পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
চট্টগ্রামে সড়কে ভয়ঙ্কর বাইকারেরা। তাদের দাপটে অতিষ্ঠ সবাই। এসব বাইকারদের দলবেঁধে ব্যস্ত সড়কে সর্পিল গতিতে উচ্চ শব্দে ছুটে চলার ঘটনা নিত্যদিনের। তাদের বেশিভাগই কিশোর-উঠতি যুবক। হিরোইজম প্রদর্শনে তারা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে রাস্তায় নানা কসরৎ করছে। এতে প্রতিনিয়তই ঘটছে দুর্ঘটনা। বেপরোয়া মোটরসাইকেল চালাতে গিয়ে সড়কেই প্রাণ যাচ্ছে অনেকের। এ নিয়ে বিভিন্ন এলাকায় ঘটছে সংঘাত-সহিংসতাও।
গতকাল বুধবার দুপুরে নগরীর আগ্রাবাদ জাম্বুরি পার্কের পাশের সড়কে এমন এক মোটরসাইকেল মহড়াকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে প্রাণ গেছে এক যুবকের। আহত হয়েছেন আরও ৫ জন। এই ঘটনায় পুলিশ বাইকার, কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যসহ ২৫ জনকে আটক করেছে। দুই পক্ষের সংঘর্ষে ছুরিকাঘাতে নিহতের নাম হাশেম খান (৩৫)। তার বাসা নগরীর রঙ্গিপাড়ায়। তিনি সাউন্ড সিস্টেমের কাজ করতেন।
ডবলমুরিং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইনকিলাবকে বলেন, জাম্বুরি পার্কের পাশে সড়ক ভবনের সামনে রাস্তায় রঙ্গিপাড়ার একদল যুবক উচ্চ শব্দে গান বাজিয়ে মোটরসাইকেল শো করছিলেন। তাদের সামনে পেছনে পিকআপে উচ্চ শব্দে গান বাজছিলো। রাস্তা বন্ধ করে তারা এ শো করার কারণে এলাকায় যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এ নিয়ে তিন রিকশারোহীর সাথে তাদের কথা-কাটাকাটি হয়।
রিকশা আরোহী স্থানীয় এসব যুবক এলাকার কিছু যুবককে ডেকে আনে। একপর্যায়ে উভয় পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এ সময় পাশের দোকান থেকে ছুরি এনে হাশেম খানকে ছুরিকাঘাত করা হয়। তাকে দ্রুত পাশের আগ্রাবাদ মা ও শিশু জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। আরও চার জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনার পর পুলিশ সেখান থেকে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যসহ ২৫ জনকে আটক করেছে। তাদের মধ্যে কমপক্ষে চার জন সরাসরি ছুরিকাঘাতের ঘটনায় জড়িত থাকার তথ্য পাওয়া গেছে। বাকিদের জিজ্ঞাসাবাদ করে ঘটনায় আরও কারা জড়িত তা যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ কর্মকর্তারা।
স্থানীয়রা জানান, জাম্বুরি পার্কের আশপাশের সড়কে প্রায়ই এমন মোটরসাইকেল শো করে কিশোর যুবেকরা। এ সময় এলাকায় ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হলেও ভয়ে কেউ তাদের কিছু বলার সাহস পায়না। পার্কে আসা পর্যটকেরা পড়েন বিড়ম্বনায়। নগরীর প্রায় প্রতিটি পর্যটন এলাকায় এসব বাইক স্টারদের উৎপাত চলছে। সবচেয়ে বেশি মোটরসাইকেল শো করা হয় নগরীর পতেঙ্গা সৈকত ও পাশের আউটার রিং রোড এলাকায়। প্রতিদিন সকাল বিকাল বিশেষ করে ছুটির দিনে তাদের উৎপাত বেড়ে যায়।
কিশোর যুবকেরা দলবেঁধে মোটরসাইকেল নিয়ে বেপরোয়া গতি পতেঙ্গা সৈকত ও আউটার রিং রোড দাপিয়ে বেড়ায়। সেখানে প্রায়ই দুঘটনা ঘটছে। চলন্ত মোটরসাইকেল থেকে কিশোরী-তরুণীদের ইভটিজিং এমনকি ছিনতাইয়ের ঘটনাও ঘটছে। এতে বিড়ম্বনায় পড়েন পর্যটকেরা। সম্প্রতি উল্টো পথে বেপরোয়া মোটরসাইকেল চালিয়ে এক বিচারকের গাড়িতে ধাক্কা এবং পরে তাকে লাঞ্ছিতের ঘটনায় এক আওয়ামী লীগ নেতার ছেলেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে আদালতে তার সাজা হয়।
নগরীর নেভাল-টু সৈকত, নবনির্মিত সিডিএর বায়েজিদ-ফৌজদারহাট রোড, বন্দর সংলগ্ন টোল রোড, কর্ণফুলী সেতু এলাকা, সিআরবি-সাত রাস্তার মোড়সহ বিভিন্ন এলাকায় বেপরোয়া মোটরসাইকেল চালকদের দাপট দেখা যায়। নগরীর ফ্লাইওভারগুলোতেও হিরোইজম দেখাতে মোটরসাইকেল শো করে এসব বখাটেরা। এছাড়া ছুটির দিনে কিংবা গভীর রাতে নগরীর প্রধান প্রধান সড়কেও বেপরোয়া মোটরসাইকেল চালাতে দেখা যায় এসব যুবকদের। মোটরসাইকেল শো’র পাশাপাশি দ্রæতগতির এ যান অপরাধীর বাহন হিসেবেও ব্যবহৃত হচ্ছে। খুন, ছিনতাই, দস্যুতায় ব্যবহৃত হচ্ছে মোটরবাইক।
মহানগরীর মত জেলার সড়ক-মহাসড়কেও এদের দাপট চলছে। লাইসেন্সবিহীন হরেক রকম মোটরসাইকেল সড়কজুড়ে। হেলমেট না পড়া একাধিক ব্যক্তি নিয়ে মোটরসাইকেলে চড়া এখন নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা। কোন কোন বাইকে হাইড্রোলিক হর্ন লাগানো হচ্ছে। আবার কেউ কেউ ভিআইপি গাড়ির মত সাইরেন বাজিয়ে মোটরসাইকেলে চলছেন। ব্যস্ত সড়কে ফুটপাতের উপর মোটরসাইকেল তুলে দেয়ার ঘটনাও ঘটছে বিভিন্ন এলাকায়। বেপরোয়া মোটরবাইক চালকদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করেছে মহানগর ও জেলা পুলিশ। বিভিন্ন সময় চেকপোস্ট বসিয়ে মোটরসাইকেল আটক এবং মোটরযান আইনে মামলা দেয়া হয়। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দীর্ঘদিন ধরে এমন অভিযান না থাকায় আবারও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে এসব বাইক আরোহীরা।
তবে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ট্রাফিক) শ্যামল কুমার নাথ গতকাল ইনকিলাবকে বলেন, বেপরোয় বাইকারদের বিরুদ্ধে নগরীতে নিয়মিতই অভিযান চলছে। যাদের লাইসেন্স কিয়বা কাগজপত্র নেই তাদের মোটরসাইকেল আটক করা হচ্ছে। আইন অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে মোটনযান আইনে মামলা হচ্ছে। মোটরসাইকেল নিয়ে মাস্তানি কিংবা বেপরোয়া আচরণ বন্ধে পুলিশ সক্রিয় বলে জানান তিনি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।