Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

হ্যারি-মেগানের অভিযোগের জবাব দিলেন রানি

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১০ মার্চ, ২০২১, ৩:৫৩ পিএম

গত রোববারের সিবিএস নিউজে অপরাহ্ উইনফ্রেকে দেয়া সাক্ষাৎকারে ব্রিটিশ রাজপরিবার নিয়ে একের পর এক বিস্ফোরক অভিযোগ করেছেন প্রিন্স হ্যারি ও তার স্ত্রী মেগান মার্কেল। তাদের সেই ‘বোমা ফাটানো’ সাক্ষাৎকার দেয়ার দুইদিন পর নীরবতা ভাঙল বাকিংহাম প্যালেসের।

মঙ্গলবার যুক্তরাজ্যের স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বাকিংহাম প্যালেস বলেছে, ‘গত কয়েক বছর হ্যারি ও মেগানের জন্য কতটা সমস্যাপূর্ণ ছিল, তা পুরোটা জানতে পেরে পুরো পরিবার দুঃখ পেয়েছে।’ ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়। বাকিংহাম প্যালেসের বিবৃতিতে বলা হয়, যে বিষয়গুলো তুলে ধরা হয়েছে, বিশেষ করে বর্ণবাদের বিষয়টি উদ্বেগজনক। এগুলো অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে নেয়া হয়েছে।পারিবারিকভাবেই বিষয়গুলো সুরাহা করা হবে।

এর আগে ৭ মার্চ যুক্তরাষ্ট্রের সিবিএস টিভিতে প্রচারিত হয় ‘অপরাহ্ উইথ মেগান অ্যান্ড হ্যারি: এ সিবিএস প্রাইমটাইম স্পেশাল’ শিরোনামের বিশেষ সাক্ষাৎকারটি। সেখানে উইনফ্রেকে ডিউক অব সাসেক্স প্রিন্স হ্যারি জানিয়েছেন, রাজপরিবার ছাড়ার পরে কেন যুক্তরাজ্যও ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন তারা। জানিয়েছেন, রাজপরিবারের সঙ্গে তার ক্রমবর্ধমান দূরত্বের কথাও। প্রিন্স হ্যারি বলেছেন, তার ও স্ত্রী মেগান মার্কেলের যুক্তরাজ্য ছাড়ার পেছনে ট্যাবলয়েড পত্রিকার বর্ণবাদী আচরণ বড় ভূমিকা রেখেছিল। হ্যারির কথায়, ‘যুক্তরাজ্যের ট্যাবলয়েড গণমাধ্যম সংকীর্ণতাবাদী। ট্যাবলয়েড গণমাধ্যমগুলো ভয় এবং নিয়ন্ত্রণের বিষাক্ত পরিবেশ তৈরি করেছিল।’ হ্যারি-মেগান বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেসে বসবাস করছেন। ওই সাক্ষাৎকার প্রচারের পর ব্রিটিশ রাজপরিবার এক জরুরি বৈঠকে বসে। এরপরই রাজপরিবারের বিবৃতিটি আসে।

সাক্ষাৎকারে হ্যারি বলেন, রাজপরিবারের দায়িত্ব ছাড়ার ঘোষণা দেয়ার কিছু সময় পরই দ্য সোসাইটি অব এডিটরসের সঙ্গে ভালো বন্ধুত্ব রয়েছে, এমন এক ব্যক্তি গণমাধ্যমের সঙ্গে সাংঘর্ষিক অবস্থানে না যেতে তাঁকে সতর্ক করেছিলেন। ওই ব্যক্তি হ্যারিকে বলেছিলেন, ‘গণমাধ্যমের সঙ্গে এমন করবেন না। তারা আপনার জীবন ধ্বংস করে দেবে।’ সাক্ষাৎকারে হ্যারির সঙ্গে একমত পোষণ করে মেগান বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম গণমাধ্যমের সঙ্গে হঠকারী সম্পর্ক স্থাপন করেছে। তাঁকে (মেগান) ও হ্যারিকে গণমাধ্যমের অসত্য প্রচার থেকে রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়েছিলেন রাজপরিবারের সংবাদমাধ্যম ব্যবস্থাপকেরা। তবে হ্যারি ও মেগানের অভিযোগের প্রতিবাদ জানিয়েছে সম্পাদকদের সংগঠন দ্য সোসাইটি অব এডিটরস। তারা বলেছে, সুস্পষ্ট প্রমাণ ছাড়াই রাজদম্পতি এ ধরনের অভিযোগ করেছেন। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম সংকীর্ণবাদী নয়।

এদিকে বার্তা সংস্থা এএফপির খবরে বলা হয়, সাক্ষাৎকারে সবচেয়ে আলোচিত বিষয় হিসেবে এসেছে রাজপরিবারের ভেতর বর্ণবাদের লালন। মেগান জানান, ব্রিটিশ রাজপরিবারের জৌলুশপূর্ণ জীবনে থেকেও তিনি ভালো ছিলেন না। পরিবারের মধ্য থেকেও তিনি এত বিচ্ছিন্ন ও নিঃসঙ্গ হয়ে পড়ছিলেন যে একটা সময় বেঁচে থাকার ইচ্ছাই হারিয়ে ফেলেন। ভাবছিলেন আত্মহত্যা করবেন। রাজপরিবারে মেগানের মানসিক কষ্ট ও তাঁর ছেলে অর্চির জন্মের আগে গায়ের রং নিয়ে বৈষম্যমূলক আলোচনার কথাও বলেন মেগান। তিনি বলেন, সন্তানের গায়ের রং নিয়ে উদ্বেগে ছিলেন রাজপরিবারের এক সদস্য।

উইনফ্রে গত সোমবার সিবিএসকে জানান, প্রিন্স হ্যারি পরে তাকে জানিয়েছেন, সন্তানের গায়ের রং নিয়ে রানি এলিজাবেথ অথবা প্রিন্স ফিলিপ কোনো মন্তব্য করেননি, এটা তিনি নিশ্চিত। এই মন্তব্য রাজপরিবারের কে করেছিলেন, তা জানাননি প্রিন্স হ্যারি।

সাক্ষাৎকারে হ্যারি বলেন, তার ভাই ও বাবা রাজপরিবারের নিয়মের বেড়াজালে আবদ্ধ হয়ে গেছেন। গত বছরের শুরু থেকে তার পরিবার তাকে (হ্যারি) কোনো আর্থিক সহায়তা দিচ্ছে না। তার বাবা তার ফোন ধরা বন্ধ করে দিয়েছেন। হ্যারি বলেন, তিনি ভাইকে ভালোবাসেন। ভাই ও বাবার সঙ্গে আবার সম্পর্ক উন্নত করতে চান। মেগান বলেন, গত মাসে প্রিন্স ফিলিপ হাসপাতালে যখন চিকিৎসাধীন ছিলেন, তখন তিনি রানি এলিজাবেথকে ফোন করেছিলেন। সূত্র: দ্য সান, স্কাই নিউজ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: যুক্তরাজ্যে


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ