পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
আমাদের শত্রু, পৃথিবীর শত্রু, মানবাধিকার ধ্বংসকারী ইসরাইলের সাথে বাংলাদেশ সরকার কেন নতুন করে প্রেম করতে যাচ্ছে সে প্রশ্ন তুলেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বাংলাদেশের পাসপোর্টে ইসরাইল ব্যতীত কথাটি বাদ দেয়ার সরকারি সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, ইসরাইল শুধু মধ্যপ্রাচ্য নয়, গোটা পৃথিবীর জন্য এখন একটা হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাংলাদেশ সরকার কেনো এই নতুন করে প্রেম করতে যাচ্ছে ইসরাইলের সঙ্গে?
গতকাল রোববার গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্ত হচ্ছে ইসরাইল আমাদের শত্রু, পৃথিবীর শত্রু। কারণ তারা মানবাধিকারকে ধবংস করছে। আমরা ফিলিস্তিনকে সমর্থন করি, ফিলিস্তিন রাষ্ট্র এবং তার মানুষগুলো মানুষগুলোকে সমর্থন করি। সেখানে গত কয়েকদিনে প্রায় ১শ’ শিশুকে হত্যা করা হয়েছে। কয়েকবছর আগে প্রায় তিন লাখ শিশুকে হত্যা করা হয়েছিলো।
ইসরাইলের সাথে সরকার কোন চুক্তি করতে যাচ্ছে কিনা প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, আমি একটা যোগসূত্র দেই আপনাদের। কয়েকদিন আগে আল-জাজিরাতে একটা রিপোর্ট হয়েছিলো। সেই রিপোর্টে এসেছিলো যে, একটা বিশেষ সার্ভিলেন্সের ডিভাইস বা যন্ত্র, এই যন্ত্র অরিজিনালি ইসরাইল থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। সেজন্য এখন জনগণের মাঝে আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে তাহলে কি ইসরাইলের সঙ্গে সরকার আবারো ওই ধরনের কোনো চুক্তি করতে যাচ্ছে বা কিছু করতে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, আমরা সবাই জানি, ইসরাইল গোয়েন্দাবৃত্তিতে পৃথিবীর মধ্যে শ্রেষ্ঠ। ওটা করে কিন্তু সে এখনো মধ্যপ্রাচ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী দেশ হয়ে আছে। সুতরাং এই বিষয়গুলো জনগণ অত্যন্ত উদ্বেগের সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করছে, দেখছে, লক্ষ্য করছে যে, কোন দিকে যাচ্ছি আমরা? অলরেডি তো গেছি। অন্ধকার মধ্যযুগীয় বর্বরতার দিকে যেখানে মানুষের ন্যূনতম অধিকারটুকু থাকবে না।
ইসরাইলের বিষয়ে বিএনপির অবস্থান তুলে ধরে দলটির মহাসচিব বলেন, আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, ইসরাইলের সঙ্গে বিএনপির কোনো সম্পর্ক নেই। আমাদের অবস্থান ইসরাইল বিরোধী। আমরা স্ট্রেটকাট বলতে চাই- আমরা বরাবরই ছিলাম, এখনো আছি। বিএনপি খুব স্পষ্টভাবে বলতে চায়, ইসরাইলের এই মানবতাবিরোধী বর্বরোচিত হামলা, মধ্যপ্রাচ্যে যে অশান্তি সৃষ্টি করা এবং ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রকে একেবারে ধবংস করে ফেলা এর মূলে হচ্ছে ইসরাইল।
তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক বিশ্বের উচিত সেই ইসরাইলকে সম্পূর্ণভাবে বিরত করা এবং ফিলিস্তিনিদের স্বাধিকার ও স্বাধীন রাষ্ট্রের অধিকার নিশ্চিত করা। শুক্রবার দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সভাপতিত্বে স্থায়ী কমিটির ভার্চুয়াল বৈঠকে ফিলিস্তিনিদের ওপর ইজরায়েল বাহিনীর হামলার ঘটনার নিন্দা জানানো হয়েছে বলে জানান বিএনপি মহাসচিব।
উপ-নির্বাচনের অংশ নেবে না বিএনপি : স্থায়ী কমিটির বৈঠকের সিদ্ধান্ত তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, দেশের নির্বাচন ব্যবস্থা সম্পূর্ণভাবে ভেঙে পড়ায় এবং নির্বাচন কমিশনের অযোগ্যতায় প্রতিটি নির্বাচনে সরকারের নগ্ন হস্তক্ষেপের কারণে আগামীতে লক্ষীপুর-২, সিলেট-৩, ঢাকা-১৪, কুমিল্লা-৫ আসনে উপ-নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না বিএনপি।
ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্য প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিএনপি গণমাধ্যমের বন্ধু সেজে সাংবাদিকদের উস্কানি দিচ্ছে বলে যে বক্তব্য উনি দিয়েছেন তা মনগড়া এবং নিজেদের অপরাধগুলোকে ঢাকার জন্য। আওয়ামী লীগের সাংবাদিকতা, মুক্ত স্বাধীনতা, সংবাদপত্রের প্রতি আচরণ-ব্যবহার-এটা দেশের সকল মানুষ জানে।
ফখরুল বলেন, ১৯৭৫ সালে দেশে একদলীয় বাকশাল প্রতিষ্ঠা হয়েছিলো। সেই বাকশাল প্রতিষ্ঠার আগে থেকেই সমস্ত পত্রিকাগুলো নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছিলো। মাত্র চারটা পত্রিকা চলবে বলা হয়েছিলো, সেই চারটা পত্রিকা তাদের নিজস্ব পত্রিকা। তাতে অসংখ্য সাংবাদিক কিন্তু বেকার হয়ে গিয়েছিলেন, তারা কর্মচ্যুত হয়েছিলেন। এটা তাদের মজ্জাগত ব্যাপার তারা ভিন্নমত সহ্য করতে পারে। ৭৫’এ আইন করে সংবাদপত্র বন্ধ করেছে, ৯৬’এ দৈনিক বাংলা, বাংলাদেশ টাইমস, বিচিত্রাসহ ৪টি পত্রিকা বন্ধ করে দিয়েছিলো।
তিনি বলেন, ২০০৮-এ ক্ষমতায় এসে তারা চ্যানেল ওয়ান, ইসলামিক টিভি, দিগন্ত টিভি, একুশে টিভি আক্রমণ করেছে এবং বন্ধ করে দিয়েছে। একের পর এক আমার দেশ পত্রিকা, শীর্ষ কাগজ, ৩৭টি অনলাইন বন্ধ করে দিয়েছে। মিথ্যা অজুহাতে সম্পাদক, সাংবাদিকদের গ্রেফতার, নির্যাতন করেছে। সাগর-রুনিকে হত্যার ৯ বছর পার হলেও হত্যাকারীদের এখনো সরকার খুঁজে পায়নি।
সরকার আমলা নির্ভর হয়ে পড়েছে মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, প্রতিরাতে সরকারের মন্ত্রীরা বিএনপিকে নিয়ে দুঃস্বপ্ন দেখেন। কারণ তাদের পায়ের তলায় মাটি নেই, পেছনে মানুষের কোনো শক্তি নেই। তারা এখন আমলাতন্ত্র নির্ভর। সামরিক-বেসামরিক আমলা নিয়ে দেশ চালাচ্ছেন।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির হাবিব উন নবী খান সোহেল, শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল, তাইফুল ইসলাম টিপু, বেলাল আহমেদ, মহানগরের মুন্সি বজলুল বাসিত আনজু, কাজী আবুল বাশার, আবদুল আলিম নকি, যুব দলের শফিকুল ইসলাম মিল্টন প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন।#
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।