Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

হাজার চুরির পর ধরা

চট্টগ্রামে ২০টি চোরাই মোটরসাইকেলসহ গ্রেফতার ৯

চট্টগ্রাম ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ২৮ মার্চ, ২০২১, ১২:০১ এএম

ওদের হাতে আছে বিশেষ চাবি। এই চাবি দিয়ে নিমিষেই খোলা যায় লক করা যে কোন মোটর সাইকেল। দ্রুত এসব মোটরসাইকেল চলে যায় নির্ধারিত কিছু গ্যারেজে। সেখানে কিছু ঘষা মাঝার পর তা বিক্রি হয় বিভিন্ন এলাকায়। এমন হাজার খানেক মোটরসাইকেল চুরির পর ধরা পড়েছে একটি চক্রের মূলহোতাসহ নয় জন। তাদের হেফাজত থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ২০টি চোরাই মোটরসাইকেল।
গতকাল শনিবার ভোর পর্যন্ত টানা ৪৮ ঘণ্টার অভিযানে চট্টগ্রামের সীতাকুন্ড, ফটিকছড়ির ভুজপুর, পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়ির রামগড় আর কুমিল্লার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের পাকড়াও করে কোতোয়ালী থানার একাধিক টিম। সন্দেহজনক একটি মোটরসাইকেলের সূত্র ধরে জিজ্ঞাসাবাদেই মোটরসাইকেল চোর চক্রের এই বিশাল চক্রটি ধরা পড়ে পুলিশের হাতে।

গতকাল অভিযানের বিবরণ দিয়ে নগর পুলিশের উপ-কমিশনার এস এম মেহেদী হাসান বলেন, এই চক্রটির শক্তিশালী নেটওয়ার্ক আছে। তারা মোটরসাইকেল চুরি ও বিক্রি করে আসছে দীর্ঘদিন থেকে। এই চক্রের বাকি সদস্যদের ধরতে অভিযান চলছে বলেও জানান তিনি। গ্রেফতারকৃতরা হলেন- মিল্টন সরকার ওরফে মিল্টন কুমার সাহা ওরফে মো. সোহেল (৪৪), মেহেদী হাসান (১৯), আনোয়ারুল ইসলাম (৩৭), রফিকুল ইসলাম রিপন (৩৮), মো. ওবায়দুল কাদের (৪২), মাহমুদুল হাসান (২৪), মো. শাখাওয়াত হোসেন (৩৫), মো. রিয়াজ (২৫) ও শাহাদাত হোসেন সাজ্জাদ (২৭)।

পুলিশ জানায়, গত ২৫ মার্চ কোতোয়ালী থানার কদমতলী মোড়ে থেকে নাম্বার প্লেট বিহীন একটি মোটরসাইকেল দেখে কাগজপত্র ঠিক আছে কিনা জানতে চায় পুলিশ। কিন্তু জিজ্ঞাসাবাদে গাড়ীর দখলদার মিল্টন সরকার ও মেহেদী হাসান কোন সঠিক উত্তর দিতে পারেনি। এতে পুলিশের সন্দেহ হলে মোটরসাইকেলটি আটক করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে মেহেদী হাসান জানান, কাগজপত্র বিহীন আরো একটি মোটরসাইকেল ডবলমুরিং থানার কদমতলী মোড়স্থ সিয়াম বাইক সার্ভিসের সামনে আছে। পরে লাল রংয়ের হিরো হোন্ডা কোম্পানীর ১৫০ সিসির ওই মোটরসাইকেল আটক রা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে মিল্টন সরকার জানান, কাগজপত্রবিহীন আরো একটি মোটরসাইকেল সীতাকুন্ডের আনোয়ারের কাছে আছে। সাতটি আছে বড় দারোগা হাটের ওবায়দুল কাদেরের কাছে। দুটি ডিসকভার মোটরসাইকেল নাঙ্গলকোর্ট এলাকার মাহমুদুল হাসানের কাছে আছে। আর রামগড় এলাকার রুবেল হোসেনের কাছে আছে একটি। এভাবে পুুলিশ একে একে ২০টি মোটরসাইকেল উদ্ধার করে।

ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় মিল্টন সরকার এবং রফিকুল ইসলাম রিপন চট্টগ্রাম মহানগরীসহ দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে লক করা মোটরসাইকেল বিশেষ কায়দায় তৈরি মাস্টার কি ব্যবহার করে দ্রুততম সময়ে লক খুলে চুরি করে নিয়ে যায়। চোরাই মোটরসাইকেলগুলো থেকে মিল্টন সরকার কিছু মোটরসাইকেল কদমতলী বুলুর গ্যারেজে মেহেদী হাসানের মাধ্যমে বিক্রির জন্য জমা রাখেন। আনোয়ারুল ইসলাম চোরাই মোটরসাইকেল মিল্টন সরকার এবং রফিকুল ইসলাম রিপনের কাছ থেকে কিনে মো. ওবায়দুল কাদেরের গ্যারেজে রেখে ওবায়দুল কাদের ছাড়াও মো. শাখাওয়াত হোসেন ওরফে রুবেল হোসেন, মাহমুদুল হাসান, শাহাদাত হোসেন সাজ্জাদ, রাশেদুল ইসলাম মজুমদার, শাহিন উদ্দিন, মনির ওরফে বড় মনির, মনির ওরফে পিচ্ছি মনিরদের কাছে বিক্রি করে আসছেন। রফিক ও মিল্টনের মধ্যে পরিচয় হয় জেলখানায় । সেখানে বসে তারা একটি নেটওয়ার্ক গড়ার পরিকল্পনা করে। সে মোতাবেক তারা চুরি করে চোরাইকৃত মোটরসাইকেল আনোয়ারের কাছে বিক্রি করে আসছে। তারা পেশাদার চোর। মুলহোতা রফিকুল ইসলাম রিপন। তাদের কাছ থেকে মোটররসাইকেল ছাড়াও আটটি ইঞ্জিন লক, গাড়ির ১৯টি সিটলক, অন্যান্য কোম্পানির সাতটি সিটলক, চারটি অয়েল ট্যাংক লক ও বিভিন্ন ধরনের ৪৫টি চাবি পাওয়া যায়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: চট্টগ্রাম

৩০ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ