সিলেটে মোদি বিরোধী বাম গণতান্ত্রিক জোটের কালো পতাকা মিছিলে লাঠিচার্জ করেছে পুলিশ। আটক করা হয়েছে ৭ জনকে। গতকাল বুধবার বিকেল সাড়ে ৪টায় নগরীর চৌহাট্টাস্থ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে এক মানববন্ধনে মিলিত হন বাম গণতান্ত্রিক জোটের সিলেটের নেতৃবৃন্দ।

স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশে আগমনের প্রতিবাদে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে সিলেটের মানববন্ধন এবং কালো পতাকা মিছিল কর্মসূচি করেছিল বাম গণতান্ত্রিক জোট। মানববন্ধন শেষে মোদি বিরোধী শ্লোগান দিয়ে কলো পতাকা মিছিল শুরু করে সংগঠনের নেতাকর্মীরা। এ সময় বাধা দেয় কোতোয়ালি থানা পুলিশ। পুলিশের এ বাধায় মারমুখো হয়ে প্রতিবাদ জানাতে শুরু করে সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। এরপর পুলিশ লাঠিচার্জ করে মিছিলটি ছত্রভঙ্গ করে দেয়।

এসময় আহত হয়েছেন জোটের অন্তত ২৫ জন নেতাকর্মী। এছাড়া ৩ নারীনেত্রী ও বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমন্বয়ক উজ্জ্বল রায়সহ সাত জনকে আটক করে পুলিশ। আটককৃতরা হলেন, বাম গণতান্ত্রিক জোটের সিলেটের সমন্বয়ক উজ্জ্বল রায়, সঞ্জয় কান্তি দাস, মনীষা ওয়াহিদ, সাদিয়া জাহান নৌশিন, ফাহিম ও রানা।

এ ব্যাপারে বাম নেতা প্রণব জ্যোতি পাল বলেন, আমাদের কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশ করছিলাম আমরা। প্রথমে পুলিশ এসে ব্যানার ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে। পরে আমরা দ্রুত সমাবেশ শেষ করে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে জিন্দাবাজারের দিকে রওনাকালে হামলা চালায় পুলিশ। এ হামলায় বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন বলে তিনি জানান।

অপরদিকে, কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারী নেতাকর্মীদের অভিযোগ, শুরুতে পুলিশ শান্তিপূর্ণ সমাবেশে সহযোগিতা করে। তবে সমাবেশের শেষের দিকে বিনা উষ্কানিতে বেধড়ক লাঠিচার্জ শুরু করে নেতাকর্মীদের উপর। এ সময় পুরুষ পুলিশ সদস্যরা নারী কর্মীদের উপর হামলা চালায় বলে অভিযোগ করেন আন্দোলনকারীরা। একই সাথে অবিলম্বে আটককৃতদের মুক্তি ও হামলাকারী পুলিশ সদস্যদের শাস্তির দাবি জানান জোটের নেতৃবৃন্দ।

এসএমপির কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত ইনচার্জ (ওসি) আবু ফরহাদ জানান, রাস্তা বন্ধ করে বাম জোটের নেতাকর্মীরা দিতে শুরু করে কালো পতাকা মিছিল। পুলিশ মিছিল দিতে বাধা পরে ঘটনাস্থল থেকে ৭ জনকে আটক করে। মহানগর পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (উত্তর) আজবাহার আলী শেখ জানান, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরকে ঘিরে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরির লক্ষ্যে গতকাল বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে নগরীর চৌহাট্টাস্থ কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারের সমানে অবস্থান নেয় একটি মহল। মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (মিডিয়া) বি.এম আশরাফ উল্যাহ তাহের বলেন, মানববন্ধন কর্মসূচি পালন শেষে রাস্তা বন্ধ করে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টির চেষ্টা করলে পুলিশ ছত্রভঙ্গ করে দেয় তাদের। এ সময় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ানোর দায়ে ৫ জন পুরুষ ও ২ জন নারীকে আটক করা হয়।