পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ঢাকায় আগামীকাল থেকে ২৬ মার্চ পর্যন্ত ১০ দিন রাজনৈতিক কর্মসূচির বিষয়ে মেট্রোপলিটন পুলিশের নির্দেশনায় বিস্ময় প্রকাশ করে তা অবিলম্বে প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে বিএনপি। গতকাল গুলশানে বিএনপি চেয়ারপার্সনের রাঝনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এই দাবি জানান।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, গত ১৪ মার্চ ডিএমপির ভারপ্রাপ্ত কমিশনারের নির্দেশনা আমাদেরকে বিস্মিত করেছে। কারণ সরকারি প্রোগ্রামের সাথে আমাদের প্রোগ্রামের কোনো মুখোমুখি অবস্থান নেই। তারা তাদের প্রোগ্রাম করবে, আমরা আমাদের প্রোগ্রাম করবো। এই নির্দেশনা প্রত্যাহার করে আমাদের রাজনৈতিক দল ও অন্যান্য সামাজিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে তাদের এই সূর্বণ জয়ন্তী পালনের জন্য সব রকমের অনুষ্ঠানে যেন বাঁধা সৃষ্টি করা না হয় সেই অনুরোধ আমরা জানাচ্ছি। তিনি বলেন, হঠাৎ করে ডিএমপি থেকে এই ধরনের নির্দেশনা আমি মনে করি যে, আমাদের স্বাধীনতার সূবর্ণ জয়ন্তী পালনের যে উদ্দেশ্য, সেটাকে ব্যহত করবে। একই সঙ্গে স্বাধীনতার বিষয়টাকে প্রশ্নবিদ্ধি করছে কিনা এটাও আমাদেরকে লক্ষ্য করে দেখতে হবে।
মির্জা ফখরুল বলেন, শুধু তাই নয়, মনিরুল ইসলাম বলেছেন যে, এন্টি ন্যাশনাল প্রোগ্রামস। এটা কেনো বলেছেন, কিভাবে বলেছেন, সেটার একটা ব্যাখ্যা আ্মরা জানতে চাই। হোওয়াট ডাজ মিন বাই এন্টি ন্যাশনাল প্রোগ্রাস? উনি কী বুঝাচ্ছে এটা আমাদেরকে ব্যাখ্যা করে বলতে হবে। তিনি বলেন, আমরা বুঝতে পারছি না, স্বাধীনতার সূবর্ণ জয়ন্তী উদপান করা বা পালন করা কী এন্টি ন্যাশনাল প্রোগ্রাম? তারা (সরকার) ছাড়া আর কেউ অনুষ্ঠান করতে পারবে না-এটা কোন ধরনের চিন্তাভাবনা থেকে আসছে আমরা বুঝতে পারছি না।
১৭ মার্চ থেকে ২৬ মার্চ রাষ্ট্রীয়ভাবে নেয়া কর্মসূচির প্রসঙ্গ টেনে বিএনপি মহাসচিব বলেন, এটা তো অবশ্যই সরকারি প্রোগ্রাম হবে। বিদেশ থেকে রাষ্ট্রীয় মেহমানরা আসবেন। আমরা যথা সম্ভব নি:সন্দেহে সেটাকে সহযোগিতা করবো। এটা আমাদের জাতির সম্মানের প্রশ্ন, এটা আমাদের মর্যাদার প্রশ্ন –আমরা অবশ্যই সেটাকে সেইভাবে দেখবো। একই সঙ্গে স্বাধীনতার বিষয়টাকে প্রশ্নবিদ্ধি করছে কিনা এটাও আমাদেরকে লক্ষ্য করে দেখতে হবে।
মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা খুব পরিস্কার করে যে কথাটা বলতে চাই, বিএনপি হচ্ছে একটি সত্যিকার অর্থেই স্বাধীনতার যোদ্ধাদের দল, মুক্তিযোদ্ধাদের দল। একাত্তর সালে বিএনপি ছিলো না। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছেন, স্বাধীনতার ঘোষক। তিনি এই দল পরে প্রতিষ্ঠা করেছেন গণতন্ত্রকে পুনঃপ্রবর্তন করবার জন্যে, প্রতিষ্ঠা করবার জন্য। বিএনপি সব সময়ই মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাস করে। মূল চেতনা যেটা ছিলো সেটাকে বিশ্বাস করে, জনমানুষের যে আকাংখা সেটাকে সামনে রেখে গণতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠা করবার জন্যে বিএনপি কাজ করে আসছে, করেছে। বহু দলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছে বিএনপি, সংসদীয় গণতন্ত্র নিয়ে এসেছে বিএনপি, বাক স্বাধীনতা, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা নিশ্চিত করেছে বিএনপি, জনগনের যে কথা বলার যে অধিকার সেই অধিকার নিশ্চিত করেছে বিএনপি, গণতন্ত্রের যে মৌলিক বিষয়গুলো বিএনপি প্রতিষ্ঠা করেছে। আজকে আমাদের দুর্ভাগ্য যখন আমরা ৫০ বছর পরে যখন আমরা স্বাধীনতা স‚বর্ণ জয়ন্তী পালন করতে যাচ্ছি তখন সেই গণতন্ত্র বাংলাদেশে নেই, মানুষের অধিকার হরণ করা হয়েছে, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা কেড়ে নেয়া হয়ে।ে দেশে একটা এক দলীয় শাসনব্যবস্থা প্রবর্তন করবার জন্য একটা নীলনকশা প্রতিষ্ঠা করতে চলেছে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, জিয়াউর রহমানের ‘বীরোত্তম খেতাব’ সরকার বাতিল করলে তা মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গে চরম বিশ্বাসঘাতকতা করা হবে। আমরা বার বর বলছি, জামুকার (জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল) কোনো এখতিয়ার নেই এই বিষয়ে (জিয়াউর রহমানের বীর উত্তম খেতাব বাতিল) সিদ্ধান্ত নেয়ার। আর সরকার যদি এই বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেয় তাহলে চরম বিশ্বাসঘাতকতা হবে স্বাধীনতা যুদ্ধের সঙ্গে। মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গে চরম বিশ্বাসঘাতকতা হবে এবং এই সরকার যে স্বাধীনতা যুদ্ধে বিশ্বাস করে না সেটাই প্রমাণিত হবে।
স্বাধীনতার স‚বর্ণ জয়ন্তী উদযাপন জাতীয় কমিটির আহবায়ক খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, এই সূবর্ণ জয়ন্তী অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আমরা মুক্তিযুদ্ধে ও স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস ও তথ্য তুলে ধরছি। মুক্তিযুদ্ধের তথ্য ও উপাত্ত যেভাবে আমরা উপস্থাপন করছি তাতে আমরা দেখতে পারছি যে, যারা এখন সরকারে আছেন আওয়ামী লীগ তারা নানাভাবে প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছে। তারা প্রতিক্রিয়া দেখাতে গিয়ে আবার ইতিহাসকে খন্ডিত করছে, আবার ইতিহাসকে তারা বিকৃত করে জনগনকে বিভ্রান্ত করতে চাচ্ছে।
তিনি বলেন, আমরা যে প্রকৃত সত্যগুলো তুলে ধরছি বলে আওয়ামী লীগের সহ্য হচ্ছে না, বর্তমান সরকারের সহ্য হচ্ছে না। সেই কারণে তারা বিকৃত ইতিহাস দিয়ে প্রতিক্রিয়া দিচ্ছে। সেই কারণে আপনারা দেখবেন, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান, তার পরিবার ও বিএনপিকে আওয়ামী লীগ ভয় পায়।
গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে বিএনপির স্বাধীনতার সূবর্ণ জয়ন্তী উদযাপনে স্বরচিত কবিতা ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা কমিটির উদ্যোগে এই সংবাদ সম্মেলন হয়। স্বাধীনতার সূবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন জাতীয় কমিটির আহবায়ক খন্দকার মোশাররফ হোসেনের সভাপতি ও সদস্য সচিব আবদুস সালামের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে স্বরচিত কবিতা ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা কমিটির কর্মসূচি তুলে ধরেন কমিটির সদস্য সচিব আবদুল হাই শিকদার।
১৬ থেকে ৩০ মে উপজেলা ও থানা পর্যায়ে, ১ জুলাই থেকে ৩১ সেপ্টেম্বর জেলা পর্যায়ে, অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত বিভাগীয় পর্যায়ে এবং ২০২২ সালের ২৬ মার্চ জাতীয়ভাবে সমাপনী কর্মসূচি করবে এই কমিটি। শিশু-কিশোর চিত্রাঙ্কন, স্বরচিত কবিতা ও ছড়া, আবৃতিকারদের আবৃত্তি, শিশু-কিশোর, স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নিয়ে উপস্থিত বক্তৃতা এবং কুইজ প্রতিযোগিতা হবে। সংবাদ সম্মেলনে কমিটির সদস্য মজিবুর রহমান সারোয়ার, নজরুল ইসলাম মনজু, ফরিদা ইয়াসমীন, রিয়াজ উদ্দিন নসু, আরিফুর রহমান মোল্লা, শায়রুল কবির খান, শাহজাহান সম্রাট, রিটা আলী, মনিরুজ্জামান মনির, এনামুল হক জুয়েল, মিজানুর রহমান, রফিক লিটন প্রমুখ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।