বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
দাবী ছিল হাজিরা বোনাসের, আইনে না থাকলেও মেনে নেওয়া হয়েছে। মেনে নেওয়া হয়েছে অন্য দাবী গুলোও। অভ্যর্থনা জানাতে আনা হয়ে ছিল মিষ্টিও। এত আয়োজন যে শ্রমিকদের নিয়ে, সেই শ্রমিকদেরই একটি অংশ নতুন দাবী উত্থাপন করে কাজে যোগ দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। তাই আবারও অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ হলো গার্মেন্টসটি।ফতুল্লার কুতুবপুরের দেলপাড়ায় অবস্থিত রাসেল গার্মেন্টসে রোববার (৩০ মে) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত এমন চিত্র দেখা গেছে।
কারণ জানতে চাইলে বিকেএমইএ’র সভাপতি সেলিম ওসমান বলছেন, ‘শ্রমিক নেতাদের নেতৃত্বের দ্বন্দ্ব আর বিশ্বাস ঘাতকতায় এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে’।
শ্রম আইনের কোথাও হাজিরা বোনাস প্রদানের নিয়ম নেই; তারপরেও কারখানার শ্রমিকদের প্রতি সহানুভূতিশীল এবং শ্রমিকদের সার্বিক কল্যান, সন্তুষ্টি বিধান ও তাদের উৎপাদনশীল মানসিকতার উত্তরোত্তর উন্নতির লক্ষ্যে হাজিরা বোনাস প্রদান করে আসছিল রাসেল গার্মেন্টস কর্তৃপক্ষ। কিন্তু সম্প্রতি করোনা ভাইরাসের কারণে তৈরি পোশাক ব্যবসার পরিস্থিতি ভালো না হওয়ায় কিছু দিনের জন্য হাজিরা বোনাস প্রদান স্থগিত করা হয়।
গত ২৩ মে হাজিরা বোনাসের দাবিতে ফতুল্লার ওই গার্মেন্টসটিতে হামলা ও কর্মকর্তাদের মারধর করেন শ্রমিকরা। ওই দিনই শ্রম আইনের ১৩ ধারা অনুযায়ী, কারখানাটি বন্ধ করা হয়। ২৭ মে কর্মকর্তাদের উপর হামলায় জড়িত থাকা ৩৫ শ্রমিকের নাম উল্লেখ করে মামলাও করা হয়েছিল। কিন্তু ২৯ মে শ্রমিক নেতা, মালিক, শিল্প পুলিশ ও ফতুল্লা থানা পুলিশের প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে বিকেএমইএ’র সভাপতি সেলিম ওসমান সকল দাবী মেনে নিয়ে কারখানা চালু করা ও ৩৫ শ্রমিককে পুর্নবাসনের ব্যবস্থার নির্দেশ দিয়েছেন।
নির্দেশ অনুযায়ী সরেজমিনে গিয়ে রোববার সকালে দেখা যায়, সকাল সাড়ে ৭টা থেকেই শ্রমিকরা গেইটে জড়ো হচ্ছিলো। বেলা বাড়ার সাথে সাথে শ্রমিকদের উপস্থিতিও বাড়তে থাকে। ৮টায় গেইট খুলে দেওয়ার পর ধীরে ধীরে কারখানায় প্রবেশ করেছে শ্রমিকরা। পরে প্রতিষ্ঠানটির এমডি আক্কাস উদ্দিন মোল্লার কাছে দফায় দফায় হাজিরা বোনাসসহ দাবী তুলে ধরেন, তিনিও মেনে নেন। কিন্তু বিপত্তি বাঁধে কর্মকর্তাদের উপর হামলায় জড়িত থাকা শ্রমিকের মামলা তুলে পুনরায় কারখানা বহালের দাবী নিয়ে। সকাল গড়িয়ে দুপুর হলেও শ্রমিকদের একটি পক্ষ কাজ করতে অস্বীকৃতী প্রকাশ করেন। এ সময় সাধারণ শ্রমিকদের একটি পক্ষ কারখানায় প্রবেশ করতে চাইলেও অন্যদের বাঁধার মুখে কাজে অংশ নিতে ব্যর্থ হন।
রাসেল গার্মেন্টসের এমডি আক্কাস উদ্দিন মোল্লা জানান, শ্রমিকদের সকল দাবী মেনে নিয়ে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত কাজে ফেরার অনুরোধ করেছিলাম। তা সত্যেও কিছু উশৃঙ্খল শ্রমিক বে আইনী দাবী উত্থাপন করে সাধারণ শ্রমিকদের কাজ করতে না বাঁধা প্রদান করেছেন। তাই ৩০ মে থেকে আবারও অনির্দিষ্টকালের জন্য প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে কারণ জানতে খুলনা থেকে মুঠোফোনে বিকেএমইএ’র সভাপতি সেলিম ওসমান বলেন, কোন এক শ্রমিক নেতার বিশ্বাস ঘাতকতার কারণে কারখানাটি চালু করা সম্ভব হয়নি। এতে সাধারণ শ্রমিকরা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। তারপরেও কোন সাধারণ শ্রমিক যদি শ্রমিক নেতা ছাড়া কারখানায় প্রবেশ করতে চায়, তাহলে আবারও শ্রমিকদের স্বার্থে কারখানা খোলার ব্যবস্থা করা হবে। তবে, কর্মকর্তাদের উপর হামলায় জড়িত ৩৫ শ্রমিককে আপাতত কোন ধরণের সহযোগীতা করা হবে না। আইনগত কোন সিদ্ধান্ত আসলে, সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সেলিম ওসমান আরও বলেন, শ্রমিক নেতাদের মধ্যে নেতৃত্বের দ্বন্দ্ব নিয়ে আজকের এই পরিস্থিতি। শ্রমিক অসন্তোষ নিরসনের যাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, সেও বিশ্বাস ঘাতকতা করেছে। তবে, অচিরেই কারখানার শ্রমিকদের সাথে আলোচনা করে গার্মেন্টস খুলে দেওয়া হবে। সে ক্ষেত্রে কোন বহিরাগত শ্রমিক নেতৃত্ব এখানে থাকতে পারবে না।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।