Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ঘূর্ণিঝড় ইয়াস-এর প্লাবনে দক্ষিনাঞ্চলের প্রাণিসম্পদের ব্যাপক ক্ষতি

চরাঞ্চলে গবাদিপশুর পঁচাগলা দুর্গন্ধে পরিবেশ বিপন্ন

বরিশাল ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ৩ জুন, ২০২১, ৫:২২ পিএম

সাম্প্রতিক ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াস’এর প্রভাবে ফুসে ওঠা সাগরের জোয়ারে দক্ষিণ উপক’লের বিপুল সংখ্যক গরু-মহিষ ভেসে গেলেও তার সঠিক হিসেব এখনো প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের কাছে নেই। দ্বীপজেলা ভোলা ছাড়াও বরগুনা, পটুয়াখালী, পিরোজপুর ও বরিশালের বিভিন্ন চরাঞ্চল ইয়াস-এর জোয়ারে সয়লাব হয়ে যাওয়ায় প্রাণিসম্পদ খাতের ক্ষতি ব্যাপক। এমনকি সাগরের লবনাক্ত পানি পান করেও বিপুল সংখ্যক গরু মহিষ মারা গেছে। ভোলার ঢালচর, চর কুকরি-মুকরি সহ অনেক চরাঞ্চরে এখনো পঁচাগলা গবাদি পশুর দূর্গন্ধে এলাকার পরিবেশ বিপন্ন। অনেকেই এসব পশু মাটি চাঁপা দিতে না পাড়ায় জোয়রের পানিতে নদীতে ভাসিয়ে দিচ্ছেন।
শুধু ভোলার ৫৭ টি ইউনিয়নে ৫ হাজার ৫৫৭টি গরু, সাড়ে ৩ হাজারের ওপর মহিষ ১১ হাজারেরও বেশী ছাগল ও দুই সহশ্রাধীক ভেড়া নিখোজ হয়েছে। এরমধ্যে ৫ শতাধীক গরু,মহিষ, ছাগাল ও ভেড়া ইতোমধ্যে মারা গেছে বলে জানা গেছে। ভোলার বিচ্ছিন্ন দ্বীপ ঢালচর ও চর কুকরি-মুকরী সহ বিস্তির্ণ চরাঞ্চলের গবাদীপশু নিয়ে চরম বিপদগ্রস্থ সেখানে বসবাসরত গৃহস্থরা। ইয়াস-এর প্রবল জোয়ারে চোখের সামনে শত শত গবাদীপশু ভেসে যেতে দেখে অনেক গৃহস্থ মানষিকভাবেও বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছেন।
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মতে ভোলাতে ৯৪টি গরু, ৯৭টি মহিষ, ৪৫টি ছাগল ও ১৭৬টি ভেড়া বানের পানির তোড়ে মারা গেছে। এছাড়া ৮ হাজার ১৮৪টি মুরগী ও ৩ হাজার ৮৪ টি হাাঁস মারা গেছে এ ঝড়ে। প্র্রবল জোয়ারে ৪ হাজার ৪৩৩ একর চারন ভ’মিও ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে বলে জানিয়েছেন ভোলার প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ।
আর বরিশাল বিভাগীয় প্রাণিসম্পদ দপ্তরের মতে দক্ষিণাঞ্চলের ৬ জেলায় সর্বশেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত জোয়ারের প্লাবনে ৮৯৫টি গরু, ৭৫৯টি মহিষ, প্রায় দেড় হাজার ছাগল, ২৬ হাজারেরও বেশী মুরগী ও ৮ হাজারের মত হাঁস ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এরমধ্যে ৪টি মহিষ, ১টি ছাগল ১৫২টি হাঁস ও ৯০১টি মুরগী মারা গেছে বলে বিভাগীয় প্রাণিসম্পদ দপ্তর জনিয়েছে।
এ ব্যপারে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের বরিশাল বিভাগীয় পরিচালকের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জনান, আমরা ক্ষয়ক্ষতির তথ্য সংগ্রহ করে সদর দপ্তরে জনিয়েছি। তিনি প্রয়োজনে জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলারও পরার্মশ দেন।
এদিকে দক্ষিণ উপক’লে এখনো দূর্যোগকালীন সময়ে একভাগ প্রাণিসম্পদের জন্যও নিরাপদ আশ্রয় নিশ্চিত করা যায়নি। ১৯৭০-এর প্রলয়ঙ্কারী ঘূর্ণিঝড় ‘হেরিকেন’এর পরে ভোলা, পটুয়াখালী ও বরগুনা উপক’লে ৫০টি মাটির কিল্লা নির্মান করা হলেও তার বেশীরভাগই ইতোমধ্যে বিনষ্ট হয়ে গেছে। তবে ‘মুজিব কিল্লা’খ্যাত এসব কিল্লা সম্প্রতিককালে সংস্কার সহ নতুন আরো বেশ কিছু আধুনিক কিল্লার নির্মান কাজও শুরু করতে যাচ্ছে সরকার। ভোলাতেই নতুন ৫০টি কিল্লা নির্মানের প্রস্তাবনা রয়েছে বরে জানা গেছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ঘূর্ণিঝড় ইয়াস


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ