Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

নিউজিল্যান্ড ৩২-০ বাংলাদেশ!

ইমরান মাহমুদ | প্রকাশের সময় : ২ এপ্রিল, ২০২১, ১২:০৬ এএম

বৃষ্টি যেন স্বস্তি নিয়েই এসেছিল বাংলাদেশের জন্য। ম্যাচটি মাঠে না গড়ালে অন্তত আরেকটি হোয়াইটওয়াশের লজ্জা থেকে বাঁচতে পারতো নিউজিল্যান্ড সফরকারী দলটি। তবে ভাগ্য এতটা সহায় নয়। ব্যর্থতার সফরে শেষটাও হলো হতাশাজনক। ১০ ওভারের ম্যাচেও বাংলাদেশ হারলো ৬৫ রানে! ১৪২ রান তাড়া বাংলাদেশের বাস্তবতায় ছিল ভীষণ কঠিন। কিন্তু লড়াইয়ের ছাপটুকুও রাখতে পারল না ব্যাটসম্যানরা।
নির্ধারিত কার্টেল ওভারে ৪ উইকেটে স্বগতিকদের তোলা ১৪১ রানের জবাবে ৯.৩ ওভারে ৭৬ রানেই গুটিয়ে যায় ম্যাচে একটি বারের জন্য লড়িয়ে মানুষিকতা না দেখানো বাংলাদেশ। ওয়ানডের পর ছোট ফরম্যাটের সিরিজটিও ৩-০ ব্যবধানে জিতেছে নিউজিল্যান্ড। ব্যাটে-বলে অলরাউন্ড পারফরম্যান্সে কিউইরা শেষ করল অসাধারণ এক মৌসুম। ব্ল্যাকক্যাপসদের তাদের মাটিতে হারানোর আশা এবারও পূরণ হলো না বাংলাদেশের। তিন সংস্করণ মিলিয়ে টানা ৩২ হারের লজ্জা নিয়েই দেশে ফিরতে হবে রাসেল ডমিঙ্গোর শিষ্যদের।
এত সহজে ম্যাচের চিত্র ফুটিয়ে তোলা গেলেও মাঠের লড়াই ছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন। এই ম্যাচে নিয়মিত অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ খেলেননি চোটের কারণে। চোটে আগেই ছিটকে গিয়েছিলেন মুশফিকুর রহিম। তামিম ইকবাল ব্যক্তিগত কারণে ওয়ানডে সিরিজের পরই ফিরে এসেছিলেন দেশে। ১৬ বছর পর তাই পাঁচ বড় তারকাকে ছাড়া নেমেছিল বাংলাদেশ। তবে নতুন এই পথচলা হয়েছে দুঃস্বপ্নের মতো!
অকল্যান্ডের ইডেন পার্কে খেলার অর্ধেকেই ম্যাচ নিউজিল্যান্ডের হাতে তুলে দেন সফরকারী বোলাররা। লক্ষ্য কঠিন হলেও লড়াই জমিয়ে বিনোদন দেওয়া যেত। প্রায় অসম্ভবের কাছাকাছি রান তাড়ায় নেমে সৌম্য সরকার টিম সাউদিকে দুই চারে ভাল কিছুর আভাস দিয়েছিলেন। কিন্তু এরপর ওই ওভারেই দুই উইকেট নেই। পঞ্চম বল সৌম্যের প্যাডে লেগে উঠলে তা দারুণ ক্ষিপ্রতায় ছুটে গিয়ে হাতে জমান সাউদি, ব্যাট-প্যাড ক্যাচের রায় দিলেও যথেষ্ট রিপ্লে না দেখে টিভি আম্পায়ারের নেওয়া সিদ্ধান্তে বিতর্ক থেকেছে। কিন্তু কোন বিতর্ক নেই লিটনের বাজে বিদায়ে। অধিনায়ক হিসেবে বড় উপলক্ষ ছিল তার। কিন্তু প্রথম বলেই স্কুপ করতে গিয়ে হয়েছেন বোল্ড।
অ্যাডাম মিলনেকে দুই ছক্কায় উড়িয়েছিলেন নাঈম শেখ। কিন্তু এরপর কয়েকটি ডটবল দিয়ে চাপ বাড়িয়ে ফেলেন তিনি। আউট হয়েছেন ১৩ বলে ১৯ করে। একাদশে ফিরে নিজেকে এবারও চেনাতে পারেননি নাজমুল হোসেন শান্ত। ৬ বল খেলে তার সংগ্রহ ৮ রান। মেরেছেন ১টি চার। আফিফ হোসেনও করেছেন সমান রান। চারের বদলে তিনি মেরেছেন একটি ছক্কা। ৬ষ্ঠ ওভারে তার বিদায়ে ৫২ রানেই ৬ উইকেট হারিয়ে ফেলে সফরকারীরা। এরপর খেলার বাকি কিছু ছিল না। বাংলাদেশ ১০ ওভারের মধ্যেই গুটিয়ে যায় কীনা এমন শঙ্কাই বরং ঘিরে ধরেছিল। এই শঙ্কা শেষ ওভারে গিয়ে সত্যিও হয়েছে। তবে অলআউট না হলেও বিবর্ণ দশার আসতে যেত না কিছু। সিরিজে প্রথমবার সুযোগ পেয়ে ১৩ রানে ৪ উইকেট নেন অ্যাস্টল। কেন উইলিয়ামসনের অনুপস্থিতিতে সিরিজে দলকে নেতৃত্ব দেওয়া সাউদি ৩ উইকেট নেন ১৫ রানে।
এর আগে টস হেরে ব্যাটিং স্বর্গে নেমে খুনে হয়ে উঠেন মার্টিন গাপটিল আর ফিন অ্যালেন। তাদের বিস্ফোরক হতে দিয়ে বোলাররা ছিলেন সাদামাটা। ফিল্ডাররা ছিলেন উদার। তাদের হাত গলে বেরিয়েছে ৫টি ক্যাচ! যার মধ্যে ১৯, ২৯ ও ৫০ রানের পর ৬৯- চার বার জীবন পাওয়া অ্যালেন খেলেন ৭১ রানের ঝড়ো ইনিংস, গাপটিলের ব্যাট থেকে আসে ৪৪ রানের ক্যামিও। বাংলাদেশের হয়ে একটি করে উইকেট নেন তাসকিন আহমেদ, শরিফুল ইসলাম ও মেহেদী হাসান।
সংক্ষিপ্ত স্কোর : টস, বাংলাদেশ
নিউজিল্যান্ড : ১০ ওভারে ১৪১/৩ (গাপটিল ৪৪, অ্যালেন ৭১, ফিলিপস ১৪, মিচেল ১০, চ্যাপম্যান ০; নাসুম ০/২৯, তাসকিন ১/২৪, শরিফুল ১/২১, রুবেল ০/৩৩, শেখ মেহেদী ১/৩৪)।
বাংলাদেশ : ৯.৩ ওভারে ৭৬ (নাঈম ১৯, সৌম্য ১০, লিটন ০, শান্ত ৮, আফিফ ৮, মোসাদ্দেক ১৩, শেখ মেহেদী ০, শরিফুল ৬, তাসকিন ৫, রুবেল ৩*, নাসুম ৩; সাউদি ৩/১৫, মিলনে ১/২৪, ফার্গুসন ১/১৩, অ্যাস্টল ৪/১৩, ফিলিপস ১/১১)।
ফল : নিউজিল্যান্ড ৬৫ রানে জয়ী।
ম্যাচ সেরা : ফিল অ্যালেন। সিরিজ : তিন ম্যাচে নিউজিল্যান্ড ৩-০ ব্যবধানে জয়ী। সিরিজ সেরা : গ্লেন ফিলিপস।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বাংলাদেশ


আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ