বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
কাঙ্খিত বৃষ্টিপাতের অভাবের সাথে মধুমাস জৈষ্ঠের শুরুতেও অব্যাহত তাপ প্রবাহে দক্ষিণাঞ্চলের জনজীবন আবার অনেকটাই বিপর্যস্ত। গত কয়েক মাস ধরেই সমগ্র দক্ষিণাঞ্চলে বৃষ্টিপাতের পরিমান স্বাভাবিকের অনেক নিচে। সাথে তাপমাত্রার পারদও অনেক ওপরে। ফলে স্বাভাবিক জনজীবনে অস্বস্তি সহ ফসল উৎপাদনেও বিপত্তি অব্যাহত রয়েছে। বৃষ্টির অভাব সহ অব্যাহত তাপ প্রবাহে সূর্যমুখি, মুগ, ভুট্টা ও সয়াবিন সহ শাক-সবজীর উৎপাদনে মারাত্মক সংকট সৃষ্টি হয়েছে দক্ষিণাঞ্চল যুড়ে। পানি সংকটে বরগুনা এলাকায় বোরো ধানে সেচ ব্যবস্থা পর্যন্ত ব্যহত হয়েছে এবার।
চলতি মে মাসে বরিশাল অঞ্চলে স্বাভাবিক তাপমাত্রা ৩৩ ডিগ্রী সেলসিয়াস-এর স্থলে শণিবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল স্বাভাবিকের ৩.৬ ডিগ্রী বেশী, ৩৬.৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস। ঈদের দিনও বরিশালে তাপমাত্রার পারদ ৩৫.৫ ডিগ্রীতে উঠে যায়। ফলে জনজীবনে চরম অস্বস্তি অব্যাহত রয়েছে। এমনকি সর্বকালের রেকর্ড ছাপিয়ে গত ২৫ এপ্রিল বরিশালে তাপমাত্রার পারদ ছিল ৩৮.৮ ডিগ্রী সেলসিয়সে । অথচ আবহাওয়া বিভাগের হিসেবে এপ্রিল মাসে বরিশালে সর্বোচ্চ স্বাভাবিক তাপমাত্রা থাকার কথা ৩৩.৪ ডিগ্রী সেলসিয়াস। পরেরদিন সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ১.৩ ডিগ্রী হ্রাস পেয়ে ৩৭.৫ ডিগ্রীতে নামলেও তা ছিল স্বাভাবিকের ৪.১ ডিগ্রী সেলসিয়াস বেশী। গত কয়েকমাস ধরেই বৃষ্টির অভাবে জনজীবনে অস্বস্তি আর দূর্ভোগ অব্যাহত রয়েছে।
জানুয়ারীতে স্বাভাবিক ৮.৯ মিলিমিটারের স্থলে বরিশাল অঞ্চলে কোন বৃষ্টি হয়নি। ফেব্রুয়ারীতে অবহাওয়া বিভাগের হিসেবে স্বাভাবিক ২৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাতের কথা থাকলেও তার পরিমান ছিল ১ মিলিমিটার। এমনকি মার্চে ৫৭.১ মিলিমিটারের স্থলে মাত্র ০.৩ মিলি বৃষ্টি হয়েছে। যা ছিল স্বাভাবিকের ৯৯.৫% কম। গতমাসে বরিশাল অঞ্চলে ১৩২.৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাতের কথা থাকলেও আবহাওয়া বিভাগের মতে তা ছিল স্বাভাবিকের ৯৯.৬% কম। এমনকি চলতি মাসে অবহাওয়া বিভাগের দীর্ঘমেয়াদী বুলেটিনে বরিশাল অঞ্চলে স্বাভাবিক ১৭৫ মিলিমিটারের স্থলে কিছুটা কম বৃষ্টিপাতের পূর্বভাস দেয়া হলেও ১৫ মে পর্যন্ত বৃষ্টি হয়েছে ২১.৬ মিলিমিটার। গত মাসে দক্ষিণাঞ্চলে দুদফায় কাল বৈশাখী আঘাত হানলেও তার সাথে কোন বৃষ্টি ছিলনা।
এদিকে এবারের নজিরবিহীন অনাবৃষ্টির সাথে সীমান্তের ওপারে অভিন্ন নদ-নদীর প্রবাহ নিয়ন্ত্রনের ফলে গত ডিসেম্বর থেকেই সাগরের নোনা পানি উজানের নদ-নদীতে উঠে আসতে শুরু করে। গত মার্চে থেকে পরিস্থিতি যথেষ্ঠ জটিল হয়েছে। ইতোমধ্যে বঙ্গোপসাগর থেকে ১১০ কিলোমিটার উজানে বরিশালের কির্তনখেলা অতিক্রম করে চাঁদপুরের ভাটিতে হিজলা মোহনার মেঘনায় সাগরের লবনাক্ত পানি পৌছে গেছে। বরিশালের কির্তনখোলায়ই লবনাক্ততার মাত্রা ১২শ পিপিএম অতিক্রম করেছে।
পানি উন্নন বোর্ডের দায়িত্বশীল সূত্রের মতে, সীমান্তের ওপারে অভিন্ন নদ-নদীর পানির একতরফা প্রত্যাহার বন্ধ সহ স্বাভাবিক বৃষ্টি না হলে তাপমাত্রার পারদ নিচে নামার যেমনি সম্ভবনা নেই, তেমনি সাগরের লবনাক্ত পানি উজানে উঠে আসাও বন্ধ হবেনা।
শণিবার সকাল ৯টায় আবহাওয়া বিভাগের পূর্বভাসে দক্ষিণাঞ্চলে বৃষ্টিপাতের কোন পূর্বাভাস দেয়া হয়নি। তবে শণিবার বিকেলের দিকে বরিশালের আকাশে কিছুটা মেঘের ঘনঘটা লক্ষ করা গেলেও বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত কোন বৃষ্টি হয়নি। ছিল ভ্যাপসা গরম। আবহাওয়া বিভাগ থেকে যশোরÑখুলনা অঞ্চলের মৃদু তাপপ্রবাহ বিস্তার লাভ সহ সারা দেশে দিনের তাপমাত্রা ১-২ ডিগ্রী সেলসিয়াস এবং রাতে সামান্য বৃদ্ধির কথা বলা হয়েছে। পাশাপাশি আগামী ৩দিন তাপমাত্রা আরো বৃদ্ধির কথাও জানিয়ে পশ্চিমা লঘুচাপের বর্ধিতাংশ ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া বিভাগ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।