বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
বিয়ের নামে বহু পুরুষকে ফাঁদে ফেলে অর্থ-সম্পদ লুট, প্রতারণা-জালিয়াতি ও নিরীহ লোকদের মামলায় ফেলে হয়রানিসহ বিভিন্ন ধরনের অভিযোগ উঠেছে খুলনার নারী সুলতানা পারভীন নীলা ওরফে বৃষ্টির বিরুদ্ধে।
লিখিত বক্তব্যে নিলার অষ্টম স্বামী আব্দুল বাকী সোমবার খুলনা প্রেসক্লাবে সংবাদে সম্মেলনে বলেন, নগরীর সোনাডাঙ্গা আবাসিক এলাকার সুলতানুল আলম বাদলের মেয়ে সুলতানা পারভীন নীলা ওরফে সুলতানা পারভীন বৃষ্টি এ পর্যন্ত ৮ এর অধিক বিয়ে করেছেন। বিয়ে করে কিছুদিন পর সেই স্বামীকে ছেড়ে দেওয়া এবং তার কাছ থেকে দেনমোহরের টাকাসহ নানা কৌশলে বাড়ি-গাড়ি হাতিয়ে নেওয়াই তার ব্যবসা। তার মূল টার্গেট সম্পদশালী ব্যবসায়ী, উচ্চপদস্থ চাকরিজীবী ও প্রবাসী পুরুষ। প্রথমে টার্গেট নিশ্চিত করে তিনি ধীরে ধীরে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে নিজ দেহের সৌন্দর্য ও কথা মালার মারপ্যাঁচে আটকে ফেলেন টার্গেটকৃত পুরুষদের।
সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করা হয়, ১৯৯৯ সালে সুলতানা পারভীনের প্রথম বিয়ে হয় মাদারীপুর জেলার হরিকুমারিয়া গ্রামের আলহাজ আব্দুল হাকিম শিকদারের জাপান প্রবাসী ছেলে শাহাবউদ্দিন সিকদারের সঙ্গে। নীলার বয়স ছিলো তখন ১৫ বছরেরও কম। কিছুদিন যেতে না যেতেই স্বামীর ঘর থেকে নগদ অর্থ ও স্বর্ণালংকার নিয়ে বেরিয়ে যায় তিনি। তার উশৃঙ্খল জীবনযাপন ও মালপত্র চুরির ঘটনায় শাহাবুদ্দিন মাদারীপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। এর নম্বর-৭৩৮, তারিখ ১৯ ডিসেম্বর ১৯৯৯। যদিও ২০০১ সালে তার সঙ্গে বিচ্ছেদ ঘটে নীলার।
তার দ্বিতীয় বিয়ে হয় ২০০৫ সালের ৬ মে খুলনা মহানগরীর শেরেবাংলা রোডস্থ মো.মকবুল হোসেনের ছেলে এসএম মুনির হোসেনের সঙ্গে। তখন প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে নিজেকে ‘কুমারী’ দাবি করে মুনির হোসেনের সঙ্গে এক লাখ টাকার কাবিননামায় বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন তিনি। কিন্তু বিয়ের কিছুদিনের মধ্যে নীলার উশৃংখল জীবনযাপন এবং ও উগ্র আচরণের শিকার হন স্বামী মুনির। একপর্যায়ে স্বর্ণালঙ্কার ও নগদ অর্থ নিয়ে এ বাড়ি থেকেও বেরিয়ে যান নীলা। এ ঘটনায় একই বছরের ১০ ডিসেম্বর মুনির হোসেন তাকে তালাক দেন। যদিও পরবর্তীতে তার কাছ থেকে অর্থ আদায় করতে সুলতানা পারভীন নীলা ২০০৬ সালে মনির হোসেনের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন এবং পারিবারিক আদালতে মামলা দায়ের করেন।
ওই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই সুলতানা পারভীন প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে আবারও নিজেকে ‘কুমারী’ দাবি করে ২০০৮ সালের এপ্রিলে নগরীর খালিশপুর ওয়ারলেস ক্রস রোডের মৃত আলহাজ আব্দুল মান্নানের ছেলে ঠিকাদার মঈনুল আরেফিন বনিকে বিয়ে করেন। শর্ত ছিল বিয়ের পর নীলা তার আত্মীয়ের মাধ্যমে বনিকে ইতালি নিয়ে যাবে। বিয়ের পর তার কাছ থেকে মোটা অঙ্কের অর্থ হাতিয়ে নেন। কিছুদিন যেতে না যেতেই নীলার প্রতারণা প্রকাশ পেতে থাকে। একপর্যায়ে তাদের মধ্যেও বিচ্ছেদ ঘটে। এ ঘটনায় নীলা নিজেকে কুমারী পরিচয় দিয়ে প্রতারণার আশ্রয় গ্রহণ করায় স্বামী শেখ মঈনুল খুলনার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে ২০২০ সালের ডিসেম্বরে নীলার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। মামলাটি এখন তদন্তাধীন রয়েছে। তবে, যথারীতি অর্থ আদায় করতে নীলা মঈনুলের বিরুদ্ধেও খুলনার বিভিন্ন আদালতে একাধিক মামলা দায়ের করেন। বনির সঙ্গে মামলা চলমান থাকা অবস্থায় নীলা ২০১১ সালে নারায়ণগঞ্জের ইফতিখার নামে একজনকে বিয়ে করেন। সেখানেও দাম্পত্য জীবন স্থায়ী হয়নি তার। একপর্যায়ে ইফতেখার আমেরিকায় চলে যান। ২০১২ সালে নীলা বিয়ে করেন বাগেরহাটের বাসিন্দা কামাল হোসেনকে, ২০১৭ সালে ইতালি প্রবাসী মাদারীপুরের মোহাম্মদ আজিমকে, ২০১৮ সালে খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার মোহাম্মদ রহমানকে এবং সর্বশেষ ২০১৯ সালে খুলনা মহানগরীর নাজির ঘাট এলাকার মো. আব্দুল বাকীর সঙ্গে (আমি) তার বিয়ে হয়। আমার সঙ্গেও প্রতারণা করায় আমি তার বিরুদ্ধে ঢাকার আদালতে চেক ও টাকা-পয়সা চুরির অভিযোগে মামলা দায়ের করেছি। মামলাটি এখন পিবিআই ঢাকা মেট্রো দক্ষিণ কার্যালয়ে তদন্তাধীন রয়েছে। এছাড়াও সিরাজগঞ্জে অবস্থানকালীন ঢাকার একটি ফ্ল্যাট তার নামে লিখে না দেওয়ায় তিনি তার আরও এক স্বামীকে নারী নির্যাতন মামলায় ফাঁসানো এবং জীবন নাশের হুমকি দেয় । ওই ঘটনায় তার বিরুদ্ধে ২০১৯ সালের ২ মে সিরাজগঞ্জ সদর থানায় সাধারণ ডায়েরি করি।সংবাদ সম্মেলনে আব্দুল বাকী বলেন, নীলার বিরুদ্ধে আরও একাধিক অভিযোগ রয়েছে। ইতোমধ্যে প্রতারণার মামলায় তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়েছে। এ অবস্থায় তার বিরুদ্ধে কঠোর আইনি পদক্ষেপ না নিলে তিনি এভাবে একের পর এক বহু পুরুষকে ফাঁদে ফেলে তাদের অর্থ-সম্পদ লুটে নেবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।