Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী সতর্ক অবস্থানে

ঢাকাসহ সারাদেশে বিজিবি মোতায়েন হরতালে নাশলতা বা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর হামলার চেষ্টা করা হলে ছাড় দেয়া হবে না

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২৮ মার্চ, ২০২১, ১২:০১ এএম

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সফরকে কেন্দ্র করে চলমান আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে নাশকতা বা পুলিশের উপর হামলার বিষয়ে ডিএমপিসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় কর্মরত পুলিশ সদস্যদের সতর্ক থাকতে বিশেষ নির্দেশ দেয়া হয়েছে। একই সাথে সারাদেশে মোতায়েরনকৃত বিজিবির সদস্য আইন-শৃংখলা বাহিনীকে সহায়তা করতে মাঠে রয়েছে। গত শুক্রবার রাতে পুলিশ সদরদফতর ও ডিএমপি সদরদফতর থেকে বিশেষ এ নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। ডিএমপির কন্ট্রোল রুম থেকে রাজধানীতে কর্মরত ৮টি বিভাগের ডিসি, এডিসি এবং এসিদের সতর্ক থাকার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। পুলিশ সদর দফতর সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
আইন-শৃংখলা বাহিনী সূত্রে জানা গেছে, নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের প্রতিবাদে বিক্ষোভ করার সময় সংঘর্ষে হেফাজতে ইসলাম সংগঠনের কর্মী নিহতের প্রতিবাদে রোববার দেশব্যাপী ডাকা হরতালে সর্তক থাকবে পুলিশ ও র‌্যাব। আইন-শৃংখলা বাহিনীতে সার্বিক সহায়তা করবে বিজিবি। কেউ আইন ভঙ্গ করার বা আইন-শৃংখলা বাহিনীর উপর হামলা চালানোর চেষ্টা করলে কঠোর হস্তে দমনের নির্দেশ দেয়া হয়েছে পুলিশের উচ্চ পর্যায় থেকে।

গতকাল সকালে বিজিবি পরিচালক (অপারেশন) লে. কর্নেল ফায়জুর রহমান জানান, গত শুক্রবার রাত থেকে ঢাকাসহ সারাদেশে বিজিবি টহল জোরদার করা হয়েছে। কোন ধরনের বিশৃঙ্খলা, সহিংস পরিস্থিতি মোকাবিলা করার জন্য পর্যাপ্ত সংখ্যক বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। কেউ বিশৃঙ্খলা করলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোরভাবে বিজিবি সদস্যরা মোকাবেলা করবে। বিজিবি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে যৌথভাবে মাঠের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করবে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে পুলিশ সদর দফতরের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, পুলিশ সদরদফতর থেকে সারাদেশে কর্মরত এসপিসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের একই ধরনের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। কোনো মহল যেন নাশকতার জন্য জমায়েত না হতে পারে সেইজন্য পুলিশকে কঠোর হওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এছাড়া পুলিশের সব থানা এবং পুলিশের সংশ্লিষ্ট সব অফিসারের নিরাপত্তা জোরদারের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

এক প্রশ্নের জবাবে ওই কর্মকর্তা বলেন, রোববার হরতাল চলার সময় কোন ধরনের নাশতা বা আইন-শৃংখলা বাহিনীর উপর হামলার চেষ্টা করা হলে ছাড় দেয়া হবে না।
এ বিষয়ে ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মর্যাদার একজন কর্মকর্তা বলেন, শুক্রবার দিবাগত রাতে আমরা পুলিশ সদরদফতর থেকে নির্দেশনা পেয়েছি। পুলিশ সদরদফতরের নির্দেশনা অনুযায়ী ইতোমধ্যে আমরা যেকোনো ধরনের অনাকাঙ্খিত ঘটনা এড়ানোর জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি।

সূত্র জানায়, পুলিশ সদর দফতর থেকে সারাদেশে মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের কাছে পাঠানো নির্দেশনায় বলা হয়, ডিএমপির থানাগুলোতে পুলিশ ফাঁড়ি ও পুলিশ বক্সে যেকোনো সময় হামলার ঘটনা ঘটতে পারে। এজন্য এসব স্থানে পুলিশ সদস্যদের উপস্থিতি বাড়াতে হবে। এছাড়া যেকোনো অনাকাঙ্খিত ঘটনা এড়ানোর জন্য শুক্রবার দিবাগত রাতে ও শনিবার সকালে পুলিশ সদস্যদের সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় থাকতে হবে। পরবর্তী নির্দেশনা না আসা পর্যন্ত এ আদেশ বলবৎ থাকবে বলে জানানো হয়েছে।
গত শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের সামনে মুসল্লিদের একাংশের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ রাবার বুলেট ও টিয়ারশেল ছুঁড়ে। জলকামানও ব্যবহার করা হয়। এরপরে চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মী ও পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় চারজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন বেশি কয়েকজন। গতকাল শনিবারও বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের সামনে মুসল্লিরা মোদি বিরোধী মিছিল করেন।

গতকাল পুলিশ সদর দফতরের এআইজি (মিডিয়া) মো. সোহেল রানা বলেন, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশসহ (ডিএমপি) সারা দেশে কর্মরত পুলিশ সদস্যদের সতর্ক থাকতে বিশেষ নির্দেশ দেয়া হয়েছে। উল্লেখ্য চট্টগ্রামে সহিংস ঘটনার পর শনিবার দেশব্যাপী বিক্ষোভ কর্মসূচি এবং রোববার হরতালের ডাক দিয়েছে হেফাজতে ইসলাম। এক ভিডিও বার্তায় হেফাজতে ইসলামের মহাসচিব আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী এ ঘোষণা দেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভারত


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ