Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

যে কারণে গাজার হাইরাইজ ভবনগুলো ধ্বংস করছে ইসরাইল

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২০ মে, ২০২১, ৭:৩০ পিএম

অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় গত কয়েক দিন ধরে বিরামহীনভাবে হামলা চালিয়ে বড় বড় ভবনগুলো ধ্বংস করছে ইসরাইল। তার মধ্যে আল আওকাফ ভবন একটি। গত মঙ্গলবার বিকেলে ক্ষেপণাস্ত্র 'হুঁশিয়ারি' দেয়ার পরপরই ভবনটিতে বোমা হামলা চালিয়ে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করা হয়।

গাজা সিটির পশ্চিম প্রান্তে অবস্থিত এই পাঁচতলা ভবনটিতে গাজার সর্বপ্রাচীন ও সবচেয়ে বিখ্যাত মিডিয়া প্রডাকশন প্রতিষ্ঠান মাশরেকসহ বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের অফিস ছিল এখানে।

মাশরেকের ৪৩ বছর বয়স্ক নির্বাহী পরিচালক আলদ্রেইমলি বলেন, 'এটা স্রেফ একটি কোম্পানি নয়। এটা একটা স্বপ্ন। আমি স্বপ্নের জন্য কাজ করছিলাম। আমাদের কর্মী ছিল ৬০ জন।' ১৯৯৯ সালে প্রতিষ্ঠিত কোম্পানিটি বিজ্ঞাপন ও ফটোগ্রাফি, ফিল্ম প্রডাকশন ও সাউন্ড ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের কাজ করত।

তিনি বলেন, এখানে কাজ করা ছিল অনেকের কাছে স্বপ্ন। আমরা ছিলাম একটি পরিবারের মতো।

তিনি মনে করেন, ভবন ধ্বংস করার প্রভাব কেবল বস্তুগত ক্ষতির মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে না। অবশ্য, অফিসের ভেতর যেসব মূল্যবান সামগ্রী থাকে, সেগুলো বিবেচনা করলে বস্তুগত ক্ষতিও কম নয়।

গাজা সরকারের তথ্য মন্ত্রণালয়ের মতে, ১০ মে বোমা বর্ষণের পর থেকে গাজার ছয়টি হাই রাইজ ভবনের সবগুলোই ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে। হামলায় অন্তত ১৮৪টি আবাসিক ও বাণিজ্যিক ভবন ধ্বংস করা হয়েছে। আর মিডিয়ার ৩৩টি অফিস গুঁড়িয়ে দেয়া হয়েছে। ইসরাইলি বিমান হামলায় আল জাজিরা ও এপির অফিস-সংবলিত ভবন আল-জালা টাওয়ারও ধ্বংস হয়ে গেছে। ইসরাইল সাফাই হিসেবে বলছে, এখান থেকে হামাসের সামরিক কার্যক্রম পরিচালনা করা হতো। কিন্তু তারা এখন পর্যন্ত কোনো প্রমাণ দিতে পারেনি।

রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক বিশ্লেষক মোহসেন আবু রামাদান বলেন, বেসামরিক এলাকা ও অবকাঠামো ধ্বংস করা ইসরাইলের নতুন কোনো কৌশল নয়। আগের হামলাগুলোতেও তারা কাজটি করেছে। তবে এবার করা হয়েছে অনেক বেশি।

আবু রামাদান বলেন, এসব টার্গেট সাধারণ মানুষের ওপর ভয়াবহ প্রভাব সৃষ্টি করে। ইসরাইল মনে করছে, এই ক্ষতির ফলে ক্ষতিগ্রস্তরা হামাসকে ইসরাইলে রকেট হামলা বন্ধ করতে চাপ দেবে, হামাসের জনপ্রিয়তা হ্রাস পাবে। আর তাতেই লাভবান হবে ইসরাইল। কিন্তু তা হচ্ছে না। গাজা সিটির মেয়র ইয়াহিয়া আল-সারাজ বলেন, গাজার ভয়াবহ ক্ষতি করে ইসরাইল চাচ্ছে আমাদের জনগণের মনোবল, দৃঢ়প্রত্যয় গুঁড়িয়ে দিতে।

তিনি বলেন, কিন্তু আমি যত লোকের সাথে মিশেছি, বিশেষ করে যারা বাড়িঘর ও স্বজন হারিয়েছে, তারা সবাই আমার সামনে দৃঢ়প্রত্যয়ে দাঁড়িয়েছে। তারা জানে, এই আক্রমণ কেবল গাজা যুদ্ধের কারণেই হয়নি। বরং তা পশ্চিম তীর ও জেরুসালেমে ইসরাইলি দখলদারিত্বের সম্প্রসারণ পরিকল্পনার অংশ বিশেষ।

আর কেবল ভবন নয়, টেলিকমিউনিকেশন লাইন, ইলেকট্রিসিটি গ্রিড, স্যুয়ারেজ সিস্টেম, পানি সরবরাহ লাইনও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিচ এলাকার ক্যাফে, কারখানা, বাণিজ্যিক দোকানপাট, দাতব্যকেন্দ্র, কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানও রেহাই পায়নি। স্থানীয় কর্মকর্তাদের মতে, মোট ক্ষতির পরিমাণ ৩২২.৩ মিলিয়ন ডলার। মেয়র সারাজ বলেন, তারা আমাদের অর্থনীতিকে ধসিয়ে দিতে চায়। আমাদের তরুণরা যাতে আরো হতাশায় ডুবে যায়, আরো আশাহীন হয়ে পড়ে, সেজন্যই এ কাজ করা হচ্ছে। সূত্র : আল জাজিরা



 

Show all comments
  • MD AZIZ ২০ মে, ২০২১, ১১:০৯ পিএম says : 0
    INSHA ALLAH ISLAMER BIJOY HOB
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ইসরায়েল-ফিলিস্তিন


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ