পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
চট্টগ্রাম নগরীর প্রাণকেন্দ্রে এমএ আজিজ স্টেডিয়ামের ভেতরেই চলছিল জমজমাট জুয়ার আসর। স্টেডিয়ামের ভেতরে চট্টগ্রাম ফুটবল ট্রেনিং একাডেমি কার্যালয়ে পাহারা বসিয়ে চলছিল এ অনৈতিক কর্মকাণ্ড। সেখানে অভিযান চালিয়ে নগদ সাত লাখ টাকাসহ বিপুল জুয়ার সামগ্রী উদ্ধার করেছে পুলিশ। হাতেনাতে গ্রেফতার করেছে ১৯ জন জুয়াড়িকে। অভিযান টের পেয়ে পালিয়েছে আরও অনেকে।
পুলিশ ও স্টেডিয়াম পাড়ার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দীর্ঘদিন ধরে ক্রীড়াঙ্গণকে কলুষিত করছিল সংঘবদ্ধ একটি চক্র। একাডেমির ভেতরে বাইরে পাহারা বসিয়ে রাতভর চলছিল জুয়ার আসর। উড়ছিল লাখ লাখ টাকা। করোনাকালেও তাদের এ অপকর্ম বন্ধ হয়নি। মঙ্গলবার রাতে গোপন সংবাদে খবর পেয়ে সেখানে অভিযানে যায় পুলিশ। চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) কোতোয়ালী জোনের সহকারী কমিশনার মো. মুজাহিদুল ইসলামের নেতৃত্বে বিপুল সংখ্যক পুলিশ একাডেমি অফিস ঘেরাও করে।
অভিযান টের পেয়ে পাহারাদারদের ইশারায় পালাতে শুরু করে জুয়াড়িরা। সেখান থেকে ১৯জনকে হাতেনাতে পাকড়াও করা হয়। পুলিশের এমন অভিযান প্রশংসিত হলেও সরকারি নিয়ন্ত্রণাধীন একটি প্রতিষ্ঠানে এতদিন কিভাবে এ অপকর্ম চলে আসছিল তা নিয়েও জনমনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। কারণ সেখানে পুলিশসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের নজরদারি রয়েছে। খেলাধুলা এবং বিনোদনের জায়গা হিসেবে পরিচিত স্টেডিয়ামের মত এমন একটি প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরে করোনাকালেও জমজমাট জুয়ার আসরের খবরে জনমনে রীতিমত বিস্ময়ের সৃষ্টি হয়েছে। চট্টগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থা (সিজেকেএস) নিয়ন্ত্রিত একটি প্রতিষ্ঠানে কিভাবে এ অপকর্ম চলছিল তা নিয়েও আলোচনা চলছে। সিজেকেএস’র সভাপতি চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক এবং নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক সাবেক সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন।
স্টেডিয়াম সূত্র জানায়, ক্যাসিনো কেলেঙ্কারির পর জুয়াড়িদের তৎপরতা কিছুদিন সীমিত থাকলেও অভিযান থেমে যাওয়ার পর তা আবার বাড়তে থাকে। তখন সেখানে পুলিশিও অভিযানও পরিচালনা করা হয়। তবে সে অভিযানে কাউকে গ্রেফতার করা যায়নি। নগর পুলিশের কর্মকর্তারা জানান, তখন সেখানে যাতে আর কোন জুয়ার না বসে সেজন্য সতর্ক করা হয়েছিল। তবে তাতে পাত্তা দেননি জুয়াড়িরা। ওই একাডেমি কার্যালয়ে জুয়ার আসর ছিল অনেকটা ওপেন সিক্রেট। কর্মকর্তাদের অনেকে দেখেও না দেখার ভান করতেন। ওই আসরে রাতভর যারা জুয়ায় মত্ত থাকতেন তাদের বেশিরভাগই ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবকলীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মী, ক্যাডার। আছেন সরকারি দল সমর্থিত ঠিকাদার ও উঠতি ব্যবসায়ীও। এদের বাইরে স্টেডিয়াম পাড়ায় অন্য কারও প্রবেশের তেমন সুযোগও নেই।
প্রতিদিনের মত ওই রাতেও স্টেডিয়ামের গ্যালারি সংলগ্ন ভবনে ফুটবল ট্রেনিং একাডেমির কার্যালয়ে জুয়ার আসর বসে। একই ভবনে জেলা ক্রীড়া সংস্থা, রেফারি অ্যাসোসিয়েশনসহ আরও বিভিন্ন ক্রীড়াসংশ্লিষ্ট সংগঠনের অফিস আছে। খবর পেয়ে এলাকা ঘেরাও করে সেখানে হানা দেয় পুলিশ। গ্রেফতার করা হয় ১৯জনকে। তারা হলেন- মো. ইকবাল (৩৬), আকবর হোসেন (২৭), তৌহিদুল ইসলাম (৩৬), মো. আব্বাস (৪২), মো. করিম (৩০), মো. সোহাগ (২৯), মো. তৌহিদুল আলম (৪১), হেলাল উদ্দিন (৬৩), মো. ফরিদ (৩৫), মাহমুদুল হক (৩০), মো. সুমন (৩০), মো. মনছুর (৩০), মো. কাইয়ুম (৪০), মুসলিম উদ্দীন (৩৮), মো. রানা (৪০), মো. বাবুল (৩৫), জসীম উদ্দীন (৩৮), রুবেল উদ্দীন (৩২) এবং এমরান উদ্দীন (৫০)।
অভিযানে নেতৃত্ব দানকারী কোতোয়ালী জোনের সহকারি কমিশনার মো. মুজাহিদুল ইসলাম বলেন, ফুটবল ট্রেনিং একাডেমিতে প্রকাশ্যে টাকার বিনিময়ে তাস দিয়ে জুয়া খেলা চলছিল। প্রতিদিন সেখানে জুয়ার আসর বসে। ভবনের ছাদে, প্রবেশমুখে, গলিপথে ট্রেনিং একাডেমির নিজস্ব লোকজন থাকে। তারা মূলত পুলিশের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করে। আবার অফিসের ভেতরে নিজস্ব লোকজন দিয়ে জুয়াখেলা পরিচালনা করে।
কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ নেজাম উদ্দিন বলেন, অপেক্ষাকৃত ভবনের ভেতরে অবস্থান হওয়ায় একাডেমি কার্যালয়টি কিছুটা আড়ালে। সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে তারা প্রতিদিন জুয়ার আসর বসায়। গ্রেফতার ১৯জনকে নিয়মিত মামলায় আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে বলে জানান তিনি। জুয়ার আসর থেকে ৮ প্যাকেট তাস এবং নগদ ৬ লাখ ৭৫ হাজার ১০০ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে বলে ওসি নেজাম জানিয়েছেন।
এদিকে জুয়ার আসরে পুলিশি অভিযান, নগদ টাকা উদ্ধার এবং হাতেনাতে জুয়াড়ি পাকড়াওয়ের ঘটনার পর ওই অফিস কক্ষটি তালা মেরে সীলগালা করে দেয়ার কথা জানিয়েছে সিজেকেএস। একইসাথে ঘটনা তদন্তে একটি কমিটি গঠনের কথাও জানানো হয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।