Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

পুলিশ বলছে আত্মহত্যা

৮ দিন পর শনাক্ত ঢাবি ছাত্রের লাশ

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২৫ মে, ২০২১, ১২:০০ এএম


নিখোঁজ হওয়ার ৮দিন পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র হাফিজুর রহমানের লাশ শনাক্ত করা হয়েছে। গত রোববার রাজধানীর শাহবাগ থানায় ছবি দেখে লাশটি শনাক্ত করেন তার ভাই। পুলিশ বলছে, দায়ের কোপে ‘আত্মহত্যা’ করেছেন তিনি। হাফিজুর রহমান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্যবিজ্ঞান ও গ্রন্থাগার ব্যবস্থাপনা বিভাগের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র ছিলেন তিনি।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত ঈদুল ফিতরের পরদিন ১৫ মে গ্রামের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেয় হাফিজুর রহমান। ঢাকায় ফিরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডাও দেয় সে। সর্বশেষ মায়ের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছিল হাফিজুর। এরপর থেকে তার মুঠোফোন বন্ধ। বন্ধুদের ভাষ্যমতে, সেদিন রাত আট-নয়টার দিকে হাফিজুর ব্রাহ্মণবাড়িয়া চলে যাওয়ার জন্য উদ্গ্রীব হয়ে ওঠে। ওই দিন থেকেই হাফিজুর পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যান বলে তার ভাই জানিয়েছেন। এরপর হাফিজুরের পরিবার থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়।
শাহবাগ থানার ওসি মোহাম্মদ মামুন অর রশিদ বলেন, ১৫ মে রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজের বহির্বিভাগের সামনে ভ্রাম্যমাণ ডাবের দোকান থেকে দা নিয়ে তা দিয়ে নিজের গলায় কোপ দিচ্ছিলেন ২৩-২৪ বছরের এক যুবক। তার গলা থেকে প্রচুর রক্ত ঝরছিল। কোপানোর সময় তিনি বারবার বলছিলেন, আমাকে মাফ করে দাও, আমাকে মাফ করে দাও। সেখানে থাকা পথচারীরা তাকে নিবৃত্ত করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। পরে সেখানে দায়িত্বরত শাহবাগ থানার এসআই আল আমিনসহ কয়েকজন পুলিশ সদস্য তাকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে রিকশায় উঠিয়ে ঢাকা মেডিকেলে নেয়ার চেষ্টা করেন। তখন তিনি রিকশা থেকে লাফ দিয়ে নেমে পড়েন এবং বলতে থাকেন, আমি চিকিৎসা করব না, আমাকে মাফ করে দাও। পরে অন্য লোকজনের সহযোগিতায় তাকে ঢাকা মেডিকেলে নেয়া হয়।
তিনি আরো বলেন, খবর পেয়ে ওই রাতেই তিনি ঢাকা মেডিকেলে যান। মেডিকেলে তার চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়। তাকে অপারেশন থিয়েটারে নেয়া হয়, প্রয়োজনীয় রক্তের ব্যবস্থাও করা হয়। বাঁচানোর ‘সর্বোচ্চ চেষ্টা’ করলেও রাত সাড়ে ১২টার দিকে তিনি মারা যান। পরে সিআইডি টিমসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা যান। শাহবাগ থানার ওসি বলেন, এই ঘটনার পর ভোর পাঁচ-ছয়টার দিকে বাসায় ফিরে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। তারপর দুই দিন আগে কাজে যোগ দিয়ে ছেলেটির বিষয়ে বিভিন্ন মাধ্যমে খোঁজখবর নেয়া শুরু করেন।
তিনি বলেন, সাধারণত পরিচয়হীন লাশ হলে আমরা তা আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলামকে দিয়ে দিই। কিন্তু ওই যুবকের লাশটি আমরা ঢাকা মেডিকেলের মর্গে রাখার ব্যবস্থা করি। হাফিজুর নিখোঁজ হওয়ার কথা জানিয়ে কসবা থানায় হওয়া জিডিটি গত শনিবার তাদের নজরে আসে বলে জানান শাহবাগ থানার ওসি।
ওসি বলেন, এরপর তিনি কসবা থানার ওসির সঙ্গে যোগাযোগ করেন। সেই প্রক্রিয়া থেকেই রোববার হাফিজুর রহমানের ভাই হাবিবুর রহমান শাহবাগ থানায় আসেন। তার সঙ্গে কথা বলার একপর্যায়ে লাশের ছবিটি দেখানোর সঙ্গে সঙ্গে তিনি চিৎকার দিয়ে উঠে বলেন যে এটাই তার ভাই। পরে মর্গে গিয়েও লাশ শনাক্ত করেন তিনি।
হাফিজুরের ভাই হাবিবুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, তার ভাই ১৫ মে বাড়ি থেকে বের হওয়ার পর ঢাকায় এসে বিকেলে মায়ের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন। এরপর থেকে তার মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়। শাহবাগ থানায় গেলে পুলিশ তাকে একটি লাশের ছবি দেখায়। ছবির সঙ্গে তার ভাইয়ের সাদৃশ্য পাওয়া যায়। পরে ঢাকা মেডিকেলের মর্গে গিয়ে তিনি লাশ শনাক্ত করেন। ভাইয়ের মৃত্যুর ঘটনায় কাউকে সন্দেহ করছেন কি না, জানতে চাইলে না-সূচক উত্তর দেন হাবিবুর রহমান।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: আত্মহত্যা

১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ