পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
টিকটক ও ড্যান্স বারে কাজ দেওয়ার নামে তরুণীদের অবৈধভাবে সীমান্ত দিয়ে ভারতে পাচার করা হচ্ছে। ভারত থেকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে তাদের পাচারে সক্রিয় রয়েছে বেশ কয়েকটি সংঘবদ্ধ চক্র। এদের প্রধান লক্ষ্য মধ্যবিত্ত ও নি¤œবিত্ত পরিবারের তরুণীরা। তাদের অসহায়ত্বকে পুঁজি করে সেখানে নিয়ে যৌন পেশায়ও বাধ্য করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। তবে পাচার চক্রের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি ও সচেতনা বৃদ্ধি করলে এটা নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, এসব চক্রের অনেকে রাজধানী ও আশপাশের জেলায় নাচের স্কুল (ড্যান্স স্কুল) খুলে এই নারী পাচারে যুক্ত রয়েছেন। তারা একেকজন তরুণীকে বিদেশ যেতে রাজি করানো বাবদ ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা পান ভারতের চক্রের কাছ থেকে। পরে পাসপোর্ট ও ভিসা ছাড়াও ভারতে পাচার করা হয়। পরে সেই দেশে পাসপোর্ট করানো, ভিসা সংগ্রহ, বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশন পার করানো এবং বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ‘ড্যান্স বারে’ পৌঁছে দেওয়া পর্যন্ত সবখানে এই চক্রের লোক রয়েছে। বারে নৃত্য করার নাম করে নেওয়া হলেও এদের অনেককে যৌন পেশায় বাধ্য করানোর অভিযোগ রয়েছে। একশ্রেণির ট্রাভেল এজেন্সিও এই পাচার কাজে জড়িত। সরকারি একটি সংস্থার প্রাথমিক অনুসন্ধানে এমন অন্তত ৫০ জনের নাম পাওয়া গেছে, যারা এভাবে তরুণীদের বিদেশে পাচার করে থাকে। এছাড়াও বর্তমানে টিকটক ভিডিও বানানোর জন্য তরুণীদের লোভনীয় অফার দেয়া হয়। আর স্টার ও ভালো চাকরির লোভে তরুণীরাও ওই চক্রের ফাঁদে পড়েন।
আইনশৃঙ্খালা রক্ষাকারী বাহিনী সূত্রে জানা যায়, ভারতের বেঙ্গালুরুতে যৌন ব্যবসায় বাংলাদেশি তরুণীদের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। বেঙ্গালুরুতে পাচার হওয়া অনেক বাংলাদেশি তরুণীকে দিয়ে সন্তানও নেয় তারা। আর পাচার হওয়া তরুণীদের ঘণ্টা বা দৈনিক চুক্তিতে দেহ ব্যবসা করানো হয়। সপ্তাহ, মাস বা বছর চুক্তিতে খদ্দেরের কাছে পাঠানো হয়। যারা চুক্তি করতেন তারা নিজেদের বাড়িতে নিয়েই রাখতেন এসব তরুণীকে।
সম্প্রতি ভারতে বাংলাদেশি এক তরুণীকে যৌন নির্যাতনের খবরে আলোচনায় আসেন ওই চক্রের সদস্যরা। তারা টিকটক স্টার ও ড্যান্সের নামে হাজারের বেশি তরুণীকে পাচারের সন্ধান পেয়েছে পুলিশ। সম্প্রতি টিকটকে ‘স্টার’ বানানোর কথা বলে সাতক্ষীরা সীমান্ত দিয়ে কৌশলে ভারতে পাচার করা হয় এক তরুণীকে। তিন মাসের নির্মম নির্যাতন ও বন্দিদশা থেকে পালিয়ে দেশে ফেরেন ওই তরুণী। পরে রাজধানীর হাতিরঝিল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় ইতোমধ্যে বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
শুধু ওই তরুণী নয়, তার মতো হাজারের বেশি তরুণীকে এভাবে পাচার করা হয়েছে। ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগের ডিসি মো. শহিদুল্লাহ বলেন, ভুক্তভোগী তরুণীদের মোটরসাইকেলের মাধ্যমে সীমান্তে মানব পাচারকারীদের হাতে তুলে দেয়া হয়। এ চক্রটি এক হাজারের বেশি তরুণীকে পাচার করেছে। ইতোমধ্যে ওই চক্রের কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আরও যারা এর সঙ্গে জড়িত তাদের আইনের আওতায় আনা হবে বলে জানান তিনি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ ইনকিলাবকে বলেন, নারী পাচার একটা ব্যবসা। ওই ব্যবসার সাথে যারা জড়িত তারা সমাজের বিভিন্ন স্থরে বসে আছে। তাদের চিহিৃত করে আইনের আওতায় আনতে হবে। জিরো টলারেন্স ও সচেতনা বৃদ্ধি করতে হবে। কিন্তু এটা বাংলাদেশের একার পক্ষে সম্ভব নয়। ভারতের সাথে সম্পর্ক বৃদ্ধি করে নারী পাচারকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া উচিৎ বলে মনে করেন তিনি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।