২০৩৫ সালের মধ্যে মাত্রাতিরিক্ত মোটা হবেন ৪০০ কোটি মানুষ
২০৩৫ সালের মধ্যে মাত্রাতিরিক্ত ওজন বা মোটা হবেন বিশ্বের অর্ধেকেরও বেশি মানুষ। সংখ্যার বিচারে যা
প্রোস্টেট প্রন্থি পুরুষের থাকে। নারীদের থাকে না। এটি সুপারির মত দেখতে যার অবস্থান মূত্রাশয় এর ঠিক নীচে এবং এটি মূত্রনালীকে আবৃত করে রাখে। প্রোস্টেট প্রন্থির সমস্যাগুলো দেখা দিলে রোগীরা সাধারণতঃ মূত্রত্যাগ সংক্রান্ত বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন। তরুণ বা যুবকদের বেলায় প্রধানত প্রোস্টেট গ্রন্থিতে জীবাণু সংক্রমণ বা প্রদাহ হয়ে থাকে আর বয়স্কদের বেলায় প্রোস্টেট গ্রন্থিতে ক্যান্সার বা স্ফীতি দেখা যায়। এর ফলে মূত্রনালী পথ প্রায় বন্ধ বা পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যেয়ে মূত্র ত্যাগ বাধাগ্রস্ত হয়।
ইংল্যান্ডে ছেলেদের বিভিন্ন ক্যান্সারের মধ্যে সবচেয়ে বেশি দেখা যায় প্রোস্টেট ক্যান্সার। আমাদের দেশেও এই রোগ অনেক দেখতে পাওয়া যায়। এ ক্যান্সারের সব কারণ জানা না গেলেও বিভিন্ন কারণ জানা গেছে। বয়স যত বাড়ে তত এই ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ে। পরিবারের কারো প্রোস্টেট ক্যান্সার থাকলে অন্যদেরও হবার ঝুঁকি থাকে। জীনের বিভিন্ন ত্রুটির ফলে এটি হতে পারে। কিছু জাতির মধ্যে এই ক্যান্সার বেশি হয়। খাদ্য তালিকায় চর্বি ও আমিষ খাবারের আধিক্য থাকলে প্রোস্টেট ক্যান্সার বেশি হয়। পুরুষ হরমোন টেস্টোস্টেরনের উপস্থিতি প্রোস্টেট ক্যান্সার দ্রুত বৃদ্ধি ও বিস্তারে সাহায্য করে থাকে।
৬০ থেকে ৭০ শতাংশ ক্ষেত্রে প্রোস্টেট ক্যান্সার রোগীর কোনো লক্ষণ থাকে না। তাই কেবল নিয়মিত চেকআপ করে এ রোগ নির্ণয় করা সম্ভব। প্রোস্টেট ক্যান্সারের লক্ষণের মধ্যে রয়েছে-
১। প্র¯্রাবের গতি কমে যাওয়া
২। ঘন ঘন প্র¯্রাব হওয়া
৩। প্র¯্রাবের চাপ হলে প্র¯্রাব ধরে রাখতে না পারা
৪। প্র¯্রাবে রক্ত আসা
৫। বীর্যের সঙ্গে রক্ত আসা
৬। হাড়ের ব্যথা। বিশেষ করে কোমরের বা মেরুদ-ের হাড়ের ব্যথাসহ নানাবিধ উপসর্গ থাকতে পারে।
ভালভাবে ইতিহাস, শারীরিক পরীক্ষা এবং ল্যব টেস্ট করে সহজেই এই রোগ ধরা যায়। প্রোস্টেট ক্যন্সারের চিকিৎসায় সার্জারি, রেডিও থেরাপি, কেমোথেরাপি এবং হরমোন থেরাপি দেয়া হয়। কার জন্য কোনটি উপযুক্ত তা একজন চিকিৎসকই ঠিক করবেন। সবার জন্য এক চিকিৎসা নয়।
প্রোস্টেট ক্যান্সারের সঠিক কারণ এখনো নির্ণয় করা সম্ভব হয়নি। তাই এ রোগের প্রতিরোধ সম্পর্কে সুনির্দিষ্টভাবে কিছু বলা কঠিন। তবে সম্ভাব্য কারণ ও ঝুঁকি সম্পর্কে সতর্ক হলে বা এড়িয়ে চললে উপকার পাওয়া সম্ভব। ধূমপান বর্জন করতে হবে। এর ফলে আরও বিভিন্ন ক্যান্সার প্রতিরোধ করা যায়। চর্বিজাতীয় খাবার, আমিষ খাবার পরিমিত খেতে হবে। ওজন বেড়ে গেলে বিভিন্ন ক্যান্সার হয়। খাদ্যতালিকায় টমেটো, গাজর, তরমুজ, সয়াবিনজাত খাদ্য রাখতে হবে। এসব খাবার প্রোস্টেট ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায় বলে বিজ্ঞানীরা জানতে পেরেছেন। ভিটামিন সি ও ভিটামিন ডি-সমৃদ্ধ খাবার এ রোগের ঝুঁকি কমায় বলে জানা গেছে। প্রোস্টেট ক্যান্সারের পারিবারিক ইতিহাস থাকলে বয়স ৪০ হলেই বা কোনো লক্ষণ অনুভব করলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া ও নিয়মিত শারীরিক পরীক্ষা করানো উচিত।
কোনো প্রয়োজনে শরীরের বাইরে থেকে পুরুষ হরমোন টেস্টোস্টেরন ব্যবহার করতে হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া উচিত। অনেকেই যৌন শক্তি বাড়ানর জন্য হরমোন ইঞ্জেকশান নেন। এটি একেবারেই অনুচিত। এর ফলে প্রোস্টেট ক্যান্সার হতে পারে। বয়সের সাথে প্রোস্টেট ক্যান্সারের একটি সম্পর্ক আছে। কিন্তু বয়স তো আর থেমে থাকবে না। তাই অন্যান্য যেসব কারণে প্রোস্টেট ক্যান্সার হয় তা থেকে দূরে থাকতে হবে। নিয়মিত শরীর চেক আপ করানো উচিত। তাহলে ভবিষ্যতে বহু সমস্যার হাত থেকে বেঁচে থাকা যায়। প্রোস্টেট ক্যান্সারের অনেক রোগী যেহেতু আমাদের দেশে দেখা যায় তাই সবার এই বিষয়ে সচেতনতা প্রয়োজন।
ডা. মো. ফজলুল কবির পাভেল
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল,
মোবাইল : ০১৭১২৮৩৬৯৮৯
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।