বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে শরণখোলার সাউথখালীতে একের পর এক সহিংসতার নেপথ্যে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হাসানুজ্জামান পারভেজের ইন্ধন রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ইউনিয়নের ৯টি ওয়ার্ডের তার পছন্দের মেম্বর প্রার্থীদের বিজয়ী করতে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে চলছে। এজন্য তার গঠিত ক্যাডার বাহিনীকে দিকনির্দেশনা দিচ্ছেন এমন একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে ভাইরাল হয়েছে। এ ঘটনায় অপর প্রতিদ্ব›িদ্ব প্রার্থীসহ এলাকাবসির মধ্যে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে। এব্যপারে জরুরি পদক্ষেপ না নিলে নির্বাচনের মুহুর্তে খুন জখমসহ বড় ধরনের সংঘর্ষের আসংখ্যা করছেন তারা।
সাউথখালী এলাকাবাসী জানান, ভাইস চেয়ারম্যান পারভেজ দলীয় লবিং করে তার চাচা মোঃ মোজাম্মেল হোসেনকে আওয়ামী লীগ মনোনিত সাউথখালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান প্রার্থী করেন। তবে ওই ইউনিয়নে মোঃ মোজাম্মেল হোসেন ছাড়া আর কোন প্রতিদ্ব›িদ্ব নেই। এরপর তিনি ইউনিয়নের ৯টি ওয়ার্ডে তার পছন্দের মেম্বর প্রার্থী ছাড়া বাছাই করেন। এজন্য তিনি প্রতিদ্ব›িদ্ব প্রার্থীদের অব্যাহত হুমকি দিয়ে এলাকায় ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করেন। এছাড়া পছন্দের প্রার্থীদের বিজয় নিশ্চিত করতে প্রয়োজন মতো তার ক্যাডার বাহিনী ব্যবহার করা হবে। এ সংক্রান্ত একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে ভাইরাল হলে এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি হয়।
১নং সোনাতলা ওয়ার্ডের মেম্বর প্রার্থী শফিকুল ইসলাম ডালিম জানান, ভাইস চেয়ারম্যানের ক্যাডার বাহিনী প্রথমে তার কর্মী সমর্থকদের উপর হামলা চালাতে গেলে তারা প্রতিরোধ করেন। এরপর ১৯ মার্চ রাতে তার দুই কর্মীর দোকানে আগুন দেয় এবং ২২ মার্চ রাতে তিন কর্মীকে কুপিয়ে জখম করে।
৫নং উত্তর সাউথখালী ওয়ার্ডের মেম্বর প্রার্থী আলামিন খান জানান, চাচার নৌকার মনোনায়ন পেয়েই ভাইস চেয়ারম্যান মোবাইলে আমাকে এলাকা ছেড়ে দেয়ার হুমকি দেয়। এখন তার ভাই পলাশ মাহমুদ ক্যাডার বাহিনী নিয়ে আমার কর্মী সমর্থকদের নির্বাচনী প্রচারনায় বাঁধা দিচ্ছে। তার কর্মী আঃ রব চৌকিদারকে খুন করা হবে বলে হুমকি দেয়। এব্যপারে তিনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাচন অফিসে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
৪নং তাফালবাড়ি-রায়েন্দা ওয়ার্ডের মেম্বর প্রার্থী শামসুল আলম রিপন জানান, ভাইস চেয়ারম্যান পারভেজ তাকে হুমকি দিয়ে বলেন, তোকে নির্বাচন করতে দেয়া হবে না তোর রক্ত দিয়ে গোসল করবো আমি। এরপর ভাইস চেয়ারম্যান ২৩ মার্চ আলামিন, বাদশা, আনোয়ার, সালাম, শিপলু, ফিরোজ, লিটনসহ তার ২০/২৫ জন কর্মীকে নির্বাচনী কাজ করলে হাত পা ভেঙ্গে দেয়ার হুমকি দেয় বলে তিনি জানান।
৯নং খুড়িয়াখালী ওয়ার্ডের মেম্বর প্রার্থী বাচ্চু মুন্সি জানান, ভাইস চেয়ারম্যানের ক্যাডার বাহিনীকে দিকনির্দেশনার ভিডিও দেখে আমি ও আমার কর্মী সমর্থকরা এখন আতঙ্কিত।
এব্যপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সরদার মোস্তফা শাহিন বলেন, বুধবার সকালে ভাইস চেয়ারম্যান হাসানুজ্জামানের বিরুদ্ধে সাউথখালীর এক মেম্বর প্রার্থী লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
শরণখোলা থানার অফিসার ইন চার্জ মোঃ সাইদুর রহমান বলেন, সাউথখালীতে আইনশৃঙ্খলা শান্তিপূর্ণ রাখতে বুধবার বিকেলে এলাকাবাসী ও মেম্বর প্রার্থীদের নিয়ে একটি সভা করা হচ্ছে।
উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান মিলন বলেন, আইন শৃঙ্খলা ভঙ্গ করে কেউ দলের ভাবমূর্তি নষ্ট করলে তার দায় ভার দল বহন করবে না।
জানতে চাইলে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ও সাউথখালী ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক হাসানুজ্জামান পারভেজ বলেন, আমি কাউকে হুমকি দেই নাই। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে যাতে কোনো বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি না হয় সেজন্য সব দায়ভার নিজের মাথায় নিয়ে উত্তেজিত কর্মী সমর্থকদের সান্তনা দেয়ার জন্য যে বক্তব্য দিয়েছি সেটি ফেইসবুকে ভিন্ন অর্থে প্রচার করা হয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।