা অতিক্রম করে বিভিন্ন বাড়িতে আশ্রয় নেন। একইভাবে বাংলাদেশ থেকে ভারতে যান। এরা মূলত একশ্রেণির দালালের মাধ্যমে এপার ওপার যান। যাদের কাছে কোনো দেশেরই বৈধ পাসপোর্ট বা ভিসা নেই।
ভারতের নাগরিক সত্যচরণ সরকার। বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের কোলঘেঁষা গ্রাম কাশিপুর গ্রামের বাসিন্দা। এ গ্রামটি ভারতে উত্তর ২৪ পরগোনার বাগদা এলাকায়। সত্যচরণ কাঁটাতারের বেড়া অতিক্রম করে প্রতিদিনই কৃষিকাজ করতে আসেন। তিনি বলেন, ‘বহুকাল ধরেই আমরা (উভয় দেশের নাগরিক) পাশাপাশি জমিতে কৃষিকাজ করে আসছি। সম্পর্কের খাতিরে আমরা প্রতিবেশী বাংলাদেশিদের বাড়ি যাই। তারাও আমাদের বাড়ি আসে। কিন্তু ভারতে করোনার মহামারি দেখা দেয়ার পর বিজিবি ভারত বাংলাদেশের সীমানা রেখা পার হতে নিষেধ করেছে। যে কারণে পাশাপাশি জমিতে কাজ করলেও আমরা বাংলাদেশের মাটিতে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছি।’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।