পবিত্র লাইলাতুল বরাত
আজ দিবাগত রাত পবিত্র লাইলাতুল বরাত। পরম করুণাময় আল্লাহতায়ালা তার বান্দাদের গুনাহ মাফ, বিপদমুক্তি ও
আরবি ক্যালেন্ডারের নবম মাস রমজান। এ মাসের চাঁদ দেখার সঙ্গে সঙ্গে গোটা মুসলিম বিশ্বে শুরু হয় সাওম বা রোজা। এর পরিসমাপ্তি ঘটে আরবি দশম মাস শাওয়ালের আনন্দঘন ঈদের বাঁকা চাঁদ দেখে। একটানা এক মাস সুবহে-সাদেক থেকে সূর্যাস্ত অবধি চলে পানাহার-সহবাস প্রভৃতি জৈবিক, মানবিক চাহিদা ও প্রয়োজন পূরণ থেকে বিরত থাকার সংযম সাধনা। রোজার বিধান প্রায় সব ধর্মে বিদ্যমান থাকলেও এক নাগাড়ে এক মাস অত্যন্ত নিষ্ঠার সঙ্গে রোজা পালন কেবলমাত্র ইসলামেরই বৈশিষ্ট্য ও অলঙ্কার।
রমজানুল মোবারকের মাসব্যাপী রোজার গুরুত্ব ইসলামে অপরিসীম। এটা ইসলামের অন্যতম একটা ভিত। সেই সঙ্গে একটি মহান এবাদত। বিশ্বনবী মুহাম্মদ (স.) বলেন: ইসলামের মহান সৌধ পাঁচটি ভিতের উপর প্রতিষ্ঠিত। সেগুলো হচ্ছে যথাক্রমে-(১) আল্লাহ ব্যতীত কোনো উপাস্য নেই এবং মুহাম্মদ (স.) তার প্রেরিত পুরুষ- এ সাক্ষ্য প্রদান, (২) নামাজ প্রতিষ্ঠা, (৩) যাকাত প্রদান, (৪) হজ্ব এবং (৫) রমজানের রোজা।
ইসলামে রোজার গুরুত্ব কত বেশি তা উপরোক্ত হাদিস থেকে সহজেই অনুমেয়। বিশেষজ্ঞ আলেমদের মতে, কেউ যদি রোজা পালন না করে তাহলে সে হবে গুণাহগার, পাপী। কিন্তু কেউ যদি রোজার অবশ্য পালনীয়তা (ফরজিয়েত)-কে প্রত্যাখ্যান করে তাহলে তার ঈমানই থাকবে না। রোজার বিধান সম্পর্কে আল্লাহতায়ালা পবিত্র কুরআনে বলেন: ‘হে বিশ্বাসীগণ ! তোমাদের উপর রোজা ফরজ করা হল, যেমন তোমাদের পূর্ববর্তীগণের উপর ফরজ করা হয়েছিল, যাতে তোমরা মুত্তাকী হয়ে যেতে পার। এ রোজা নিদিষ্ট ক’দিনের জন্য মাত্র। তবে তোমাদের মধ্যে কেউ অসুস্থ হলে অথবা প্রবাসে থাকলে অন্য সময় এ সংখ্যা পূরণ করে নিতে হবে। আর যে ব্যক্তির রোজা পালন দুঃসাধ্য তার পক্ষে একটি রোজার পরিবর্তে একজন অভাবগ্রস্তকে অন্নদান করা কর্তব্য। তবুও যদি কেউ নিজের খুশিতে পূণ্য কাজ করে তবে তার পক্ষে অধিক কল্যাণকর এবং যদি তোমরা উপলদ্ধি করতে পারতে তবে বুঝতে, রোজা পালন তোমাদের জন্য অধিক কল্যাণপ্রসূ। সূরা আল বাকারা, আয়াত- ১৮৩-১৮৪।
পবিত্র কুরআনে রোজা সম্পর্কিত উপরোক্ত আয়াত দু’টিতে অনেক বিষয় এসেছে। পূববর্তী এবং বর্তমান শরিয়তে রোজার বিধান, রোজার উদ্দেশ্য, সময়সীমা, অসুস্থ ও মুসাফিরের রোজার বিধান, অক্ষমের ফিতরা দান প্রভৃতি অনেক বিষয় আয়াত দু’টিতে এসেছে। প্রতিটি বিষয় যথেষ্ট বিশ্লেষণ সাপেক্ষ। আমরা এখানে শুধুমাত্র তুলে ধরব আমাদের শরিয়তে রোজা ফরজ হওয়ার বিষয়কে। ইসলামের প্রথমদিকে অর্থাৎ রাসুলুল্লাহ (স.) এর মক্কার জীবনে রোজা ফরজ হয়নি। ফরজ হয়েছে পরে। মদিনা জীবনের দ্বিতীয় বছরে। বিশ্বনবী (স.)-এর মক্কা জীবনের প্রথম ‘দশ বছর’ প্রধানত নিয়োজিত ছিল ঈমান প্রচার ও প্রতিষ্ঠার কাজে। দশম বছর ইসলামের অন্যতম ভিত দৈনিক পাঁচ বেলা নামাজ ফরজ হয়। ত্রয়োদশ বছরে রাসুলুল্লাহ (স.) ইসলামবিরোধীদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে আল্লাহতায়ালার আদেশে জন্মস্থান মক্কা শরিফ ত্যাগ করে মদিনা শরিফ হিজরত করে চলে যান। ওখানেই রোজা, হজ্ব, যাকাত ইত্যাদি ইসলামের অধিকাংশ বিধানাবলী সম্বলিত পবিত্র কুরআনের আয়াত অবতীর্ণ হয়। হিজরতের দু’বছর পর নামাজ ফরজ হয়। নামাজ ফরজ হওয়ার পাঁচ বছর পর মাহে রমজানুল মোবারকের রোজা ফরজ সংক্রান্ত উপরোক্ত আয়াতদ্বয় অবতীর্ণ হয়। সেই থেকে মুসলমানরা আল্লাহতায়ালার দেওয়া রোজার বিধান নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করে আসছে।
বিশ্বনবী (স.)-এর নবুওয়াত প্রাপ্তির পনেরো বছরের সময় পবিত্র মাহে রমজানুল মোবারকের রোজা ফরজ হয়। এর অর্থ এই নয় যে, এর আগে রাসুলুল্লাহ (স.) এবং সাহাবাগণ কখনও রোজা রাখেননি। মাহে রমজানুল মোবারকের রোজা ফরজ হওয়ার আগেও রাসুলুল্লাহ (স.) এবং সাহাবাগণ রোজা রেখেছেন। পবিত্র কুরআনের প্রখ্যাত ভাষ্যকার ইবনে জাবির তবরী (রা.) জামিউল রমান ফি ‘তাফসিরুল কুরআন’ নামক তাফসির গ্রন্থে বিখ্যাত সাহাবি হযরত মুয়াজ ইবনে জাবাল (রা.) থেকে বর্ণনা করে লিখেছেন, রাসুলুল্লাহ (স.) মদিনায় আসার পর আশুরা এবং প্রত্যেক মাসে তিনটি করে রোজা রাখতেন। অতঃপর ‘হে বিশ্বাসীগণ। তোমাদের উপর রোজা ফরজ করা হল’ এ আয়াত অবতীর্ণ হয়। ইমাম ইবনে কাসীর (র.) এ সম্পর্কে তাফসিরুল কুরআনিল আজিম নামক তাফসীর গ্রন্থে লিখেছেন, ইসলামের প্রথম দিকে প্রতিমাসে তারা (সাহাবাগণ) তিনটি করে রোজা রাখতেন। অতঃপর তা মাহে রমজানুল মোবারকের রোজা ফরজ হওয়ার মাধ্যমে মনসুখ (রহিত) হয়ে যায়। মাহে রমজানের রোজা ফরজ হওয়ার আগে রাসুলুল্লাহ (স.) এবং সাহাবাগণ আশুরাসহ প্রতিমাসে তিনটি করে যে রোজা রাখতেন তা কী রকম রোজা ছিল, এ সম্পর্কে পবিত্র কুরআন ও হাদিস বিশেষজ্ঞ আলেমগণের দুটি অভিমত রয়েছে।
(১). সে রোজাও ফরজ ছিল। (২). তা ফরজ নয়, নফল ছিল। প্রথমোক্ত অভিমত খন্ডন করে ইমাম ইবনে জাবির (র.) তার পূর্বোক্ত তাফসির গ্রন্থে লিখেছেন, ‘মাহে রমজানুল মোবারকের রোজা ফরজ হওয়ার পূর্বে অন্য রোজা মুসলমানদের উপর ফরজ ছিল এবং রমজানের রোজা ফরজ হওয়ার মাধ্যমে পূর্ববর্তী রোজা ‘মনসুখ’ (রহিত) হয় বলে যে অভিমত প্রচলিত আছে তা গ্রহণযোগ্য কোনো তথ্য-প্রমাণ দ্বারা প্রতিষ্ঠিত নয়। আশুরাসহ প্রতিমাসে তিনটি রোজা নফল হিসাবে রাখা হতো।’ উপরোক্ত আলোচনা থেকে এটা স্পষ্ট যে, দ্বিতীয় হিজরিতে মাহে রমজানের রোজা ফরজ হওয়ার আগেও রাসুলুল্লাহ (স.) এবং সাহাবাগণ ফরজ অথবা নফল হিসাবে রোজা রেখেছেন। মাহে রমজানের রোজা ফরজ হওয়ার পর প্রথমাবস্থায় বিধান ছিল ইফতারের পর রমজানের রাতে ঘুমাবার আগ অবধি পানাহার-সহবাস সব কিছু বৈধ। একবার ঘুমিয়ে পড়লেই শেষ। পরের দিন সূর্যাস্ত পর্যন্ত খানাপিনা, সহবাস সব কিছু নিষিদ্ধ। রাত থেকেই শুরু করে দিতে হতো রোজা। মাহে রমজানুল মোবারকের রাত্রিকালীন এ বিধান রহিত হয়ে পরবর্তীতে শিথিল হয়। রাতের এ বিধান রহিত হওয়ার পেছনে স্মরণীয় হয়ে আছে দু‘জন সাহাবির দুটি ঘটনা। প্রথম ঘটনাটি হচ্ছে কায়স ইবনে সারমা নামের একজন আনসারি সাহাবীর। ইমাম ইবনে কাসিব লিখেছেন, ওই সাহাবি রোজা রেখে নিজ খামারে কাজ করছিলেন। ইফতারের সময় হলে তিনি বাড়ি ফিরলেন। স্ত্রীকে বললেন, খাবার কিছু আছে? স্ত্রী বললেন না, কিছু নেই। তবে বের হচ্ছি, খুঁজে নিয়ে আসব কিছু একটা। স্ত্রী পড়শিদের থেকে খাবার নিয়ে এসে দেখেন, পরিশ্রান্ত স্বামী ঘুমিয়ে পড়েছেন। স্ত্রী আক্ষেপের সুরে বললেন, হায়- ‘ঘুমিয়ে পড়লে’! সাহাবির খাওয়া হল না। বিধান অনুযায়ী, আবার রোজা শুরু হয়ে গেল। পরের দিন দুপুরে এই মহান সাহাবি ক্ষুধায়-পিপাসায় অজ্ঞান হয়ে পড়েন। দ্বিতীয় ঘটনাটি হচ্ছে দ্বিতীয় খলিফা হযরত উমর আল ফারুক (রা.) এর।
রমজানুল মোবারকের রাতে তাঁর একটি অঘটন ঘটে যায়। ঘুম থেকে উঠে তিনি সহবাস করে ফেলেন। অনুতপ্ত চিত্তে বিশ্বনবী (স.)-র সকাশে গিয়ে ঘটনার কথা বলেন। এ দুটি ঘটনার পর রোজার রাত্রিকালীন বিধানে শিথিলতা আসে। শিথিলতার বিধান সম্বলিত আয়াত অবতীর্ণ হয়। আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘রোজার রাতে তোমাদের জন্য স্ত্রী-সম্ভোগ বৈধ (হালাল) করে দেওয়া হল। তারা তোমাদের পোশাক এবং তোমরা তাদের পোশাক। আল্লাহ জানেন তোমরা আত্মপ্রতারণা করছ। তাই তিনি তোমাদের প্রতি সদয় হয়েছেন এবং তোমাদের অপরাধ ক্ষমা করেছেন। অতএব, এখন তিনি তোমরা তোমাদের জন্য যা লিখে রেখেছেন তা কামনা কর। আর তোমরা পানাহার কর যতক্ষণ রাত্রির কৃষ্ণ রেখা হতে ঊষার শুভ্ররেখা স্পষ্টরূপে প্রতিভাত হয় না। অতঃপর রাত পর্যন্ত রোজা পূর্ণ কর।’ সুরা আল বাকারা, আয়াত ১৮৭।
শরিয়ত বিশেষজ্ঞ আলেমরা ইসলামি এবাদতসমূহকে চারটি প্রধান ভাগে বিভক্ত করে থাকেন। সেগুলো হচ্ছে যথাক্রমে (১) আত্মিক, (২) দৈহিক, (৩) আর্থিক ও (৪) আর্থ-দৈহিক। নামাজ ও রোজা হচ্ছে সম্পূর্ণ দৈহিক এবাদত। রোজা আরবি নয়, ফার্সি শব্দ। রোজার আরবি সিয়াম। সিয়াম শব্দের অর্থ বিরত থাকা। শরিয়তে সুবহে সাদেক থেকে সূর্যাস্ত পর্যস্ত নিয়ম সহকারে পানাহার ও স্ত্রী-সহবাস থেকে বিরত থাকার নাম সিয়াম বা রোজা। এর কোনো একটিতে বিচ্যুাতি ঘটলে রোজার ন্যূনতম অস্তিত্বও টিকে থাকে না। রোজার ন্যূনতম অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার নাম কিন্তু সার্থকতা নয়। রোজার আসল সার্থকতা নিহিত রয়েছে যাবতীয় দৈহিক ও মানসিক অপকর্ম ও অসৎ চিন্তা-ভাবনা পরিহার করে চলার মধ্যে। রোজার সার্থকতা মাত্রা নির্ভর করে অপকর্ম ও অসৎ চিন্তা-ভাবনা পরিহারের মাত্রার উপর। যতটুক পরিহার ততটুকু সার্থকতা ও সফলতা।
বিশ্ববিখ্যাত ইসলামি চিন্তাবিদ ও দার্শনিক ইমাম গাজ্জালি (র.) রোজাকে বিভাজিত করেছেন তিনটি স্তরে। যথা: নি¤œ, মধ্যম ও উচ্চস্তরের রোজা। খাদ্য, পানীয় ও সহবাস থেকে বিরত থাকা হচ্ছে নি¤œস্তরের রোজা, মধ্যস্তরের রোজা হচ্ছে পানাহার, সহবাস পরিহারের সঙ্গে সঙ্গে সমস্ত অঙ্গ-প্রতঙ্গকেও পাপকর্ম থেকে বিরত রাখা। ইমাম গাজ্জালি (র.)-এর মতে, একজন রোজাদারকে মধ্যস্তরের রোজাদারে উপনীত হতে হলে তাকে কমপক্ষে ছয়টি কাজ অত্যন্ত সতর্কভাবে অবশ্যই পালন করতে হবে। দৃষ্টি অবনত রাখতে হবে। সেইসঙ্গে নিন্দিত নিষিদ্ধ তথা যা কিছু অন্তরকে আকৃষ্ট করে আল্লাহতালার জিকির থেকে দূরে সরিয়ে রাখে, সেসব দৃশ্যাদি থেকে দৃষ্টিকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে।
বিশ্বনবীর (স.) কথায়, দৃষ্টি হচ্ছে শয়তানের একটি হাতিয়ার। যে ব্যক্তি আল্লাহতায়ালার ভয়ে দৃষ্টিকে বাঁচিয়ে রাখবে তাকে আল্লাহতায়ালা এমন ঈমান দান করবেন, যার স্বাদ সে তার অন্তরে অনুভব করবে। রোজাদারের দৃষ্টি সংযত রাখার উপর গুরুত্ব আরোপ করে। বিশ্বনবী (স.) অন্য এক হাদিসে বলেন, ‘পাঁচটি কর্মে রোজাদারের রোজা বিনষ্ট হয়ে যায়। সেগুলো হচ্ছে যথাক্রমে (১). মিথ্যা কথা, গিবত অর্থাৎ কারও অনুপস্থিতিতে তার সম্বন্ধে এমন কথাবার্তা বলা, যা তার কাছে অপ্রিয় ঠেকে, চুকলিখোরি, মিথ্যা শপথ এবং কামপূর্ণ দৃষ্টিপাত। (২). জিহবাকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে রোজাদারকে। অর্থাৎ বাজে কথাবার্তা, মিথ্যা কথন, পরনিন্দা, চুকলিখোরি, গালাগালি, ঝগড়া-বিবাদ ইত্যাদি অনর্থক কাজ থেকে বিরত থাকতে হবে। সেইসঙ্গে যত বেশি সম্ভব আল্লাহতায়ালার জিকির-আজকার, তিলাওয়াতে কুরআন-নফল নামাজ প্রভৃতি পূণ্যকর্মে নিয়োজিত থাকতে হবে অথবা নীরব থাকতে হবে। (৩). নিজ কর্ণকুহরকেও বাঁচাতে হবে রোজাদারকে। অর্থাৎ যা কিছু মুখ দিয়ে উচ্চারণ নিষিদ্ধ তা শোনাও নিষিদ্ধ। (৪). একইভাবে পাপকর্ম থেকে বিরত রাখতে হবে দেহের অন্যান্য অঙ্গ-প্রত্যঙ্গকে। (৫) ইফতারের সময়ও সতর্ক ও সংযত থাকতে হবে। সারাদিন বৈধ খাবার থেকে বিরত থেকে ইফতারের সময় অসতর্ক হয়ে অবৈধ খাবার দিয়ে ইফতার করলে সব মাটি হয়ে যাবে। হালাল খাদ্য দিয়ে অবশ্যই ইফতার করতে হবে। হালাল খাদ্যের উপর হুমড়ি খেয়ে পড়লে চলবে না। হালাল খাবার গ্রহণেও সংযত থাকতে হবে। অধিক পরিমাণ গ্রহণ থেকে বিরত থাকতে হবে। এতে রোজার উদ্দেশ্য নষ্ট হয়ে যায়। সর্বোপরি সারাদিন নিষ্ঠার সঙ্গে রোজা পালনের পরও ইফতারান্তে আল্লাহতায়ালার কাছে গৃহীত হচ্ছে কিনা সে ভয় অন্তরে অবশ্যই থাকতে হবে। আত্মতুষ্টিতে ভুগলে চলবে না। মধ্যস্তরের রোজায় উন্নীত হতে এসব কাজ রোজাদারকে অবশ্যই পালন করতে হবে। এর কোনও একটির বিচ্যুাতি ঘটলে এ স্তরের রোজা নষ্ট হয়ে যায়। তবে নিম্ন বা প্রাথমিকস্তরের রোজা হিসাবে টিকে থাকে। ইমাম গাজ্জালি (র.) বলেন, ‘এরূপ রোজা হচ্ছে সালেহীনদের (পূণ্যবান) রোজা।’ ইমাম গাজ্জালি (র.)-এর মতে, নবী, রাসূল ও সিদ্দিকীনদের রোজা হচ্ছে সর্বোচ্চস্তরের রোজা। এই স্তরে উন্নীত হতে রোজাদারকে দৈহিক রোজার পাশাপাশি আত্মিক রোজাও পালন করতে হবে। অর্থাৎ দৈহিকভাবে পাপকর্ম পরিহারের সঙ্গে নিজ অন্তরাত্মাকেও পবিত্র রাখতে হবে যাবতীয় অসৎ চিন্তা-ভাবনা থেকে। সেই সঙ্গে ‘মুমিনের আত্মা আল্লাহতায়ালার আর’শকে কানায় কানায় ভরে রাখতে হবে সুস্থ, সৎ, অনাবিল পবিত্র চিন্তা-ভাবনা দিয়ে। পরিপূর্ণ করে রাখতে হবে মাহে রমজানুল মোবারকের এবাদত রোজার চরম সার্থকতা-সফলতা। প্রাপ্তি? মহান আল্লাহতায়ালা বলেন, রোজা আমার জন্য, আমি-ই রোজার প্রতিদান।’
লেখক: সাংবাদিক ও কলামিস্ট
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।