পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বাংলাদেশ ও ভারতের সীমান্তে দুই দেশের মধ্যে সংযোগকারী প্রথম কোনো নদীসেতুর উদ্বোধন হচ্ছে আজ। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় রোববার রাতে ঘোষণা করেছে, ফেনী নদীর ওপর নির্মিত এ সেতুটির নামকরণ করা হয়েছে ‘মৈত্রী সেতু’ এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি মঙ্গলবার ভার্চুয়ালি এ সেতু উদ্বোধন করবেন। বিবিসি বাংলার সংবাদদাতা শুভজ্যোতি ঘোষের পরিবেশিত প্রতিবেদন থেকে এ সংবাদ জানা গেছে।
এতে বলা হয়েছে, প্রায় দু’কিলোমিটার লম্বা এ সেতুটি নির্মাণ করেছে ভারতের একটি সরকারি সংস্থা ন্যাশনাল হাইওয়েজ অ্যান্ড ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন লিমিটেড এনএইচআইডিসিএল। সেতুর একপ্রান্তে দক্ষিণ ত্রিপুরার সাবরুম শহর, অন্যপ্রান্তে বাংলাদেশের রামগড় - আর চট্টগ্রাম বন্দরে সহজ অ্যাকসেসের মাধ্যমে এটি ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ব্যবসা-বাণিজ্যের ছবিটাই আমূল বদলে দেবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে স্থলসীমান্ত চার হাজার কিলোমিটারেরও বেশি লম্বা - আর এই সুদীর্ঘ সীমান্তের অনেক জায়গাতেই ব্রহ্মপুত্র, পদ্মা, ইছামতী বা ফেনীর মতো বহু নদীই দুদেশকে আলাদা করেছে। আন্তর্জাতিক সীমারেখা এসব নদীর বুক চিরে গেলেও সীমান্তে দুই দেশকে সংযুক্ত করেছে - এমন কোনো সেতু কিন্তু এতদিন ছিল না।
সাবরুম আর রামগড়ের মাঝে ফেনী নদীর ওপর নির্মিত ‘মৈত্রী সেতু’ সেই অভাবই শুধু মেটাবে না, ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলকে বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বন্দরের একেবারে হাতের নাগালে এনে দেবে।
ত্রিপুরার উপ-মুখ্যমন্ত্রী তথা অর্থমন্ত্রী জিষ্ণু দেববর্মা বিবিসিকে বলছিলেন, এই একটা সেতুই তার রাজ্যকে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের গেটওয়ে বা প্রবেশপথে পরিণত করবে। তার কথায়, ‘এর মাধ্যমে ত্রিপুরা হয়ে উঠবে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের লজিস্টিকাল গেটওয়ে। সুতরাং এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার’।
‘দ্বিতীয়ত, বাংলাদেশের সঙ্গে আমাদের তো সাংস্কৃতিক সম্পর্ক আছেই, ভাষাগত বন্ধনও আছে। এ সেতুটা খুলে গেলে আমাদের মধ্যে ব্যবসায়িক বন্ধনও আরও ভালভাবে গড়ে উঠবে’।
মি. দেববর্মা আরও জানাচ্ছেন, এ রুটে ট্রানজিট বা ট্রানশিপমেন্ট দেয়ার জন্য বাংলাদেশ কোনও শুল্ক নেবে কি না, বা নিলেও কী হারে নেবে - সেটা এখনও স্থির হয়নি। তার কথায়, ‘এটা আমার আসলে জানা নেই। তবে মনে হয় না এটা এখনও ওয়ার্ক আউট করা হয়েছে বলে - এখনও সেটা করাই হয়নি’।
এই মৈত্রী সেতুর মোট দৈর্ঘ্য ১.৯ কিলোমিটার - আর ভারতের রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা এনএইচআইডিসিএল প্রায় ১৩৩ কোটি রুপি খরচ করে ব্রিজটি বানিয়েছে। সময় লেগেছে প্রায় সাড়ে পাঁচ বছর।
ভারত সরকার আরও জানিয়েছে, মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী মোদি সেতুর সাবরুমের দিকে একটি ইন্টিগ্রেটেড চেকপোস্টেরও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন। সাবরুমে এই চেকপোস্টের মাধ্যমে দুই দেশের মধ্যে মালামাল ও মানুষজনের চলাচলও অনেক সহজ হবে বলে বলা হচ্ছে।
দিল্লির থিঙ্কট্যাঙ্ক রিসার্চ অ্যান্ড ইনফর্মেশন সিস্টেমের অধ্যাপক ও আঞ্চলিক কানেক্টিভিটির বিশেষজ্ঞ প্রবীর দে-ও বলছেন, এই সেতুর মাধ্যমে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও বাংলাদেশ - উপকৃত হবে দুপক্ষই।
প্রবীর দে বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন, ‘বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইতোমধ্যেই ভারতকে চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছেন, সে দেশের পার্লামেন্টও সে প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে। তবে এ ট্রানজিট বা ট্রান্সশিপমেন্ট-টা শুধু ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের জন্যই’। ‘এখন যেটা হয়, উত্তর-পূর্বাঞ্চলের কার্গো এই পথে আসতেই পারে না। কিন্তু ব্রিজটা খুলে গেলে তাদের মালপত্র চট্টগ্রাম দিয়ে সারা ভারতে আনা-নেয়া করাটা অনেক অনেক সহজ হবে’।
ফেনী নদীর সেতুটি যাতায়াতের জন্য খুলে দেয়া হচ্ছে, তখন ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতি কিন্তু বলছে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিই সেটির উদ্বোধন করবেন। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব থাকবে কি না সে ব্যাপারে ওই বিবৃতিতে কিছু বলা হয়নি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।